কলকাতা, ২২ জানুয়ারি- দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক বৃদ্ধকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন যুবক। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এমন একটি ভিডিও। আর সেই যুবকের ভূয়সী প্রশংসায় মেতেছে নেটবিশ্ব। মানবতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ মন্তব্য করে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন লাখো নেটজনতা। এর কারণ চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছিলেন ওই যুবক। কিন্তু পথে রক্তাক্ত এক বৃদ্ধকে দেখে ইন্টারভিউয়ের কথা ভুলে যান তিনি। ভবিষ্যতকে পায়ে মাড়িয়ে আহত বৃদ্ধকে নিয়ে ছুটেন হাসপাতালে। জানা গেছে গত রোববার এমন মানবিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মেচেদা এলাকায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, মহানুভবতা দেখানো ওই যুবকের নাম শেখ ওয়ালিদ আলী। তিনি কলকাতার কাঁথি নামক অঞ্চলের শ্রীরামপুরের বাসিন্দা। প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরির উদ্দেশে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তবে পেট চালানোর জন্য আপাতত হাওড়ার উলুবেড়িয়ার আল আমিন মিশন কলেজে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি কলকাতার অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস্ ইসলামিক অর্গানাইজেশনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত রোববার ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ সার্ভিস কমিশনে অধ্যাপক পদে যোগদানের ইন্টারভিউ ছিল তার। পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে সকাল সাড়ে ৯টায় ছিল সে ইন্টারভিউ। কিন্তু পথে ওই বৃদ্ধকে বাঁচাতে গিয়ে সে ইন্টারভিউ আর দেয়া হয়নি তার। এ বিষয়ে আনন্দবাজারকে ওয়ালিদ বলেন, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে মেচেদায় ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে এক বৃদ্ধ পথচারীকে মোটরসাইকেল এসে সজোড়ে ধাক্কা দেয়। রাস্তায় পড়ে মারাত্মক জখম হন বৃদ্ধ । অথচ কেউ এগিয়ে আসছিল না। তিনি বলেন, আমি ১০০-তে ফোন করেও পুলিশের সাড়া পাইনি। এরপর চাকরির মায়া ছেড়ে বৃদ্ধকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাই। বৃদ্ধের চিকিৎসা চলাকালীন তার পরিজনকে ফোন করে খবর দিয়ে ডেকে আনি। ততক্ষণে সাড়ে ৯টা বেজে চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার সময় পেরিয়ে গেছে। ১০টার পরে কেন্দ্রে পৌঁছে দেখি অনেকেই ইন্টারভিউ দিয়ে চলে গেছেন। শেষ পর্যন্ত ইন্টারভিউ দিতে পেরেছেন কিনা প্রশ্নে ওয়ালিদ জানান, দেরি হওয়ায় আমাকে কেন্দ্রেই ঢুকতে দেয়া হয়নি। মোবাইল ক্যামেরায় তোলা বৃদ্ধের ছবি দেখিয়ে ঘটনার কথা জানানোর পরেও ওই কলেজের অধ্যক্ষ আমাকে ইন্টারভিউ দেয়ার সুযোগ দেননি। তবে এতে আক্ষেপ নেই ওয়ালিদের। তিনি বলেন, চাকরির পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ অনেক আসবে। কিন্তু একজন মানুষের প্রাণ চলে গেলে আর আসবে না। তাই এ নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ বা হতাশা নেই। আমি মনে করি সেদিন মানুষ হওয়ার পরীক্ষা দিয়েছি এবং ভালো পাশ করেছি। আর/০৮:১৪/২২ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2tEr0xX
January 22, 2020 at 04:58AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন