ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি - ২৪ ঘণ্টা পুরো হয়নি। বাংলাদেশের যুব দল (অনূর্ধ্ব-১৯) বিশ্ব যুব ক্রিকেটের শিরোপা জয় করেছে। বাংলাদেশের জাতীয় দল যা পারেনি, যুবারা তা করে দেখিয়েছে। এখন বিশ্ব যুব ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আকবর আলির বাংলাদেশ। যুব দলের এমন সাফল্যে খুশির ফলগুধারা বইছে গোটা দোশে। জাতি উদ্বেলিত। সারা দেশে সাড়া পড়ে গেছে। গোটা জাতি আকবর আলির দলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। দেশের বাইরেও বাংলার যুবাদের প্রশংসা, স্তুতি আর বন্দনা চলছে। জাতীয় পর্যায়ে যুব ক্রিকেট দলকে সংবর্ধিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আকবর আলি, সাকিব, তামিমরা এখন জাতীয় বীর বনে গেছেন। তাদের রাজ্যজয়ী বীরের মত দেখছে গোটা দেশ ও জাতি। বিসিবি কি ভাবছে তাদের এই সাফল্যে? জাতীয় যুব দলের এমন আকাশছোঁয়া সাফল্যে বোর্ডের অনুভুতি কি? যিনি যে কোন ইস্যুতে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন চট জলদি, সেই বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন কি মনে করছেন? তার প্রতিক্রিয়া কি? তা জানতে ক্রিকেট অনুরাগিদের আগ্রহের শেষ নেই। নাজমুল হাসান পাপন তার প্রত্রিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যুব ক্রিকেটারদের এ অর্জন, কৃতিত্ব আর সাফল্য শুধু দেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই নয়, দেশের খেলাধুলার ইতিহাসেও সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বড় অর্জন। আজ বিকেলে বোর্ডে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে গিয়ে নাজমুল হাসান পাপন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, যুব দলের এ সাফল্যটা হুট করে বা রাতারাতি হয়নি। এটা একটি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার ফসল। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, এ দলটি যে চ্যাম্পিয়ন হবার মত সে ধারণাও তাদের ছিল। তার মূল্যায়ন, আকবর আলিরা একটা দল হিসেবে খেলেছে মাঠে। মনে হয়েছে একটা ইউনিট। ব্যক্তিকেন্দ্রীক মানসিকতা ও ব্যক্তি নির্ভরতার চেয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টাই কাজ করেছে বেশি। সে কারণেই এমন আকাশছোঁয়া সাফল্য ধরা দিয়েছে। বিসিবি বিগ বস জানান, বিসিবি আগে থেকেই চিন্তা ভাবনা করে এগিয়েছে। যখন যেটা করা দরকার সেটা করেছে এবং বিশ্ব যুব ক্রিকেটে সাফল্যের জন্য সম্ভাব্য করণীয় কি কি? তাও স্থির করা হয়েছিল। আর তারই ফসল এই সাফল্য। বিসিবি সভাপতি জানান, তারা মানে বোর্ড আগেভাগেই ভেবে রেখেছিলেন, যুব দলের ঘাটতি কোথায় ছিল? সেই ঘাটতি পূরণে কি কি করণীয় সে চেষ্টাও করা হয়েছে। যুব দলের প্রস্তুতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছিল। বিদেশের কন্ডিশনে ভালো করতে পারি না, সেটা মাথায় রেখে সে জন্য অনেক ওয়ানডে খেলিয়েছি। এই দলটা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো সেটা আমরা জানতাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের আর নিউজিল্যান্ডের সাথে ৫ ম্যাচের সিরিজ বিজয়ের উপমা টেনে পাপন বলেন, শুধু ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল নয়, প্রত্যেকটা ম্যাচ বিশেষ করে ইংল্যান্ডের সঙ্গে তিন ম্যাচ আর নিউজিল্যান্ডে পাঁচ ম্যাচ সিরিজেও প্রমাণ হয়েছে এ দলের সামর্থ্য ও শক্তি। সবসময় টিম এফোর্ট ছিল। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ওপর কিন্তু এই দলট না না। ওঅনেক ভাল স্কিল আছে। ভালো খেলোয়াড় আছে। সরাক্ষান মনে হয় টিম হিসেবে খেলছে। এটা প্লাস পয়েন্ট। এবার না হয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তবে ইতিহাস জানাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যুব দলের ক্রিকেটারদের বড় অংশ হারিয়ে যান। কারণ বিশ্বকাপের পর আর তাদের নিয়ে কোন লক্ষ্য ও পরিকল্পনা থাকে না। তারা নিজেদের মত করে চলার ও খেলার চেষ্টা করেন আর বোর্ডের অধীনে কোন বিশেষ ক্যাম্পে ধরাবাঁধা নিয়মে চলেন না, তাই অনেকেরই ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়। এই দলটিকে নিয়ে বোর্ডের চিন্তা কি? এ প্রশ্ন অনেকেরই। আজ সাংবাদিকদের কাছ থেকে সে প্রশ্ন শুনে পাপনও স্বীকার করলেন, হ্যাঁ, হারিয়ে যাওয়া; এটা একটা বিরাট সমস্যা। তবে এবার সে সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবার কথা বলেছেন বিসিবি প্রধান। তাই তো মুখে এমন কথা, এটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি প্রায় আড়াই বছর ধরে। কয়েকটা ছেলে খুব ভালো করল; কিন্তু ওরা তো এখনই জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছে না। তখন ওরা করবেটা কি? যদি ওদের হাই পারফরম্যান্স ক্যাম্পে দেই ওখানে দেখা যায়, যারা জাতীয় দলে ছিল আগে বা যারা সুযোগের অপেক্ষায় আছে তারা যাচ্ছে, তরুণ কিন্তু ঢুকতে পারছে না। আস্তে আস্তে এই খেলোয়াড়দের হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে এবং অনেকে হারিয়ে গেছেও। সেজন্য আমরা ওদেরকে নিয়ে পরিকল্পনা করেছি, আগে থেকেই করা আছে তবে এরই মধ্যে। কিন্তু কী করবো সেটা আজকে বলব না। ওরা বুধবার ঢাকা পৌঁছালে আপনাদের জানাব। যুব দলকে বড়সড় সংবর্ধনা দিচ্ছে না বিসিবি এদিকে বিশ্বসেরা হয়ে দেশে ফেরার পর তাৎক্ষণিকভাবে যুব দলকে আপাততঃ বোর্ডের পক্ষ থেকে বড় ধরনের কোন সংবর্ধনা দেয়া হবে না। কেন দেয়া হবে না? তাও জানিয়েছেন বোর্ড সভাপতি। তার কথা, ১২ তারিখ (১২ ফেব্রুয়ারি) ওরা দেশে আসবে। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেকেই কিন্তু বিরাট ত্যাগ স্বীকার করেছে। যেটা নাকি আমরা সচরাচর দেখি না, প্রচুর কষ্ট করেছে এবং আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি, অনেকে দেশে ফিরেই বাড়ি যেতে চাচ্ছে, তাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে চায়। তারা ১২ তারিখ সকালে আসবে আমরা বিমানবন্দরে যাব, তাদের অভ্যার্থনা জানাতে। আমরা বিশাল একটা কিছু করতে পারি সেখানে; কিন্তু ওই জায়গাটায় এমনিতেই ট্রাফিক অবস্থা খুব খারাপ। ওখানে যাত্রী আসা-যাওয়া করে। যদি বিশাল কিছু করতে চাই ওই জায়গায়টা কি অবস্থা হবে চিন্তা করুন! ওটা করব। হয়ত আটকাতে পারব না। যতটুক মিনিমাম করা যায়। ওদের আমরা বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসব বিসিবিতে। একাডেমিতে উঠবে ওরা ফ্রেশ হবে। দুপুরের একসথাতে খেয়ে প্রেসমিট করে ওদের ছেড়ে দেব। বোর্ড যদি সবচেয়ে বেশি সন্মান দেয় তাহলে সুজনকে দেবে এদিকে বিসিবি প্রধান খালেদ মাহমুদ সুজনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তার অনুভব, যুবাদের এ সাফল্যের অন্যতম পিছনের রূপকার খালেদ মাহমুদ সুজন। তাকেই আলাদা করে সন্মান জানাতে চান বোর্ড সভাপতি। পাপনের ব্যাখ্যা, আজ আমি প্রথম নামটাই বলেছি খালেদ মাহমুদ সুজনের। আসলে ক্রিকেট বোর্ডে আমার আসার আগে যত বোর্ড ছিল ওগুলো নিয়ে তো কেউ কিছু বলে না। আমরাই পড়লাম তোপের মুখে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে খালেদ মাহমুদ সুজন। যার বিরুদ্ধে সোচ্চার সকলে। তার পজিটিভ কখনো শুনি না। যারা সবচেয়ে বেশি কাজ করে শুধু ক্রিকেট নিয়েই ভাবে, অন্য কোনো চিন্তা নাই, তাদের এমনই কপাল হয়। আজকের এই সাফল্যের পেছনে বোর্ড থেকে যদি কাউকে সবচেয়ে বেশি সম্মান দেয়া হয়, তাহলে সেটা হলো খালেদ মাহমুদ সুজন। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১১ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2OIXzC1
February 11, 2020 at 03:03AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন