করোনাভাইরাসের প্রকোপ এখন ইতালির পর সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে স্পেনে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। এখনও পর্যন্ত স্পেনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন প্রাণঘাতী করোনায়, মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৬৪৭ জন। দেশের এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ সবধরনের খেলাধুলা। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির ভেতরেই থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে। ফলে সবকিছুতেই নেমে এসেছে স্থবিরতা। যার ধাক্কা লেগেছে অর্থনীতিতেও। বিশেষ করে খেলাধুলা বন্ধ থাকার কারণে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ফুটবল ক্লাবগুলো। বিশ্বের অন্যতম সেরা দুইটি ক্লাব স্পেনেরই- বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে মানিয়ে খেলোয়াড়দের বেতনের কিছু অংশ কেটে রাখার কথা ভাবছে বার্সেলোনা। কিন্তু ক্লাবের এমন পরিকল্পনার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে খেলোয়াড়দের মধ্যে। এরই মধ্যে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে বার্সেলোনার ড্রেসিংরুম। তবে তাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে যথাযথ কারণ। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম স্পোর্টের বরাত দিয়ে ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মেইল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এ বিষয়ে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে করণীয় ঠিক করার জন্য গত শুক্রবার এক বৈঠকে বসেছিল বার্সেলোনার ক্লাব পরিচালকেরা। যেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা হয়েছিল খেলোয়াড়দের বেতনের কিছু অংশ কেটে রাখার ব্যাপারে। তবে এটি বাস্তবায়ন করা যে সহজ হবে না সে ব্যাপারেও আলোচনা হয় বৈঠকে। এমন পরিকল্পনার খবর জানাজানি হওয়ার পর তিন ভাগ হয়ে গেছে বার্সেলোনার ড্রেসিংরুম। প্রথম ভাগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে এমন প্রস্তাব। তাদের দাবি ক্লাবের পক্ষ থেকে অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে অর্থহীন সব কাজে। তাই সেসবের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য নিজেদের বেতন ছাড়তে রাজি নন প্রথম ভাগের খেলোয়াড়রা। যেখানে রয়েছেন কিছু তারকা খেলোয়াড়ও। দ্বিতীয় ভাগে থাকা খেলোয়াড়রা বিনা বাক্য ব্যয়ে রাজি হয়েছেন এমন প্রস্তাবে। এ দলে কারা রয়েছেন তা জানা যায়নি। তবে এখানে দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসির থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কেননা তিনি এরই মধ্যে নিজ তাগিদের বার্সেলোনার দুইটি হাসপাতালে এক মিলিয়ন ইউরো অনুদান দিয়েছেন। দ্বিতীয় এই দলটি এখনও তাদের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানায়নি, তবে তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক উত্তরই পাওয়া যাবে। আর সবশেষ অর্থাৎ তৃতীয় ভাগে থাকা খেলোয়াড়রা বুঝতে পারছেন না, এমন অবস্থায় তাদের কী সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। তাই তারা পুরো বিষয়টা ছেড়ে দিয়েছেন স্প্যানিশ ফুটবলারস অ্যাসোসিয়েশনের হাতে। এই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যা সিদ্ধান্ত হবে, সেটিই মেনে নেবেন তৃতীয় ভাগের খেলোয়াড়রা। এখনও পর্যন্ত অ্যাসোসিয়েশনের যা সিদ্ধান্ত, তাতে বোঝা গেছে লা লিগার সব খেলোয়াড়দের বেতনের ১০ শতাংশ কেটে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসছে শীঘ্রই। তবে বার্সেলোনার পরিকল্পনা অনুযায়ী বেতনের ৫০ শতাংশ কেটে রাখার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। অবশ্য এর বাইরে তেমন কোনো পথও খোলা নেই বার্সেলোনার সামনে। কেননা এরই মধ্যে শুধুমাত্র নাপোলির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ পিছিয়ে যাওয়ায় ক্লাবটির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকা)। এছাড়াও করোনার কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ন্যু ক্যাম্পের স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স। যা ছিলো ক্লাবটির অন্যতম আয়ের উৎস। গতবছর বার্সেলোনা জাদুঘর থেকে আয় হয়েছিল ৬ কোটি ইউরো (প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা) এবং ক্লাবের দোকান থেকে বার্সেলোনা পেয়েছিল ৮৬ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা)। কিন্তু করোনার কারণে এসব আয় বন্ধ হয়ে গেছে বার্সেলোনার। কিন্তু খরচ রয়ে গেছে আগের মতোই। বার্সেলোনার বিভিন্ন দলগুলোর খেলোয়াড় এবং স্টাফদের মোট বার্ষিক বেতন প্রায় ৬৫ কোটি ইউরো (প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা)। এর মধ্যে শুধু খেলোয়াড়রাই পান প্রায় ৫১ কোটি ইউরো বা ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৬ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Un6gWd
March 26, 2020 at 06:10AM
26 Mar 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top