ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। সাধারণের মতো ক্রীড়াঙ্গনের তারকা খেলোয়াড়রাও ঈদে আনন্দ-উৎসব করেন, কোরবানির পশু কেনেন, জবেহ থেকে মাংস বিতরণ করেন। ত্যাগের সর্বোচ্চ মহিমায় দিনটি পালন করেন তারা। ক্রীড়াঙ্গনের এমন কয়েকজনের ঈদ-উৎসব নিয়ে লিখেছেন প্রতিবেদক মামুন হোসেন। দিদারুল হক দিদার (ফুটবলার) বছরে দুই ঈদ। রোজার ঈদ অর্থাৎ ঈদুল ফিতর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লাতে এবং ঈদুল আজহা সাধারণত ঢাকায় পালন করি। বাবা-মা বেঁচে থাকাকালীন গ্রামের বাড়িতেই পালন করতাম। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোরবানির ঈদটা ব্যস্ততায় কেটে যায়। ঈদুল ফিতরে যেভাবে আনন্দ করি, কোরবানির ঈদে ঠিক সেভাবে করা হয় না। গ্রামে ভাই, বন্ধু, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দই অন্যরকম। কোরবানির জন্য গরু কিনেছি। বাবা যেভাবে সব কিছু তদারকি করতেন, আমিও পশু জবেহ থেকে মাংস বিতরণ পর্যন্ত একইভাবে তদারকির চেষ্টা করি। বাবা অবশ্য মাংস কাটতেন না। আমি লোক নিয়োগ তো করিই, সেই সঙ্গে নিজেও মাংস কোপানোর কাজ করি। আমার ভালো লাগে। ঈদের আনন্দ এখন সন্তানদের মধ্যে খোঁজার চেষ্টা করি। মোহাম্মদ ইব্রাহিম (ফুটবলার) ঈদুল ফিতর দেশের বাইরে করেছি। বিশ^কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ছিল। লাওসে ছোট্ট পরিসরে সেবার সতীর্থদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেছি। তবে ঈদুল আজহা বেশ উৎসব-আনন্দের সঙ্গে পালন করব। প্রতিবছরের মতো এবারও জন্মস্থান কক্সবাজারে বাবা, মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঈদ করব। কোরবানির পশু কেনা হয়েছে। নিজেই কিনেছি। ঈদুল আজহা হচ্ছে ত্যাগের ঈদ। প্রতিবছর নিয়ম মেনে যেভাবে কোরবানির গোশত বিতরণ করি, এবারও সেভাবে করব। আত্মীয়দের জন্য এক ভাগ, গরিব-দুঃখীদের এক ভাগ এবং নিজেদের জন্য এক ভাগ। রাসেল মাহমুদ জিমি (হকি খেলোয়াড়) দুই ঈদে দুই রকম আনন্দ। কোরবানির ঈদে গরু কেনা, কাটা, মাংস বিরতণ এসবে আনন্দ। রোজার ঈদে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করা, সবাইকে উপহার দেওয়ার মধ্যে আনন্দ। ছোটবেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরবানির পশু দেখার মধ্যে ছিল অন্যরকম আনন্দ। নিজেদের গরু কেনার বাইরে ছোটবেলায় এলাকার যে বাড়ির লোকেরাই হাটে গরু কিনতে যেত, আমিও তাদের সঙ্গে যেতাম। হাটে ঘোরা, গরু দেখা, কেনা তখন সেটিই ছিল আমার আনন্দ। এখন নিজেদের গরু নিয়েই ব্যস্ত থাকি। বাবা, দাদা যে নিয়মে কোরবানি করতেন, সেই নিয়মে পালন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করি। ফরহাদ আহমেদ শিতুল (হকি খেলোয়াড়) এশিয়ান গেমসে ইন্দোনেশিয়াতে থাকায় গত বছর কোরবানির ঈদ পরিবারের সঙ্গে করতে পারিনি। এবার রাজশাহীতে বন্ধু, পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে পালন করব। কোরবানির পশু সাধারণত আমার বাবাই কেনেন। এবারও কিনেছেন। প্রথমবারের মতো আমি কোরবানির পশু (গরু) কিনেছি। বাবা তার বন্ধুদের সঙ্গে কোরবানি দেবেন। আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে ভাগে কোরবানি দেব। এ এক অন্যরকম আনন্দ। সবাই মিলে পশুর হাটে গিয়ে গরু কিনেছি। সবাই মিলেকোরবানির আগ পর্যন্ত পশুর পরিচর্চা করব। বেশ ভালোই লাগছে। গতবার ঈদ করতে পারিনি খারাপ লেগেছে। এবার অনেক বেশি আনন্দ লাগছে। গরুর মাংস বিতরণ করতে আমার ভালো লাগে। বিশেষ করে গরিব-দুঃখী ও দরিদ্র স্বজনদের মধ্যে। মাহফিজুর রহমান সাগর (সাঁতারু) দোটানার মধ্যে পড়েছি; ঈদ ঢাকায় করব নাকি পাবনায়। এসএ গেমসের ক্যাম্প চলছে, একই সঙ্গে সামনে আন্তঃবাহিনীর খেলা আছে (নৌবাহিনীর খেলোয়াড়)। পাবনায় বাবা, মা আছেন, ঢাকায় ভাই, ভাবি। দুই জায়গাতেই কোরবানি হবে। এবারের ঈদে আসলে আনন্দ করার সেভাবে সময় পাব না। পাবনায় গেলেও তাড়াতাড়ি ঢাকায় ফিরতে হবে। ছোটবেলায় ঈদ আনন্দ ছিল অন্যরকম। এখন সেভাবে আনন্দ করা হয়ে ওঠে না। কোরবানির পশু কেনায় নিজের সামান্য অবদান রাখতে পারি বলে ভালোলাগাটুকু কাজ করে। ঈদের দিন সাধারণত গরু কাটাকাটিতেই চলে যায়। এর পর মাংস বিরতণের বিষয়টিও রয়েছেই। রাতে কিংবা পর দিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিই- এভাবেই মূলত ঈদ উদযাপন করি। সালমান খান (ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়) আমাদের যৌথ পরিবার। প্রতিবছরের মতো এবারও সিলেটে ঈদ পালন করব। আমাদের বাসায় বেশ কয়েকটা গরু কেনা হয়। এগুলো আবার একসঙ্গে নয় সিরিয়ালি জবেহ করা হয়। এর পর আমরা ছোটরা গরু কাটা শেষ হলে মাংস বিতরণ করি। ঈদের আনন্দ আসলে অন্য যে কোনো আনন্দের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। ছোটবেলায় যেমন আনন্দে করে ঈদ উদযাপন করতাম, বড় হয়েও আনন্দে ভাটা পড়েনি। এবাব অবশ্য বাড়িতে বেশি দিন থাকা হবে না। কারণ এসএ গেমসের ক্যাম্প চলছে। তাই ঈদ শেষ করেই ঢাকার গাড়ি ধরতে হবে। আর/০৮:১৪/১১ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2YUXWjo
August 11, 2019 at 06:18AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন