দোহা, ২২ মার্চ- কাতারের শিল্পাঞ্চল (সানাইয়া) এলাকার ১নং থেকে ৩২ নং সড়ক পর্যন্ত লকডাউন করে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির সরকার। জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ থেকে সানাইয়ার সাফারি মার্কেট থেকে শুরু করে ১নং সানাইয়া আমেরিকা ক্যাম্প এবং সানাইয়া নতুন হামাদ মেডিকেল হাসপাতাল পর্যন্ত, বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা আল আতিয়া, ১০নং নিলাম গাড়ি বাজার, চায়না মার্কেট, লেবার সিটি, গ্রান্ডমলসহ প্রতিটি প্রবেশ ও বহির্গমন পথে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। শিল্পাঞ্চল (সানাইয়া) ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, সানাইয়ায় এইট নম্বর হিসেবে পরিচিত লেবার ক্যাম্পের পাঁচ নম্বর বিল্ডিংয়ে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে এর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কাতার সরকার পুরো শিল্পাঞ্চল সানাইয়ার স্ব স্ব লেবার ক্যাম্পগুলোকে কোয়ারেন্টিনে রেখেছে। এখানে বাংলাদেশ, নেপাল, ইন্ডিয়া, মিশরের অসংখ্য শ্রমিক বসবাস করে। এ ছাড়া অসংখ্য অটোমোবাইল দোকান ও গাড়ি গ্যারেজ রয়েছে বলেও জানান ওই ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, সানাইয়ায় বাংলাদেশি আছেন প্রায় ৩০ হাজারের বেশি। এই অবস্থায় কেউ যদি সানাইয়া থেকে জরুরি প্রয়োজনে বাহিরে বের হয়, তাহলে সানাইয়া ১নং সড়কের প্রবেশ গেটে কাতার সরকারের ভ্রাম্যমাণ অফিস থেকে তাকে বিশেষ পাস নিতে হয়। কোয়ারেন্টিন এলাকার কিছু জায়গায় কাতার সরকার নিয়মিত তিনবেলা খাবার সরবরাহ করছেন এবং বাকি জায়গাগুলোতে চাল, ডাল, তেলসহ প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করছে বলেও জানান মোহাম্মদ আলী। কতারের সানাইয়ায় বাংলাদেশি কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিয়মিতভাবে কাতার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস যোগাযোগ রাখছে এবং এই বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণে আছে দূতাবাস। এ ছাড়া সানাইয়ায় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ কোয়ারেন্টিনে আছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিকে, কাতারে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা। গত ২১ মার্চ কাতারে এই ভাইরাসে নতুন করে ১১ জন বেড়ে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮১ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছে ১০ জন। তবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজারেরও বেশি মানুষের। করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য বিস্তার ও সংক্রমণ ঠেকাতে কাতার জুড়ে প্রতিনিয়ত নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কাতারে প্রবেশের ক্ষেত্রে কাতারের নাগরিক ছাড়া সবার প্রবেশ বন্ধ রেখেছে কাতার সরকার। তবে পণ্যবাহী ও ট্রানজিট ফ্লাইট আগমন অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, আদালত, সকল পাবলিক পরিবহন, সব পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র, শপিং মল, সিনেমা হল, নাট্যশালা, বিভিন্ন পার্ক, ব্যায়ামাগারসহ সকল সামাজিক সভা সমাবেশ। তবে ঔষধ ও প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দোকান খোলা থাকবে। এক সরকারি আদেশে বলা হয়, বয়স্ক ব্যক্তি ও প্রেগন্যান্ট মহিলাদের বাসায় বসে দাপ্তরিক কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংক্রমণ ঠেকাতে নগদ অর্থের পরিবর্তে কার্ড দিয়ে লেনদেনের আহ্বান জানানো হয়। সকল রেস্তোরাঁ ও কফি শপে বসে খাওয়া দাওয়া নিষিদ্ধ করে শুধুমাত্র বাহিরে সরবরাহের সুযোগ রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে কাতারে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে। তাই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রকারভেদে তিন মাস ও ছয় মাস পর্যন্ত ভাড়া না নেওয়ার এবং পানি ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফসহ নানা সহায়তামূলক ব্যবস্থার ঘোষণা করেছে কাতার সরকার। পাশাপাশি কাতারে আমদানি করা মেডিকেল ও খাদ্যপণ্যে কোনো রকম শুল্ক না নেওয়ার সিদ্ধান্তও নেয় দেশটি। তবে কাতারকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা দেয়নি দেশটির মন্ত্রণালয়। এম এন / ২২ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2WzZTjO
March 22, 2020 at 07:12AM
22 Mar 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top