চট্টগ্রাম, ১৮ ডিসেম্বর- টুর্নামেন্টের গত আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তাসকিন আহমেদ এবং দেশের অন্যতম সেরা পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। বিপিএলের চলতি আসরে রংপুর রেঞ্জার্সের পেস বোলিং আক্রমণটা এ দুজনের কারণে দেশীয়দের বিবেচনায় দুর্দান্ত। এ দুই পেসারের সঙ্গে আবার আছেন পাকিস্তানি বাঁ-হাতি গতিতারকা জুনায়েদ আহমেদও। তার বিপিএল পরিসংখ্যানও দারুণ। তবও বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে শুরুটা একদমই ভালো করতে পারেনি রংপুর। ঢাকার প্রথম পর্বে দুই ম্যাচের দুইটিতেই হেরে ছিলো পয়েন্ট টেবিলের একদম তলানীতে। এর অন্যতম প্রধান কারণ, দলের তিন পেসারের অপ্রত্যাশিত নিষ্প্রভতা। পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ আহমেদ ১ ম্যাচ খেলে ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৪৭ রান। অন্যদিকে দুই দেশি পেসার তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের পারফরম্যান্সও বিবর্ণ। প্রথম ম্যাচের প্রথম তিন ওভার দারুণ বল করে ২টি উইকেট নিলেও, নিজের শেষ ওভারে মোস্তাফিজ হজম করেন টানা ৪টি ছক্কা। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে খরচ করেন ৩৭ রান। পরের ম্যাচে ৩.২ ওভারে খরচ করেন ২১ রান, থাকেন উইকেটশূন্য। ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদের অবস্থা আরও বিবর্ণ। দুই ম্যাচ মিলেও ৪ ওভার বোলিং করতে দেয়া হয়নি তাসকিনকে। প্রথম ম্যাচে ২ ওভারে ২৩ রান খরচার পর, দ্বিতীয় ম্যাচে একমাত্র ওভারে দেন ১৪ রান। উইকেটের ঘরটা খালিই পড়ে আছে তার। বোলিংটাও হচ্ছে না খুব একটা আশা জাগানিয়া। রংপুরের তলানিতের থাকার পেছনে দায় রয়েছে এ দুই দেশি পেসারের হতাশাজনক পারফরম্যান্সেরও। বুধবার বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের দ্বিতীয় দিনের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে রংপুর রেঞ্জার্স। বিপক্ষে রয়েছে প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। ওই ম্যাচের আগে নিজ দলের দুই দেশি পেসারের ব্যাপারে আশার কথাই শুনিয়েছেন রংপুরের কোচ মার্ক ওডোনেল। তার মতে, শীঘ্রই রংপুরকে ম্যাচ জেতাবেন তাসকিন-মোস্তাফিজ। আজ (মঙ্গলবার) এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে রংপুর রেঞ্জার্সের অনুশীলনের ফাঁকে ওডোনেল বলেন, ওরা (তাসকিন ও মোস্তাফিজ) ভালো বোলার। তবে নেটে বোলিং করা, অনুশীলন করার মধ্যে পার্থক্য আছে। একজন বোলার হিসেবে আপনি ছন্দটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় থাকবেন। কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খুব কঠিন, যেখানে আপনাকে ১ ওভার করতে হবে পাওয়ার প্লেতে অথবা দুই ওভার মাঝামাঝি সময়ে ও দুই ওভার করতে হয় ডেথে। তাই বিষয়টা সহজ নয় যে আপনি চাইলেই সব নিজের পক্ষে থাকবে। এ সময় মোস্তাফিজ ও তাসকিনের অবস্থা ঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নাইম শেখের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, ওরা দুজনই অনুশীলনে নিজেদের স্কিল নিয়ে অনেক পরিশ্রম করছে। এটা ধারাবাহিক থাকলে মাঠে পারফরম করাটা শুধু সময়ের ব্যাপার। তাই ধৈর্য্য ধরতে হবে। রাতারাতি কিছু হয়ে যায় না। এমনকি ভালো খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও। আপনি নাইমের (বাঁ-হাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখ) কথাই ধরুন, প্রথম ম্যাচে সে ভালো করতে পারেনি; কিন্তু পরের ম্যাচেই দুর্দান্ত ব্যাট করেছে। তার ইনিংসটাই আমাদের ম্যাচের গতিপথ সাজিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা শেষটা ভালো করতে পারিনি। তবে নাইম বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো তরুণ প্রতিভা। তাসকিন যেমন-তেমন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরেই হতাশাজনক বোলিং করছেন মোস্তাফিজ। প্রায় প্রতি ম্যাচেই উইকেট পেলেও, তার বোলিংয়ে নেই আগের ধার। এখন যে কোনো ব্যাটসম্যান তাকে খেলেন খুব সহজে। যার জলজ্যান্ত প্রমাণ কুমিল্লার বিপক্ষে রংপুরের প্রথম ম্যাচ। সে ম্যাচের প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজ। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে দাসুন শানাকার বিপক্ষে হজম করেন টানা ৪টি ছক্কা। সবগুলো শটই নিজের মতো করে খুব সহজেই খেলেন শানাকা। পরের ম্যাচেও খুব একটা কার্যকরী বোলিং করতে পারেননি তিনি। তবু এখনই মোস্তাফিজের ব্যাপারে নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আনতে রাজি নন রংপুর কোচ। তার ভাষ্যে, না না! (মোস্তাফিজের পারফরম্যান্সের) খুব খারাপ নয়। ১২ ম্যাচের টুর্নামেন্টে মাত্র ২টা গেলো। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খারাপ সময়ে ভালো খেলোয়াড়রাও স্রেফ উড়ে যায়। বিশেষ করে বোলারদের জন্য পাওয়ার প্লে এবং ডেথ ওভারে কাজটা আরও অনেক বেশি কঠিন। বোলারদের অবস্থান থেকে দেখলে ভালো করা এবং উড়ে যাওয়ার মাঝের রেখাটা খুবই সূক্ষ্ম। মোস্তাফিজ দারুণ। তার স্কিল, অভিজ্ঞতা এবং সবকিছুই ভালো। পরের ম্যাচগুলোতে তার কাছ থেকেই ম্যাচজয়ী বোলিংয়ের আশায় থাকবো। মোস্তাফিজের টানা অফ-ফর্মের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, যে কোনো বোলারের জন্যই উইকেট না পাওয়াটা চিন্তার বিষয়। তবে আপনি যখন ভারতের মতো টপঅর্ডারের বিপক্ষে বোলিং করবেন, তখন তাদের নিয়মিত আউট করতে পারবেন না। বিষয়টা হলো উন্নতি করার যে আমার পরের বলটা কোন জায়গায় করা উচিৎ। আমি মনে করি, আমরা কী করতে পারি তা ভাবার চেয়ে পরবর্তী বলটা নিয়েই ভাবা উচিৎ যে আমি এখন কী করবো! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এ বিষয়টি নিয়েই কুমার সাঙ্গাকারা দারুণ কথা বলেছিল, এই ফরম্যাটে সবাই একটু বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলে। অথচ এখানে বিষয়টা হলো ধীরে ধীরে এগুনো এবং পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে সময়ের চাহিদা মিটিয়ে কাজটা করা। তবে ফিজের ব্যাপারে কোনো চিন্তা নেই। সে দারুণ বোলার এবং আপনি দলে এমনটাই চাইবেন। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/১৮ ডিসেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Py6mrB
December 18, 2019 at 04:23AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন