টরন্টো, ২৩ সেপ্টেম্বর- টরন্টোতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের লক্ষ্যে গত রোববার সন্ধ্যায় কানাডিয়ান কনভেনশন অডিটোরিয়ামে এক তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অর্গানাইজেশন ফর টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল মাদার লেংগুয়েজ মনুমেন্ট (আইএমএলডি) ইনক্ আয়োজিত এ তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টরন্টো নগরীর মেয়র জন টোরি, বাংলাদেশি বংশদ্ভুত এমপিপি ডলি বেগম, এমপিপি রিমা বার্নস-ম্যাকগাউন, কাউন্সিলর ব্রাড ব্রাডফোর্ড, সাবেক কাউন্সিলর জ্যানেট ডেভিস, টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাইম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের কর্তা ব্যক্তিগণ, শিক্ষক, কৃষিবিদ, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, পেশাজিবি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, জেলা এসোসিয়েশন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রেপ্লিকা অনুযায়ী টরন্টোর বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং ড্যানফোর্থের সন্নিকটে ডেন্টোনিয়া পার্কে স্থাপিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ। সিটি অব টরন্টো কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা নীতিগত ভাবে তাদের সম্মতি প্রকাশ করেছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী স্মৃতি সৌধের নির্মাণ ব্যয় হবে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কানাডিয়ান ডলার। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল উদ্যোক্তাদের পরিচিতি এবং শুভেচ্ছা বক্তৃতা। দ্বিতীয় পর্বে ছিল নৈশভোজ এবং তহবিল সংগ্রহ এবং সবশেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেনটরন্টো সিটি মেয়র জন টরি, কনসাল জেনারেল অব বাংলাদেশ - নাঈম উদ্দিন আহমেদ, এমপিপি রীমা বার্ন মেকাউন এমপিপি ডলি বেগম, সিটি কাউন্সিলর ব্রেড ফোর্ট, সাবেক সিটি কাউন্সিলর জেনিট ডেভিস ও ভাষা সৈনিক শামসুল হক। অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আফজাল হোসেন ও জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী, মডেল অপি করিম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সংগঠনের চেয়ারপার্সন ব্যরিষ্টার চয়নিকা দত্ত, কো-চেয়ার সৈয়দ শামসুল আলম, ম্যাক আজাদ, রিজুয়ান রহমান, রুমানা চোধুরী, ফান্ড রেইজিং কনভেনর নাহিদ আক্তার। ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট পেশ করেন ট্রেজারার - মির্জা সহিদুর রহমান।আরও বক্তব্য রাখেন - রিয়েলটর মনির ইসলাম, ডেভোলাপার ফরিদা হক, বাংলামেইল সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিন্টু, রেজাউল করিম তালুকদার, দারা আবু জোবায়ের, গাজী বেলায়েত হোসেন ও দেশে বিদেশে সম্পাদক নজরুল মিন্টো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন টরন্টোর প্রসিদ্ধ ব্যান্ড সুর এর তনুকা ও ময়ূখ। নৃত্য পরিবেশন করে অরুনা হায়দারেরসুকন্যা নৃত্যাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা। সাউন্ড ও মিউজিক সিস্টেম পরিচালনা করেন রিংকু। অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন ফায়েজুল করিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অরুনা হায়দার ও সুমন সাঈয়েদ। মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে ঐ দিন এক লক্ষ ১৫ হাজার ৬ শত ১ ডলারের তহবিল সংগৃহীত হয়েছে। মহান এ উদ্যোগে যারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা হলেন- মনির ইসলাম ৫ হাজার ডলার, জামাল হোসেন ৫ হাজার ডলার, বেলায়েত হোসেন ৫ হাজার ডলার, ফরিদা হক ২ হাজার ডলার, শামসুল-রিয়াজ ১০ হাজার ডলার, নাহিদ আখতার ৫ হাজার ডলার, ফয়সল ২ হাজার ডলার, আবুল আজাদ ৩ হাজার ডলার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ১ হাজার ডলার, রঞ্জু ২ হাজার ডলার, এএসএম তোফাজ্জল হক ৫ হাজার ডলার, সুমন জাফর ১ হাজার ডলার, মহসীন ভূঁইয়া ৩ হাজার ডলার, আরিফ হোসেন ১ হাজার ডলার, শহীদুল ইসলাম মিন্টু ১ হাজার ডলার, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী কানাডার পক্ষ থেকে সুমন সাইয়িদ ৫ শত ডলার, ড. মোজাম্মেল খান ১ হাজার ডলার, উম্মে হাবিবা ১ হাজার ডলার, তপন সাইয়িদ ৩ হাজার ডলার, নাসির কাশেম ৫ হাজার ডলার, নন্দন টিভি ৫ শত ডলার, ওমর আল জাহিদ ১ হাজার ডলার, মহিদুল ইসলাম ৫ শত ডলার, খুলনা সমিতি ১ হাজার ডলার, মৌলভীবাজার সমিতি ৫ শত ডলার, আখলাক হোসেন ১ হাজার ডলার, তানিয়া কাজি ২ হাজার ডলার, রাসেল রহমান ৩ হাজার ডলার, সৈয়দ শামসুল আলম ৫ হাজার ডলার, বেষ্ট ট্র্যাভেলস ১ হাজার ডলার, রাসেল সিদ্দিকী ১ হাজার ডলার, ওয়ালী ইসলাম ১ হাজার ডলার, শেখ রাসেদ ২ হাজার ডলার, বাচনিক ৫ শত ডলার, অলক চৌধুরি ২ হাজার ডলার, সাহারা খাতুন ৫ শত ডলার, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব টরন্টো ১ হাজার ডলার, রবিন ইসলাম ২ হাজার ডলার, সোসাইটি অব এনার্জি প্রফেশনালস ৩ হাজার ডলার, ড. সুরাইয়া ১ হাজার ডলার, কান-বাংলা ইয়ুথ অর্গেনাইজেশন ৫ শত ডলার, নোয়াখালী এসোসিয়েশনের পক্ষে আলমগীর ৫ শত ডলার, এনডিপি প্রার্থী মে নাম ৫ শত ডলার, সাবেক কাউন্সিলর জেনেট ডেভিস ৫ শত ডলার, ব্যারিষ্টার ওবায়দুল হক ২ হাজার ডলার, রিমা বার্নস-ম্যাকগাউন এমপিপি ৬ শত ডলার, আবুল কালাম আজাদ ১ হাজার ডলার, কাওসার হামিদ ১ হাজার ডলার, কানন বড়ুয়া ১ হাজার ডলার, দারা আবু জোবায়ের ১০ হাজার ডলার, নাজমা বখতিয়ার ৫ শত ডলার, পারভেজ মোহিত ৫ হাজার ডলার, কাউন্সিলর ব্রাডফোর্ড ৫০১ ডলার, ভিক্টোর গোমেজ ৫ শত ডলার এবং আখতার হোসেন ২ শত ডলার। এদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিশ্রুত অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করেছেন। এর আগে পরিচালক এবং অন্যান্য বাবদ প্রায় ৫০ হাজার ডলার তহবিলে আছে বলে জানা গেছে। প্রতিশ্রুত অর্থ পাওয়া গেলে দ্রুত শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে শহীদ মিনার নির্মাণ নিয়ে একদিকে সিটির সাথে দেনদরবার, অন্যদিকে নিজেদের মধ্যে বিস্তর কলহের কারণে এর নির্মাণ কাজ পিছিয়ে যায়। অবশেষে বিবাদমান দলগুলো সম্মিলিতভাবে শহীদ মিনার স্থাপনে এগিয়ে আসায় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ সন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিকে নেতৃবৃন্দের অনেকে শীঘ্রই বর্তমান কমিটি পুনর্গঠন করার দাবী জানিয়ে ৫২ সদস্যের কমিটি করার পরামর্শ দিয়েছেন যাতে কমিউনিটির সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক, পেশাজীবী সংগঠনগুলোর শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিবর্গকে এ মহান উদ্যোগের অংশীদার করা যায়। এদিকে কেবল অর্থ দিয়ে ডাইরেক্টর হওয়া অনেকেই পছন্দ করছেন না। আবার কেউ কেউ মনে করেন, একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ডাইরেক্টর থাকাও সমীচীন নয়। তাদের মতে প্রত্যেক ডাইরেক্টরকে তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেয়া উচিত যেখানে অন্যান্য যোগ্যতার সাথে কমিউনিটিতে তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ থাকবে। অনেকে মনে করেন, যারা এই মহৎ কাজের সাথে জড়িত থাকবেন কমিউনিটিতে তাদের যেন গ্রহণযোগ্যতা থাকে। কয়েকজন সংগঠক তাদের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, কমিটিতে যেন কোন কনভিকটেড কিংবা দেউলিয়া ঘোষিত (ব্যাঙ্কক্রাপটেড) লোক না থাকেন। মহৎ কাজটি সঠিকভাবে সুসম্পন্ন করার জন্য তারা ক্লিন ইমেজের লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেয়ার দাবী জানান।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2mKEpRl
September 24, 2019 at 05:53AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top