লন্ডন, ২৯ এপ্রিল - আন্তর্জাতিক মঞ্চে নাম লেখাননি এখনও। তবে হ্যাম্পশায়ার কাউন্টির হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ ভালোই খেলছেন ২৯ বছর বয়সী পেসার ক্রিস উড। গত দশ বছরে হ্যাম্পশায়ারের ৪টি শিরোপা জয়ে সরাসরি অবদান রেখেছেন এ বাঁহাতি পেসার। তবে তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকে লড়তে হয়েছে একটি বদ অভ্যাসের সঙ্গে। প্রায় ১১ বছর তিনি যুক্ত ছিলেন খেলাধুলার অনলাইন জুয়ার সঙ্গে। এমনও হয়েছে মাঠের খেলার চেয়ে তার মনোযোগ বেশি ছিল অনলাইন জুয়ার ফলাফলের দিকেই। স্বস্তির ব্যাপার হলো, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে আর কখনওই জুয়ার দান চালেননি উড। তাকে এই বদ অভ্যাস থেকে ফিরিয়ে আনতে কাজ করেছে আর্সেনাল ও ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবলার টনি অ্যাডামসের গড়া স্পোর্টিং চান্স। এ সংগঠনের কাজ মূলত বিভিন্ন আসক্তিতে ভোগা ক্রিকেটারদের বদ অভ্যাস থেকে মুক্ত করা। গত মার্চেই ৮৫ জন ক্রিকেটারকে এই চ্যারিটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্টনার হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে রয়েছেন ৪০ জন বর্তমান ক্রিকেটার, যারা গত এক বছরে নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সেবা নিয়েছেন স্পোর্টিং চান্স থেকে। এই চ্যারিটির এক পোডকাস্টেই নিজের গল্পটা শুনিয়েছেন ক্রিস উড। মাত্র ৮ বছর বয়সে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ এবং ক্যারিয়ারজুড়ে দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরির কারণেই মূলত জুয়ার দিকে ধাবিত হয়েছেন তিনি। যার শুরুটা হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট ক্লাবের এক শিরোপা জেতার মধ্য দিয়েই। ২০১০ সালে ফ্রেন্ডস প্রভিডেন্ট টি-টোয়েন্টি জেতার পর হ্যাম্পশায়ারের সতীর্থদের সঙ্গে রাতভর পার্টি করেছিলেন উড। সেদিন টুর্নামেন্ট জিতে পাওয়া নিজের সব প্রাইজমানি জুয়াতে হেরে বসেন তিনি। এছাড়া ২০১২ সালে এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জুয়ার কথা ভাবতে ভাবতে পিচের মধ্য দিয়েই হাঁটা শুরু করেছিলেন। জুয়ার প্রতি নিজের আসক্তির কথা জানিয়ে উড বলেছেন, আমি রোজ জুয়া খেলতাম। প্রায়ই নিজের ক্ষতি করার ভাবনা মাথায় ভর করতো। এমন না যে আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। তবে মনে হতো, সত্যিই কি এখানে থাকার যোগ্য আমি? প্রত্যেকদিন আমি জুয়ার মাধ্যমে নিজের অনুভূতিগুলো চাপা দেয়ার চেষ্টা করতাম। এর বাইরে কিছু করারই ছিল না আমার। তিনি আরও বলেন, আমার এখন লুকোনোর কিছু নেই। আমি নিজেকে নিয়ে এখন আর ভয় পাই না। আমি নিজের অবস্থা নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি কারণ এতে সামনের দিনগুলোতে অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়। এছাড়া নিজের চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমার জীবনের বাকি সময়টাতেও এটিকে সত্যি ধরেই এগুতে হবে। এদিকে ইংল্যান্ডের পেশাদার ক্রিকেটারদের সংস্থার পরিচালক ইয়ান থমাসের মতে, প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে জুয়ার প্রতি আসক্তির কথা শিকার করেছেন ক্রিস উড। এর মাধ্যমে সবার জন্য দারুণ নজির স্থাপন হয়েছে বলে মনে করেন থমাস। যা কি না একই অবস্থায় থাকা অন্যান্যদের সাহায্য করতে পারে। ২০২০ সালের মৌসুমের জন্যও হ্যাম্পশায়ারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন ক্রিস উড। এখনও পর্যন্ত ৪৩ প্রথম শ্রেণির, ৭৯ লিস্ট এ ও ১২১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ঝুলিতে উইকেটসংখ্যা যথাক্রমে ১০৫, ১০৫ ও ১৩১। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২৯ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2VLIOlZ
April 29, 2020 at 06:38AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন