কক্সবাজার, ১৫ ফেব্রুয়ারি - বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) সাধারণত হয়ে থাকে দুই লেগের ভিত্তিতে। অংশগ্রহণকারী চার দলের একে অপরের বিপক্ষে খেলে দুইটি করে ম্যাচ। পরে শীর্ষ দুই দল নিয়ে হয় শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচ। কিন্তু এবার বিসিএল খেলা হচ্ছে এক লেগে। চার দল একে অপরের বিপক্ষে খেলছে একটি করেই ম্যাচ। যে কারণে তৃতীয় রাউন্ডের দুই ম্যাচ পরিণত হয়েছে অঘোষিত সেমিফাইনালে। যাতে ভিন্ন দুই মাঠে লড়ছে দক্ষিণাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে খেলছে দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরেই ছিলো আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল হাসান সোহানদের দক্ষিণাঞ্চল। এ রাউন্ডে কোনোমতে ড্র নিশ্চিত করতে পারলেই তারা পেয়ে যাবে ফাইনালের টিকিট। তবে শুধু ড্রতেই কাজ হবে না, খেয়াল রাখতে হবে প্রতিপক্ষ মধ্যাঞ্চল যেনো কোনো বোনাস পয়েন্ট না পায়। আর এটি রুখে দিতেই আজ (শনিবার) তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে এক চালাকিই করেছে দক্ষিণাঞ্চল। যদিও দিনশেষে তাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে অতি চালাকের গলায় দড়ির মতোই। শুক্রবার ম্যাচের প্রথম দিন ২৩৫ রানে অলআউট হয়েছিল মধ্যাঞ্চল। জবাবে দিন শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ২৯ রান করেছিল আব্দুর রাজ্জাকের দল। আজ ম্যাচের দ্বিতীয় দিন মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহকে ছাড়িয়ে যাবে তারকাবহুল দক্ষিণাঞ্চল- এমনটাই ছিলো অনুমেয়। কিন্তু এখানেই চালাকি করে দক্ষিণাঞ্চল। বিসিএলের বাইলজ মোতাবেক, ১০০ ওভারের মধ্যে প্রতিপক্ষ দলের ৫ উইকেট তুলে নিতে পারলে ০.৫ বোনাস পয়েন্ট পাবে বোলিং দল। সে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। মাত্র ২৮.২ ওভারেই ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের। কিন্তু তাদেরকে পঞ্চম উইকেট নেয়ার সুযোগই দেননি দক্ষিণাঞ্চল অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক। কেননা মাত্র ১১৪ রানেই ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত জানান তিনি। তখনও মধ্যাঞ্চলের চেয়ে ১২১ রানে পিছিয়ে ছিলো দক্ষিণাঞ্চল। তবু তারা ৫ উইকেট না হারানোয় কোনো বোনাস পয়েন্ট পায়নি মধ্যাঞ্চল। ভূতুড়ে এই সিদ্ধান্ত আসার আগে চালিয়ে ব্যাটিং করে মাত্র ৪১ বলে ৪৮ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। দক্ষিণাঞ্চল যখন ইনিংস ঘোষণা করে তখনও দিনের খেলা বাকি ছিলো ৭১ ওভার। এরপর আবার পুরোপুরি দুই দিন তো হাতে ছিলোই। যার ফলে ১২১ রানের লিড থাকা মধ্যাঞ্চলের সামনে সুযোগ আসে দক্ষিণাঞ্চলকে বড় লক্ষ্যের নিচে চাপা দেয়ার। সে সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই লুফে নিয়েছেন জাতীয় দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। এ বাঁহাতি তরুণের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় দিন শেষে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৯ রান। তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩৩০ রান। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১২২ রানে অপরাজিত রয়েছেন শান্ত। প্রায় সোয়া চার ঘণ্টার ইনিংসে ১৮৯ বল খেলে ১৫টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। শান্ত সেঞ্চুরি করলেও ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন সাইফ হাসান। প্রথম ইনিংসে পাঁচ বলে ১ রান করার পর, দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আউট হয়েছেন আট বলে ১ রান করে। ম্যাচে চশমা পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই ইনিংসেই তিনি আউট হয়েছেন শূন্য রানে। মজার বিষয় হলো, দুই ইনিংসেই নাসুম আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া রকিবুল হাসান ৩৯, শুভাগত হোম ১৮, আব্দুল মাজিদ ১৪ এবং প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মার্শাল আইয়্যুব আউট হয়েছেন ১১ রান করে। রোববার শান্তর সঙ্গে ব্যাট করতে নামবেন উইকেটরক্ষক জাবিদ হোসেন। এখনও রানের খাতা খোলা হয়নি তার। এদিকে মধ্যাঞ্চলের লিড যখন ছাড়িয়ে গেছে তিনশর গণ্ডি, তখন নিশ্চিত পরাজয়ই চোখরাঙানি দিচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলকে। কেননা তৃতীয় দিন যদি এ লিড চলে যায় চারশ ছাড়িয়ে, তখন ম্যাচ জেতা বা ড্র করা বেশ কঠিনই হবে এনামুল বিজয়, শাহরিয়ার নাফিস, নুরুল সোহানদের জন্য। আর যদি কোনোভাবে ম্যাচটি জিতে যায় মধ্যাঞ্চল, তখন অতি চালাকির ফলটা হাতেনাতেই পেয়ে যাবে দক্ষিণাঞ্চল। কেননা বিসিএলের বাইলজ অনুযায়ী, কোনো দল টানা দুই ম্যাচ জিতলে বোনাস পাবে পুরো ১ পয়েন্ট। যার ফলে মধ্যাঞ্চলের ০.৫ বোনাস আটকাতে গিয়ে পুরো ১ পয়েন্ট দিয়ে দেবে দক্ষিণাঞ্চল। এমনটা হলে সব মিলিয়ে মধ্যাঞ্চলের পয়েন্ট হবে ১৮.৫০। আর এ ম্যাচ থেকে বোনাস পাওয়ার পরেও দক্ষিণাঞ্চলের পয়েন্ট এখন ১৭.৮৯। যার ফলে মধ্যাঞ্চলের চেয়ে পিছিয়ে পড়বে তারা। ওদিকে আরেক ম্যাচে পূর্বাঞ্চল জিতলে তাদের পয়েন্টও দক্ষিণাঞ্চলের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তখন ফাইনাল খেলবে মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল। আর চালাকি করতে গিয়ে গলায় দড়িই জমা পড়বে দক্ষিণাঞ্চলের। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৫ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2SMhHVd
February 15, 2020 at 01:44PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top