কলকাতা, ২৩ মার্চ- দিনরাত লাগাতার দূষণে যেন শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এসেছিল তিলোত্তমা নগরী কলকাতার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দূষণ বাড়তে থাকায় রীতিমতো ধুকছিল মহানগরীর ফুসফুস করোনার আতঙ্কের আবহে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত ১৪ঘণ্টার জনতা কারফিউ, বাড়তে থাকা সেই ক্ষতেই যেন প্রলেপ হয়ে উঠলো। কারণ জনতা কারফিউয়ের ফলে একদিনেই মহানগরীর দূষণ মাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় অর্ধেক। বায়ু দূষণ এবং শব্দ দূষণ উভয় ক্ষেত্রেই মাত্রা হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ফলে মুখে হাসি ফুটেছে পরিবেশপ্রেমীদের। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, এই সময় সাধারণত শহর কলকাতার বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে থাকে অন্তত সত্যি ১৫০ থেকে ১৭০ মাইক্রো গ্রাম। শীতকালে যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০০ মাইক্রোগ্রামে। অথচ রবিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শহরের বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ছিল প্রতি ঘনমিটারে মাত্র ৭০ মাইক্রোগ্রাম। যা অন্য দিনের তুলনায় কার্যত অর্ধেক। ফলে বায়ু দূষণের এই পরিসংখ্যান দেখে স্বাভাবিকভাবেই মুখে হাসি ফুটেছে পরিবেশ প্রেমীদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনতা কারফিউর ডাক দেওয়ায় একটা দিন সবাই ঘরবন্দি হয়ে থাকায় আর যাই হোক পরিবেশটা অন্তত একদিনের জন্য হলেও বাঁচলো। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর তথ্য বলছে, ১৪ ঘণ্টা জনতা কারফিউ চলাকালীন সময়ের মধ্যেই এক ধাপে একলাফে পড়েছে এই পরিসংখ্যান। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর কোন শহরকে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখতে হলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ প্রতি ঘনমিটারে ২৫ মাইক্রো গ্রাম থাকা দরকার। পৃথিবীর উন্নত শহরগুলিতে যে মাত্রা রীতিমতো নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেই হিসেবে দেখতে গেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাত্রা থেকে বেশ অনেকটাই উপরে ছিল আজকের পরিসংখ্যান। পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষ জানাচ্ছেন ১৪ ঘন্টার জনতা কারফিউতে এই পরিসংখ্যান অর্ধেকে নেমে আসতে পারলে, পুরোপুরি লক ডাউনের সময় সংখ্যাটা আরো নিচে নামবে। এমনকি এটা প্রায় পঁচিশেও নেমে আসতে পারে বলেই আমি আশাবাদী। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর তথ্য বলছে, এই জনতা কারফিউ এর ফলে শুধু বায়ু দূষণই নয়, মাত্রা প্রায় কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে শব্দ দূষণের ক্ষেত্রেও। আর পাঁচটা দিন শহর কলকাতার অধিকাংশ ব্যস্ততম রাস্তায় শব্দ দূষণের মাত্রা থাকে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ডেসিমেল পর্যন্ত। সেখানে আজ রবিবার সারাদিনে গোটা শহর কলকাতায় শব্দ দূষণের মাত্রা ছিল মাত্র ৪০ ডেসিমেল। যা অন্যদিনের তুলনায় একেবারেই অর্ধেক। প্রধানমন্ত্রী জনতার কারফিউর ডাক দেওয়ায় রবিবার দিনভর রাস্তায় যান চলাচল একেবারেই বন্ধ ছিল। ফলে আর পাঁচটা দিনের মতো হর্নের আওয়াজ থেকে মুক্তি পেয়েছে শহরবাসী। পরিবেশবিদদের দাবি, চল্লিশের নিচে শব্দের মাত্রা থাকলে তাকে সাইলেন্স জোন বলে ধরা হয়। সে ক্ষেত্রে রবিবার ১৪ ঘন্টা তিলোত্তমা নগরী প্রকৃত সাইলেন্স জোনে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পেরেছে বলা চলে। যা এই ধুকতে থাকা বসুন্ধরার কাছে প্রায় মহৌষধির সমান। এম এন / ২৩ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/39bfzMP
March 23, 2020 at 03:38AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন