সিলেট, ০৭ মার্চ - ড্যাশিং ওপেনার লিটন দাসের ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠের ভারত সিরিজ থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত জিম্বাবুয়ে সিরিজ- প্রায় পাঁচ বছরের পুরোটা সময় মাশরাফির নেতৃত্বেই ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলেছেন লিটন। অধিনায়ক মাশরাফি শুরু থেকেই অনেক বেশি আস্থা রেখেছেন লিটনের ওপর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুর দিকে যখন মানিয়ে নিতে পারছিলেন না লিটন, মাশরাফি তার মাথার ওপর দাঁড়িয়েছেন বটবৃক্ষ হয়ে। তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন সবধরনের বাহ্যিক চাপ থেকে। লিটনকে ঠিক কতটা বড় ব্যাটসম্যান মনে করেন মাশরাফি, তার প্রমাণ পাওয়া গেলো আজকের (শুক্রবার) ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও। অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ সংবাদ সম্মেলনে এসে মাশরাফি জানিয়েছেন তিনি দুজন ব্যাটসম্যানের খেলা দেখতে পছন্দ করেন- একজন বিরাট কোহলি আর অন্যজন লিটন দাস। তাই স্বাভাবিকভাবেই মাশরাফির প্রতি অনেক বেশি দায়বদ্ধতা ও কৃতজ্ঞতা লিটনের। যার খানিকটা তিনি শোধ করলেন মাশরাফির অধিনায়কত্বের শেষ ম্যাচে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ সমাপনী ম্যাচে লিটন খেলেছেন ১৪৩ বলে ১৭৬ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। গড়েছেন বাংলাদেশের পক্ষে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। মূলত প্রিয় বড় ভাই ও অধিনায়ক মাশরাফির শেষ ম্যাচটিকে জয় দিয়ে রাঙানোর জন্যই (শুক্রবার) খেলতে নেমেছিলেন লিটন। চাচ্ছিলেন যে করেই হোক, জয়টা যেন আসে। আর সে ভাবনা থেকেই তার ব্যাট থেকে বেরিয়ে বিধ্বংসী ইনিংস। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেন, বিশেষ কিছু বলতে, আসলে চাচ্ছিলাম ভাইয়ার শেষ ম্যাচটা যেন জয় দিয়ে শেষ করতে পারি। সেভাবেই খেলছিলাম। চলতি সিরিজে এটি ছিল লিটনের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন ১২৬ রানের এক অপরাজিত ইনিংস। সেদিন বলেছিলেন, ৫০-৬০ রানই করতে পারেন না, দুইশ কীভাবে করবেন? আজ ঠিকই দুইশর খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন লিটন। মাত্র ৪১ ওভারের মধ্যেই করেছেন ১৭৬ রান। ম্যাচটি পুরো ৫০ ওভারের হলে হয়তো দেখেশুনে খেলে ঠিকই ডাবল সেঞ্চুরি পেয়ে যেতেন লিটন। সে বিশ্বাসও এখন এসেছে তার মাঝে। বলেছেন, দুইটা সেঞ্চুরির পর তো অবশ্যই বিশ্বাস এসেছে যে ভালো খেলতে পারবো, বড় ইনিংস খেলতে পারবো। ত্রিশ ওভার ব্যাট করতে পারলে সেঞ্চুরি মারতে পারবো। রেকর্ডগড়া ইনিংসে লিটন ছিলেন নিজের সেরা ছন্দে। কভার, মিডউইকেট, এক্সট্রা কভার, পয়েন্ট, লংঅফ, লংঅন বা স্কয়ার লেগ- সব জায়গা দিয়েই খেলেছেন নিজের ইচ্ছেমত। মাশরাফির ভাষ্য মতো ঠিক বড় মাপের ব্যাটসম্যানশিপই আজ দেখা গেছে লিটনের মাঝে। যা প্রায় নিয়মিতই দেখা যায় দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে। সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে লিটন বলেন, আজকের কথা বললে, আমার মনে হয়েছে বেশ কিছু পছন্দের শট খেলেছি। ভালো ব্যাটিং করতে পেরেছি। ঘরোয়াতে অনেক রান করেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সেটার চেষ্টা করি। অনেক ম্যাচেই হয়নি। সে ভুলগুলো নিয়েই কাজ করছি। সামনে ভালো কিছু হবে আশা করি। লিটন যখন ১৭৬ রানে আউট হয়ে যান, তখন তার চেয়েও বেশি হতাশ দেখা যায় উদ্বোধনী সঙ্গী তামিম ইকবালকে। ব্যক্তিগত ডাবল সেঞ্চুরি না হলেও, তামিমকে সঙ্গে নিয়ে উদ্বোধনী জুটি তথা যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়েছেন লিটন। দুজন মিলে যোগ করেছেন ২৯২ রান। এই ম্যারাথন জুটির সময় তামিমের কাছ থেকে কী পরামর্শ পেয়েছিলেন লিটন? উত্তরে জানান, আমি যখন ৮০ রানে ব্যাট করছিলাম, তখন আমার বা তামিম ভাইয়ের তেমন বাউন্ডারি আসছিল না। তখন তামিম ভাই বলছিলেন যে, সময় নিয়ে ব্যাটিং করতে। তাহলে বাউন্ডারিও আসবে, রানও আসবে। এরপর যখন আবার ১২০ রান হলো, তখন তিনি একটা কথাই বলেছেন যে, এটাই সুযোগ। এমন কিছু করে রাখ যেটা অনেকদিন টিকে থাকবে। যদিও আমি চাই না। অনেকদিন টিকে থাক এটা। তবে তামিম ভাই তাই বলছিলেন। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৭ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3cES81y
March 07, 2020 at 01:46AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top