ঢাকা, ২০ অক্টোবর - বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের চলচ্চিত্রের জন্য ৪১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া হয়েছে গতবছর। এবার একসঙ্গে দুই বছরের পুরস্কারের ঘোষণা আসছে। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের জন্য পুরস্কারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই ঘোষিত হবে বিজয়ী সৌভাগ্যবানদের নাম। এরইমধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। কার হাতে উঠবে বিগত দুই বছরের সেরাদের স্বীকৃতি। চলচ্চিত্রপাড়ায় যে কোনো আড্ডা বা চায়ের বৈঠকে ঘুরেফিরে আসছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে প্রসঙ্গ। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির হিসেবটা মিলিয়ে নেয়ার অপেক্ষায় সবাই। এদিকে অনুসন্ধান করে জানা গেল ৪২ ও ৪৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে থাকবে বেশ কিছু চমক। প্রতিবারের ন্যায় ২০১৭ ও ২০১৮ সালেও চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য কীর্তিমান ব্যক্তিদের আজীবন সম্মাননা প্রদান করবে রাষ্ট্র। এ তালিকায় বেশ জোরেসোরেই উচ্চারিত হচ্ছে কিংবদন্তি অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এটিএম শামসুজ্জামানের নাম। আরও আছে প্রবীর মিত্র, আলমগীর, সোহেল রানা, সুচন্দা, খোরশেদ আলম প্রমূখ গুণীজনদের নাম। ২০১৭ সালের আলোচিত ছবিগুলো হচ্ছে ডুব, গহীন বালুচর, সত্তা, হালদা ও ঢাকা অ্যাটাক, ভুবন মাঝি। এখান থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় এগিয়ে গহীন বালুচর, সত্তা, হালদা ও ঢাকা অ্যাটাক। এখান থেকে পুরস্কারের সংখ্যায় এগিয়ে থাকতে পারে হাসিবুর রেজা কল্লোলের সত্তা। সেরা ছবিসহ সত্তার ভাগ্যে মিলতে পারে সেরা নায়ক, গায়ক, গায়িকা, সংগীত পরিচালক, গীতিকারের পুরস্কারও। সেরা নায়কসহ আরও কিছু বিভাগে স্বীকৃতি পেতে পারে ঢাকা অ্যাটাক। ২০১৭ সালের মোস্ট আলোচিত চলচ্চিত্র সত্তা ও ঢাকা অ্যাটাক। তাই বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে এই দুটি ছবিকে পুরস্কার ভাগাভাগি করতেও হতে পারে। এক্ষেত্রে চিত্রনায়ক শাকিব খান ও আরিফিন শুভকে একমঞ্চে আসতে পারেন যৌথভাবে। দুটি ছবির মধ্যে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ও অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতেও শক্ত লড়াই জমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, মাহিয়া মাহি ও রিনা খানের নাম রয়েছে আলোচনায়। ঢাকা অ্যাটাক দিয়ে সিনেমায় অভিষিক্ত হওয়া তাসকিন রহমানও চমক দেখাতে পারেন ক্যারিয়ারের প্রথম ছবিতে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি জিতে নিয়ে। ২০১৭ সালের সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে পারেন গহীন বালুচর ছবির নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ। তালিকায় আরও আছেন ঢাকা অ্যাটাক ছবির নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন, হালদা ছবির নির্মাতা তৌকীর আহমেদের হাতে। এক্ষেত্রে তৌকীর ছাড়া অন্য দুজন জয়ী হলে সেটা হবে তাদের প্রথম পুরস্কার। এর আগে ২০০৪ সালে জয়যাত্রা ছবির জন্য সেরা পরিচালকের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি। তবে মৌলিক গল্পে হালদা নদীর গুরুত্ব তুলে হালদা ছবিটি বেশ কিছু পুরস্কারে এগিয়ে থাকতে পারে। ২০১৬ সালের ছবি অস্তিত্বর পর আবারও এই হালদা দিয়ে ভার্সেটাইল অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার হাতে উঠতে পারে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। অন্যদিকে ২০১৮ সালের জন্য দেবী, পোড়ামন ২, জান্নাত, দহন, পুত্র, কমলা রকেট, স্বপ্নজালসহ আরও কিছু ছবি প্রতিযোগিতায় রয়েছে। তবে সংক্ষিপ্ত তালিকায় এগিয়ে আছে হুমায়ূন আহমেদের গল্পে নির্মিত দেবী চলচ্চিত্রটি। ধারণা করা হচ্ছে বেশ কিছু পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার অপেক্ষায় ২০১৮ সালের সবচেয়ে আলোচিত এই সিনেমা। তার সঙ্গে মজবুত লড়াই করবে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত জান্নাত, সাইফুল ইসলাম মাননু পরিচালিত পুত্র ছবি দুটো। সেরা নায়ক, সেরা পরিচালক বিভাগে চমক দেখাতে পারে এই দুটো ছবি। তবে দেবী সিনেমা দিয়ে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবেন জয়া আহসান এই প্রত্যাশা সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবার। সিনেমাটি দেখার পর দর্শকও ব্যাপক প্রশংসা করেন জয়ার অভিনয়ের। সেইসঙ্গে এই ছবি দিয়ে প্রযোজক হিসেবে নাম লেখানো জয়া সেরা প্রযোজকের স্বীকৃতিটিও ঘরে তুলতে পারেন। গল্পে মিসির আলি প্রধান চরিত্র হলেও সিনেমা বানাতে গিয়ে অনম বিশ্বাস মিসির আলীকে জয়ার রানু চরিত্রের ছায়া করে ফেলেছেন। সেইদিক থেকে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ক্যাটাগরিতে দেবী ছবির মিসির আলী চরিত্রের চঞ্চল চৌধুরীর নাম অনেক এগিয়েই থাকবে। এছাড়াও এই ক্যাটাগরিতে দেবী ছবির অনিমেষ আইচের সঙ্গে বেশ জমজমাট একটা লড়াইয়ে থাকবেন জান্নাত ছবির জন্য আলীরাজ, পুত্র ছবির জন্য অভিনেতা আজিজুল হাকিম, পোড়ামন ২ ছবির জন্য ফজলুর রহমান বাবু, বাপ্পারাজ ও সাঈদ বাবু, স্বপ্নজাল ছবির জন্য ফজলুর রহমান বাবু। সেরা চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রাহক, গায়ক, গায়িকা, সংগীত পরিচালক, গীতিকার বিভাগে দেবী ও জান্নাত ছবির মধ্যে লড়াই হবে। সেখানে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবে পুত্র, পোড়ামন ২, দহন, স্বপ্নজাল, কমলা রকেট ছবিগুলোও। তবে সেরা চিত্রনাট্য, সেরা চিত্রগ্রাহকসহ কিছু ক্যাটাগরিতে পিপলু খানের পরিচালনায় হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল নাট্যধর্মী-প্রামাণ্যচিত্রটিও চমক দেখাতে পারে। জানা গেছে, চলতি মাসেই আসবে ৪২ ও ৪৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। সব অনুমান ও আলোচনার অবসান ঘটবে। এরপর নির্ধারিত তারিখে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এন এইচ, ২০ অক্টোবর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2W4HQ2U
October 20, 2019 at 10:27AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top