ঢাকা, ২৫ মার্চ - লিগ যেদিন বন্ধ হলো, সেদিনও তার মুখে ছিল এই কথা। সোমবার রাতে আবারও সেই কথাই খালেদ মাহমুদ সুজনের মুখে, জানি ও বুঝি, আমার কথা শুনে অনেকেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠবেন। আমি একটা বড় অংশর চক্ষুশূল হয়ে যাব। অনেকেই বলবেন, বলে কি? করোনা ভাইরাসে যেখানে বিশ্বের সব ক্রীড়া আসর বন্ধ, সেখানে ঢাকার প্রিমিয়ার লিগ অন্তত ২৭ মার্চ পর্যন্ত চালিয়ে যাবার চিন্তা যে রীতিমত ক্রিকেটারদের মৃত্যু শঙ্কায় ফেলে দেয়ার মতো। কিন্তু আমি যে কেন তা বলেছিলাম, তা বোঝাতে পারিনি কাউকে। এ ভাইরাস দিনকে দিন প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে, শঙ্কা ছিল আমার মাথায়ও। তারপরও আমি চেয়েছিলাম, অন্তত ২৭ মার্চ পর্যন্ত খেলাটা যাতে চলে। তাহলে প্রায় প্রথম লিগের অর্ধেক হয়ে যেত। মানে ১২ দলের সবাই গড়ে ৫ টি করে ম্যাচ খেলে ফেলতো। করোনার কারণে খেলা এপ্রিল, মে এমনকি জুনে শুরু সম্ভব না হলেও কোন এক সময় দুই সপ্তাহ সময় পেলেই সিঙ্গেল লিগ শেষ করে ফেলা যেত। তাতে ক্রিকেটাররা যার যার পাওনা পেয়ে যেত। আর পাঁচ রাউন্ড খেলা চালিয়ে যেতে পারলেও ক্রিকেটাররা অন্তত কিছু টাকা অন্তত পেত। এখন যে অবস্থা হয়েছে, লিগ যদি একদমই না হয়, তাহলে কেউ কিছুই পাবে না। প্রাণঘাতী করোনায় বিশ্বের অনেক কিছুুই এলোমেলো হয়ে গেছে। এই ভাইরাসের প্রকোপে ঢাকা তথা বাংলাদেশের একমাত্র ৫০ ওভারের ক্রিকেট আসর প্রিমিয়ার লিগও না হতে পারে। এমন সংশয়-শঙ্কা এখন ক্রিকেট ও ক্লাবপাড়ায়। পাঠকরা এরই ভেতরে জেনেও গেছেন, প্রিমিয়ার লিগ শেষ পর্যন্ত না হলে নামি ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের খুব বড় অর্থ ক্ষতি না হলেও তরুণ, উদীয়মান এবং কম খ্যাতির শতাধিক ক্রিকেটারের রুটি রুজির উৎস এ বছরের মত নষ্ট হয়ে যাবে। মোদ্দা কথা, যে সব ক্রিকেটার শুধুই প্রিমিয়ার লিগের ওপর নির্ভর করে চলেন, তারা খুব সমস্যায় পড়বেন। কিন্তু এর পাশাপাশি তারকা ক্রিকেটাররা মানে যারা লিগ শুরুর আগে দলবদলের সময় মোটা অংকের অগ্রীম অর্থ নিয়েছেন, তারাও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। ধরা যাক মুশফিকুর রহীমের কথা। আবাহনীর নতুন অধিনায়ক এবারের প্রিমিয়ার লিগে সর্বাধিক ৬৫ লাখ টাকায় আকাশি হলুদ শিবিরে যোগ দিয়েছেন। লিগ আর মাঠে না গড়ালে মুশফিক যত টাকা অগ্রীমই নিয়ে থাকেন না কেন, পাবেন মোটে ৪ লাখ ৬ হাজার ২৫০ টাকা। অর্থাৎ এবারের দলবদলের প্রধান শর্তই হলো প্লেয়ার্স বাই চয়েজ ভেঙে যত খোলামেলা দলবদলই হোক না কেন, আর ক্রিকেটাররা যত টাকা অগ্রীম নিয়েই চুক্তি করুন না কেন, পারিশ্রমিক বন্টন হবে ম্যাচ পিছু। যে যত টাকা পাবেন, সেই মোট পারিশ্রমিকের অংকটা যত ম্যাচ খেলবেন, তা দিয়ে ভাগ হবে। যেহেতু মুশফিক ৬৫ লাখ টাকায় আবাহনীর সাথে চুক্তি করেছেন, তাই লিগ আর না হলে একটি মাত্র খেলার টাকাই জুটবে তার কপালে। প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক ও ব্যবস্থাপক সিসিডিএমের সদস্য সচিব আলী হোসেন জানান, লিগ শুরুর আগে আমরা জানতাম জাতীয় দল এপ্রিলের প্রথম ভাগে পাকিস্তান যাবে। তাই আমরা এবারের দল বদলে একটা নিয়ম করে দিয়েছি যে, যত টাকায়ই চুক্তি করুক না কেন, পারিশ্রমিক পাবেন ম্যাচ টু ম্যাচ। যেহেতু ১২ দলের লিগ, তাই আমরা প্রথম লিগে ১১ ও সুপার লিগের ৫-সহ সর্বোচ্চ ১৬ ম্যাচ ধরে রেখেছি। আর যাদের দল সুপার লিগ খেলতে পারবে না, তাদের পারিশ্রমিক ঐ ১১ খেলার হিসেবেই বণ্টন হবে। তার মানে লিগ আর শুরু না হলে সবাই এক ম্যাচের অর্থই পাবেন। আর তাই ৬৫ লাখ টাকায় আবাহনীর সঙ্গে রফা করা মুশফিকের ভাগ্যে তখন জুটবে মাত্র ৪ লাখ টাকা। আর মুশফিক, তামিম, রিয়াদ, মাশরাফি, লিটন, সৌম্যরা মোট পাওনার অন্তত ৫০ ভাগ অগ্রীম নিয়ে তবে দলবদল করেছেন। এখন লিগ আর না হলে সেই অগ্রীম অর্থের বড় অংক ক্লাবকে ফেরত দিয়ে দিতে হবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৫ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3duqiFJ
March 25, 2020 at 06:13AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top