ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি - ধারণা করা হচ্ছিলো, সময়ের সাথে সাথে দৃশ্যপট বদলে যাবে। টেস্টেও ওয়ানডের মত ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারবে টাইগাররা; কিন্তু তা আর হলো কই? এখনো ওয়ানডের তুলনায় টেস্ট পারফরমেন্স খুবই খারাপ। দিনকে দিন আরও অনুজ্জ্বল হচ্ছে। দেশের মাটিতে তাও চলনসই। উইকেটের সহায়তা আর অনুকুল পরিবেশ-প্রেক্ষাপটে মোটামুটি উৎরে গেলেও বাইরে গেলেই থলের বেড়াল বেরিয়ে আসছে। ঘরের মাঠে বাঘের মত গর্জে ওঠারাই দেশে বাইরে গিয়ে কেমন যেন চুপসে যাচ্ছেন। এইতো ভারতের সাথে দুই টেস্টের সিরিজে কি নাকানি-চুবানিটাই না খেয়ে এসেছে মুমিনুলের দল! আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে রাওয়ালপিন্ডিতেও আজহার আলির পাকিস্তানের কাছে ইনিংসে হেরেছেন তামিম, মাহমুদউল্লাহ, লিটন, মুমিনুলরা। প্রায় একই দল যুক্তরাজ্যের মাটিতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত বড় দলকে হারিয়ে দিয়ে এসেছে কয়েক মাস আগেই। প্রায় সেসব ক্রিকেটারে সাজানো দলই টেস্টে খাবি খাচ্ছে। দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের মত টেস্ট শিশুর সঙ্গেও পেরে ওঠেনি। হেরেছে করুনভাবে। আর দেশের বাইরে গিয়ে রীতিমত ত্রাহিমধুসুদন অবস্থা তাদের। কখনো কখনো ব্যাটিং আর বোলিং দেখে মনে হচ্ছে ক্রিকেটাররা যেন এই দুটা কাজই ভুলে গেছেন। তাদের যেন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। এই যে দেশের মাটিতে টেস্টে খাবি খাওয়া, তা নিয়ে ভক্ত-সমর্থক সবাই চিন্তিত। উদ্বিগ্ন। সবার একটাই কথা, টেস্টে পারফরমেন্সের গ্রাফ উঁচু হবে কবে? আর দেশের বাইরে গিয়ে টেস্ট ক্রিকেটাররা বুক চিতিয়ে লড়াই করতে শিখবেন কবে? শুধু ভক্ত ও সমর্থকদের কথা বলা কেন, খোদ বিসিবি কর্তারাও যারপরনাই চিন্তিত। খোদ বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন হতাশ। উত্তরণের পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ব্যর্থতা নিয়ে বসে না থেকে কর্মপন্থা স্থির করতে আগ্রহী বিসিবি বিগ বস বলেন, করতেই হবে। শ্রীলঙ্কা সফর দেখেন, ত্রিদেশীয় সিরিজ, আফগানিস্তানের সাথে টেস্ট, ভারতে টেস্ট সিরিজ, পাকিস্তান- ঘুরে-ফিরে একই অবস্থা। যত দিন যাচ্ছে, উন্নতির কোনো আভাস দেখছি না। এটা আমাদের ভাবনায় আছে। পাপনের আরও একটি অসন্তুষ্টির জায়গা আছে। তার মতে অনেক তো সময় গড়িয়েছে, এখন তো ক্রিকেটারদের অনেক কিছুই আত্মস্থ করার কথা। তার ভাষায়, ওদের এতো দিনে শিখে যাওয়ার কথা; কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছুই হচ্ছে না। তাই আবার জাতীয় দলের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ইচ্ছে পাপনের। তাইতো মুখে এমন কথা, এখন সব কিছুতেই আবার সম্পৃক্ত হতে হবে এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সকালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দল সাজানো নিয়ে কথা বলার পর বিকেলে বিসিবিতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপেও প্রধান নির্বাচকের মুখেও প্রায় একই কথা। হ্যাঁ, দেশের বাইরে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া একটা চিন্তার কারণ। বিদেশে আমরা টেস্ট ভাল খেলি না অনেক দিন থেকে। প্রধান নির্বাচক সরাসরি ক্রিকেটারদের ওপর দায় না চাপালেও একটি কথা বলেছেন খানিক আক্ষেপের স্বরে, পাঁচদিন লাল বল খেলার মন-মানসিকতা থাকার খুব জরুরি। আপনি কিভাবে লাল বলের ক্রিকেটকে সামলাবেন, পরিকল্পনা কিভাবে করছেন, কিভাবে এগুচ্ছেন, এটা বড় বিষয়। পাঁচদিন খেলার মন মানসিকতা না থাকলে এটা কিন্তু কঠিন এখান থেকে ফিরে আসা। দেশে ভাল খেলছি, বিদেশে হচ্ছে না দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে। এটা চিন্তার বিষয়। নান্নু সঙ্গে যোগ করেন, পাকিস্তান থেকে টিম ম্যানেজমেন্ট আসলে বসে ঠিক করতে হবে করণীয়। ক্রিকেটারদের লাল বলে ক্রমাগত ব্যর্থতা, পাঁচ দিনের টেস্টে অনভ্যস্ততায় বিসিবির দায় কতটা? ক্রিকেটাররা কি পর্যাপ্ত দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলতে পারছে? বা তাদের সে সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে? বোর্ড কি এক্ষত্রে করণীয় কাজগুলো ঠিকমত করতে পারছে? প্রধান নির্বাচক মানতে নারাজ যে ক্রিকেটারদের টেস্টে অনুজ্জ্বল, শ্রীহীন পারফরমেন্সের পিছনে বোর্ডের কোন দায় আছে। তার ব্যাখ্যাটা এমন, পারফরম্যান্স পুরোপুরি খেলোয়াড়দের উপর। সুযোগ-সুবিধা যতটুকু দরকার, দেওয়া হচ্ছে। লঙার ভার্সনের খেলার কোন ঘাটতি নাই। দেশে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছি। যাওয়ার আগেই বিসিএলে ম্যাচ খেলে গেছে এবং সবাই পারফর্ম করে গেছে। এমন না যে, চারদিনের ম্যাচ খেলছেন না। ওখানে গিয়ে পাঁচদিন খেলেছে। নান্নুর শেষ কথা, আমাদের অনেক খেলোয়াড়ই কিন্তু অনেক ম্যাচ খেলে ফেলেছে, সবাই পরিপক্ক। তাদের কাছ থেকে বেটার পারফরম্যান্স আশা করতেই পারি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১২ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2ONQRe7
February 12, 2020 at 03:08AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top