ঢাকা, ০৭ জানুয়ারি- ম্যাচে সবার চোখ ছিলো ক্যারিবীয় দানব, ইউনিভার্স বসখ্যাত ক্রিস গেইলের ওপর। চলতি বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ঝড় তোলার আভাসটাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা আর বড় করতে পারেননি। তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে গেইলের সতীর্থ ইমরুল কায়েস ঠিকই ঝড় তুলেছেন ব্যাট হাতে। যার সুবাদে দারুণ এক জয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে গিয়েছে চট্টগ্রাম। সমান ১০ ম্যাচ খেলে ৭টি করে জয়ে সমান ১৪ পয়েন্ট ছিলো রাজশাহী রয়্যালস ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। তবু নেট রানরেটে এগিয়ে শীর্ষে ছিলো রাজশাহীই। আজ (মঙ্গলবার) তাদের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে ৭ উইকেটের দারুণ এক জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষে উঠলো বন্দর নগরীর দলটি। লিটন দাসের ফিফটি ও ফরহাদ রেজার ক্যামিও ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান করেছিল রাজশাহী। জবাবে গেইল ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরে গেলেও লেন্ডল সিমনসের দায়িত্বশীল ব্যাটিং ও ইমরুল কায়েসের ঝড়ো ফিফটিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে চট্টগ্রাম। রান তাড়া করতে নেমে আন্দ্রে রাসেলের প্রথম ওভারে ১টি করে চার ও ছয় হাঁকান সিমনস। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে সাবধানী ব্যাটিং করে ৩ বলে ১ রান নেন গেইল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন অফস্পিনার আফিফ হোসেন ধ্রুব। আর এতেই দানবীয় মুড চালু হয়ে যায় গেইলের। সে ওভারের প্রথম, তৃতীয় ও শেষ বলে ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয় দানব। এছাড়া পঞ্চম বলে বাউন্ডারিসহ মোট ২২ রান নিয়ে নেন গেইল। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা তখন তার কাছ থেকে বিষ্ফোরক ইনিংস দেখতে উন্মুখ। কিন্তু সেটি হতে দেননি কামরুল ইসলাম রাব্বি। মোহাম্মদ ইরফানের করা চতুর্থ ওভার পুরোটা মেইডেন খেলেন সিমনস। পরের ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে প্রথম বলেই দারুণ এক ডেলিভারিতে ক্রিস গেইলকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। গেইলের ইনিংস থামে ১০ বলে ২৩ রান করে। এরপর উইকেটে আসেন ইমরুল, সিমনসকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন চট্টগ্রামকে। যেই ইরফান নিজের প্রথম দুই ওভারে খরচ করেন মাত্র ১ রান, তাকে মুখোমুখি প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান ইমরুল। যা হয়ে থাকে তার পুরো ইনিংসেরই বিজ্ঞাপন। সিমনসের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন ইমরুল। ১৩তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন সিমনস। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৩ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ের মারে ৫১ রান করেন এ ক্যারিবীয় ওপেনার। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও। আউট হন ৬ বলে ১০ রান করে। তবে অপরপ্রান্তে অবিচল থাকেন ইমরুল। মাত্র ৩১ বলে তুলে নেন চলতি আসরে নিজের চতুর্থ ফিফটি। ফের উঠে যান আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। শেষতক আর আউটই হননি তিনি। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিশ্চিত করেন ৭ উইকেটের বিশাল জয়। শেষপর্যন্ত ৩ চার ও ৫ ছয়ে মারে ৪১ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন ইমরুল। গেইলের ম্যাচের পুরো আলো নিজের দিকেই করে নিয়েছেন তিনি। চ্যাডউইক ওয়ালটন ১১ বলে করেন ১৪ রান। দল হারলেও রাজশাহীর ডানহাতি পেসার কামরুল রাব্বি দুর্দান্ত বোলিং করেন। ৩.৩ ওভারে ২০ রান খরচায় নেন গেইলের মূল্যবান উইকেটটি। এর আগে চট্টগ্রাম অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আমন্ত্রণে টস হেরে ব্যাট করতে নেমেছিলো রাজশাহী। শুরু থেকেই তেড়েফুঁড়ে খেলার একটা প্রয়াস দেখা যায় রাজশাহী ওপেনার আফিফ হোসেনের মাঝে। যা স্থায়ী হয় মাত্র ১২ বল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে তাকে সরাসরি বোল্ড করে দেন রুবেল হোসেন। আউট হওয়ার দুই চারে ৫ বলে ৯ রান করেন আফিফ। তিন নম্বরে নামার সুযোগ পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারেননি ইরফান শুক্কুর। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ১৭ বল খেলে তিনি আউট হন ১৮ রানে। উইকেট ও কন্ডিশনের অবস্থা বুঝে তাই রয়েসয়ে খেলতে থাকেন লিটন দাস। তাকে তৃতীয় উইকেটে সঙ্গ দেন শোয়েব মালিক। তবে ইনিংস গড়ার দায়িত্বটা পালন করছিলেন লিটনই। আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিতে খেলেন ৪০ বল। তবে ব্যক্তিগত সংগ্রহটা বড় করতে পারেননি তিনি। জিয়াউর রহমানের বোলিংয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৪৫ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫৬ রান করেন তিনি। লিটন আউট হওয়ার পরেও ৭.৫ ওভার বাকি ছিলো রাজশাহী ইনিংসে, দলের সংগ্রহ তখন ৩ উইকেটে ৯৪ রান। তখন উইকেটে আসেন অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ১০ বলে ২০ রানের ছোট্ট সম্ভাবনাময় ঝড় তুলে তিনি ফিরে যান সাজঘরে। তার মূল্যবান উইকেটটি নেন রুবেল হোসেন। রাসেল-লিটন দুজনই ফিরে যাওয়ায় দায়িত্ব বর্তায় শোয়েব মালিক ও রবি বোপারার কাঁধে। কিন্তু বোপারা ৪ বলে ৪ ও মালিক করতে পারেন ২৪ বলে ২৮ রান। মনে হচ্ছিলো, ১৫০ রানও করতে পারবে না রাজশাহী। তখনই আশার প্রদীপ জ্বালান ফরহাদ রেজা। আট নম্বরে নেমে ১ চার ও ২ ছয়ের মারে মাত্র ৮ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে দলকে এনে দেন ১৬৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ। বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন রুবেল। জিয়াউর রহমান ৩ উইকেট নিতে ৩ ওভারে খরচ করেন ১৮ রান। এ দুজনব্যতীত উইকেটের তালিকায় নাম লেখাতে পারেননি আর কেউ। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/০৭ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39PItna
January 07, 2020 at 05:37PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন