মুম্বাই, ২৫ ফেব্রুয়ারি- দক্ষিণ আফ্রিকায় যুব বিশ্বকাপের ২০২০ সালের পর্দা নেমেছে প্রায় আড়াই সপ্তাহ আগে। এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। জমজমাট ফাইনাল ম্যাচে ভারতীয় যুবাদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে সে ম্যাচে ঘটেছিল ন্যাক্কারজনক এক ঘটনা। ম্যাচ শেষে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। সে ঘটনার বিষয়ে দেরিতে হলেও মুখ খুলেছেন ভারতের ক্রিকেট ঈশ্বর শচিন টেন্ডুলকার। রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন নিজ দেশের যুব দলের খেলোয়াড়দের। গত ৯ ফেব্রুয়ারিতে হওয়া ফাইনাল ম্যাচটিতে একদম প্রথম ওভার থেকেই দেখা গেছে উত্তেজিত দুই দল। অসাধারণ এক ডেলিভারিতে ফর্মে থাকা যশস্বি জাসওয়ালকে পরাস্ত করে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন শরীফুল ইসলাম। পরের ওভারে রীতিমতো বাগযুদ্ধেই মত্ত হয়েছিলেন দিব্বংশ সাক্সেনা ও তানজিম হাসান সাকিব। আম্পায়ারের মধ্যস্থতায় থামে সেই ঘটনা। দুই দলের খেলোয়াড়দের এই উত্তাপ বিরাজ ছিল ম্যাচজুড়ে। একটি ভালো ডেলিভারিতে বোলাররা যেমন চোখ রাঙানি দিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের তেমনি দারুণ শট খেলে ব্যাটসম্যানরাও জবাব দিয়েছেন যথাযথভাবে। মাঠের খেলায় বোলার-ব্যাটসম্যানের এ লড়াইটা ছিল বেশ উপভোগ্য, পুরোপুরি ক্রিকেটীয়। কিন্তু সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ম্যাচ শেষে শিরোপা উদযাপনের সময়। বাংলাদেশ দল যখন পতাকা হাতে উদ্দাম উদযাপনে ব্যস্ত, তখন হুট করেই দেখা গেল একটা জটলার মধ্যে প্রায় হাতাহাতির অবস্থা দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে। কোচিং স্টাফদের মধ্যস্থতায় থামে সে দফার ঝগড়া। এর খানিক পরই দেখা যায়, বাংলাদেশের পতাকা টানছেন ভারতের জার্সি পরা এক খেলোয়াড়। মূলত উদযাপনরত খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পতাকা ছিনিয়ে নেয়াই ছিল উদ্দেশ্য। সে ঘটনা টিভি স্ক্রিনে ধরা পড়তেই সরিয়ে নেয়া হয় ক্যামেরা। তখন যে ঘটেছিল আপত্তিকর কিছু- সে বিষয়ে আর সন্দেহ থাকে না কারোরওই। এ ঘটনার তদন্ত করে শাস্তি দেয়া হয় দুই দলের পাঁচ ক্রিকেটারকে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তিন ক্রিকেটার তৌহিদ হৃদয় (১০ ম্যাচ নিষিদ্ধ), শামীম হোসেন (৮ ম্যাচ নিষিদ্ধ) এবং রকিবুল হাসান (৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ) এবং ভারতের দুই ক্রিকেটারের মধ্যে আকাশ সিং নিষিদ্ধ হয়েছেন ৬ ম্যাচ আর লেগস্পিনার রবি বিষ্ণুইকে নিষিদ্ধ করা হয় ৫ ম্যাচের জন্য। তবে এটুকু শাস্তিতেই সন্তুষ্ট ছিলেন না ভারতের সাবেক অধিনায়করা। বিশেষ করে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, কপিল দেব, বিষেন সিং বেদিরা ভারতীয় যুবাদের জন্য আরও কঠোর শাস্তির দাবি করেন। যদিও পরে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সে ঘটনায়ই এবার প্রায় আড়াই সপ্তাহ পর মুখ খুলেছেন ভারতের আরেক সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকার। ভারতীয় যুবাদের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। জানান গালাগাল করা কিংবা দুর্ব্যবহার করা কখনও আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের অংশ হতে পারে না। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে শচিন বলেন, আমরা হয়তো কাউকে শেখানোর চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু যাকে শেখানো হচ্ছে, তার আদৌ শেখার ইচ্ছে আছে কি না- সেটা তার ওপরই নির্ভর করে। এসব কঠিন মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সবসময় মাথায় রাখতে হবে, সবাই দেখছে তোমাকে, সারা বিশ্বের চোখ তোমার ওপর। খেলার মাঠে আগ্রাসী হওয়া স্বাভাবিক, তবে সেটার জন্য খারাপ ভাষা প্রয়োগ করার প্রয়োজন দেখি না। তিনি আরও যোগ করেন, আগ্রাসী হতে হবে, তবে সেটা নিজের খেলায়। তোমার ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ের আগ্রাসী মনোভাব দলকে সাহায্য করবে। এর বাইরে সবকিছুই দলের বিপক্ষে যাবে। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে, আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে যেন দলের অসম্মান না হয়। সবাই ম্যাচ জিততে চায়। রজার ফেদেরার কি জিততে চায় না? ও কি আগ্রাসী নয়? প্রতিটি পয়েন্ট জিততে মরিয়া থাকে সে। কিন্তু সেটার জন্য সে কাউকে অসম্মান তো করে না। সূত্র: জাগোনিউজ আর/০৮:১৪/২৫ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/38YZ6vQ
February 25, 2020 at 07:43AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন