রিয়াদ, ২০ অক্টোবর- সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত এবং হজ পালনের উদ্দেশ্যে যাওয়া বাংলাদেশিদের সহায়তায় জেদ্দায় নিজস্ব আইকনিক চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জেদ্দা শহরে এবং শহরের বাইরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বসবাস ও কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এছাড়া পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য জেদ্দা যাওয়া বাংলাদেশিদের সহায়তা হবে এবং বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে ৬ হাজার ৩৫৪ বর্গমিটার আয়তনের তিনতলা চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ, ৬ হাজার ৬০ বর্গমিটার আফিসার্স আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৬ হাজার ৩০০ বর্গমিটার আয়তনের স্টাফ আবাসিক ভবন নির্মাণ ও ৫৯০ বর্গমিটার আনুষঙ্গিক কাজ। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ মিশন, জেদ্দয় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাফতরিক কাজ ও বসবাসের উন্নত পরিবেশ সৃষ্টিসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার মাধ্যমে সরকারের মালিকানাধীন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হবে। পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ৪ জুলাই প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। এখন ডিপিপিটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সৌদি আরবের জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ৭৬টি দূতাবাসের মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় সবদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখছে। শুরুর দিকে এ দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম ভাড়া করা ভবন থেকে পরিচালিত হতো। ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ৩টি পর্যায়ে ৩২টি মিশনের জন্য নিজস্ব জমি থাকা সাপেক্ষে ভবন নির্মাণ অথবা জমিসহ তৈরি ভবন কেনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ পর্যন্ত ৩২টি মিশনের মধ্যে ১৫টি মিশনের ব্যবহারের জন্য নিজস্ব ভবন নির্মাণ বা কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় এই মাস্টার প্ল্যান পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করছে। এ পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে নিজস্ব চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও হাইকমিশনার, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণ এবং দেশের ভেতরে ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমানে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য রিয়াদ, আঙ্কারা, ইসলামাবাদ, বন্দর সেরি বেগওয়ান, বার্লিন এবং থিম্পুতে প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে বিদেশে বাংলাদেশের কনস্যুলেটগুলোর মধ্যে জেদ্দা অন্যতম বৃহৎ একটি কনস্যুলেট। বর্তমানে সেখানে ১১ জন কর্মকর্তা এবং ৪০ জনের বেশি কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। তবে কনস্যুলেটটির কার্যক্রম একটি ভাড়া করা ভবন থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া ভবনটির আয়তনও কম। কম আয়তনের জায়গার মধ্যে একটি দ্বিতীয় তলা ভবনে কূটনৈতিক উইং, সোনালী ব্যাংক এবং এনএসআই উইং রয়েছে। এ ভবনেই শ্রম উইং এবং অস্থায়ীভাবে নির্মিত দ্বিতীয় তলা ভবনে পাসপোর্ট এবং ভিসা উইংয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমান ভবনে কনস্যুলেটের জন্য স্থান সংকুলান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে কোনো মাল্টিপারপাস হল, মানসম্মত কনফারেন্স রুম, লিফট নেই। ফলে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানে ক্রমাগত বাধার সম্মুখীন হচ্ছে কনস্যুলেট। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবছর কনস্যুলেট ভবন, অফিসার ও স্টাফ কোয়ার্টার এবং হলরুমের ভাড়া বাবদ প্রায় ২০ লাখ সৌদি রিয়াল (প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা) ব্যয় করতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, চ্যান্সারি এবং রাষ্ট্রদূত ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের আগস্টে সৌদি সরকারের কাছ থেকে প্রায় ১৫৪ কাঠা আয়তনের একটি প্লট কেনে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে জমির রেজিস্ট্রেশন শেষ হয়েছে। এন কে / ২০ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2MX1QjF
October 20, 2019 at 09:01AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন