সিলেট, ০৩ মার্চ - সন্দেহ নেই, দেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল খান। পরিসংখ্যান কিংবা সাফল্য- সবই কথা বলবে তার পক্ষে; কিন্তু গত কয়েক সিরিজ ধরেই ঠিক যেন চেনা ছন্দে নেই বাঁ-হাতি এই ড্যাশিং ওপেনার। ব্যাট থেকে আসছে না দৃষ্টিনন্দন কোনো শট, খেলতে পারছেন না বড় কোনো ইনিংস। তামিমের ওয়ানডে ক্যারিয়ারকে যদি কয়েকভাগে ভাগ করা হয়। তাহলে সবচেয়ে সেরা সময়টা পাওয়া যাবে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ শুরুর আগ পর্যন্ত সময়টাকে। যেখানে ৫১ ইনিংসে ব্যাট করে ৭ সেঞ্চুরি ও ১৮ ফিফটিতে ২৫১১ রান করেছিলেন তামিম। গড়টা ঈর্ষণীয়, ৫৭.০৬! এ সময়ে তার ব্যাটেই অনেক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে তামিম ইকবালের ব্যাটিংকে ঠিক মেলানো যায় না তার আগের তিন বছরের সঙ্গে। ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলা বিশ্বকাপ থেকেই শুরু হয়েছে তামিমের খোলসবন্দী ব্যাটিং। যা চলছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি সিরিজেও। পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ১২ ইনিংসে ব্যাট করেছেন তামিম। এর মধ্যে তার ব্যাট থেকে ৫০ ছাড়ানো ইনিংস এসেছে মাত্র একটি, সেঞ্চুরি নেই কোনো। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু বিষয়টি হলো, তার ব্যাটিংয়ের ধরণ। যার প্রমাণ মিলছে স্ট্রাইকরেটেও। গত ১২ ম্যাচে তামিমের স্ট্রাইকরেট মাত্র ৬৭.৭৯। আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে যা বড্ড বেমানান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কথা উঠছে তামিমের পারফরম্যান্স নিয়ে। শুধু ওয়ানডে বলেই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতেও খোলসবন্দী ব্যাটিং করে থাকেন তামিম। যা অনেক সময় চাপে ফেলে দেয় অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যানকে, থামিয়ে দেয় দলের রানের চাকা। এ বিষয়ে কী ভাবনা? উত্তরের খোঁজে পাওয়া গেল বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং নেইল ম্যাকেঞ্জিকে। তার মতে, তামিম দিনের পর দিন ব্যর্থ- এ কথাটি বেশ কঠিন হয়ে যায়। কেননা বাঁ-হাতি ওপেনারের পরিসংখ্যান কিংবা সামর্থ্যের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে আগেই। (সোমবার) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন শুরুর আগে ম্যাকেঞ্জি বলেন, আমি মনে করি না, সে (তামিম) দিনের পর দিন ব্যর্থ হয়ে আসছে। সে মাত্রই ফিরেছে। আপনি রেকর্ড দেখলেই বুঝবেন, সে কোন মাপের খেলোয়াড়। আমার মতে, দিনের পর দিন একটা কঠিন মন্তব্য। খুব শিগগিরই রান পাবেন তামিম, এমনটা জানিয়ে ম্যাকেঞ্জি আরও বলেন, আমরা সবাই জানি, তামিম কত রান করেছে। তার কোয়ালিটির একজন ব্যাটসম্যানের জন্য রানে ফেরাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। ম্যাচের বাইরে সে কিছু সময় কাটিয়েছে। সে এখন দারুণভাবে ফিরেছে। তার মানসিক অবস্থাও এখন বেশ ভালো। অনুশীলনে দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছে। তামিমকে নিয়ে সত্যি বলতে আমার কোনো চিন্তা নেই। তামিমের সাম্প্রতিক সমস্যাটা কী তাহলে মানসিক? উত্তরে ম্যাকেঞ্জি বলেন মিডিয়ার চাপের কথা। তার মতে, দেখুন! বাংলাদেশে মিডিয়ার আগ্রহ অনেক বেশি। যা কি না খেলোয়াড়দের ওপর পারফর্ম করার একটা চাপ সৃষ্টি করে। সব খেলোয়াড়ই সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে থাকে, সবকিছু পরীক্ষা করা হয় আতশী কাঁচের নিচে দিয়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে বেনিফিট অব ডাউট দেয়ার পরামর্শ দেন ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, কখনও কখনও একজন খেলোয়াড়কে বেনিফিট অব ডাউট দেয়া উচিৎ। আপনারা রেকর্ড দেখুন, বুঝতে পারবেন সে (তামিম) বাংলাদেশের জন্য কত ভালো একজন ব্যাটসম্যান। তাকে খেলতে দিন। আমরা একজন খেলোয়াড়ের ওপর বাড়তি চাপ দিলে..., আপনারা জানেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বেশ কঠিন একটা মঞ্চ। এমন নয় যে, সে চেষ্টা করছে না, সে ফিট নয়। তার ফিটনেস এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। তাই তামিমকে নিয়ে আমি তেমন ভাবছি না। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ০৩ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2TgB4af
March 03, 2020 at 03:06AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন