কেপটাউন, ২০ এপ্রিল - করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দী থাকাটাকে একটা ভালো কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিলেন ব্রাজিলিয়ান সুপার মডেল কোকো চুহনা। তাও যেন তেন কিছু নয়, ক্রিকেট শেখায় মনোনিবেশ করলেন তিনি। একে তো ব্রাজিলিয়ান। তার ওপর নারী সুপার মডেল। তো হঠাৎই ক্রিকেট শেখার আগ্রহ হলো কেন তার? কারণটা আর কিছু নয়। তার বয়ফ্রেন্ড। ব্রাজিলিয়ান এই সুপার মডেলের বয়ফ্রেন্ড দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট কোচ জিও কোলোচ্চি। কেপটাউনে একটি ক্রিকেট একাডেমির ডিরেক্টর। একই সঙ্গে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট টম ওয়েসলি এবং ডার্বিশায়ারের অধিনায়ক বিলি গডলেম্যান, বেন কুরানের (টম কুরান ও স্যাম কুরানের ভাই) কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কেপ টাউনে বয়ফ্রেন্ডের বাড়িতে ২১ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে কোকো চুহনাকে। সেখানেই ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টাইনের ১৫তম দিন পার করেছেন তিনি। এরই মধ্যে ক্রিকেটের বেশ কিছু বেসিক নিয়ম-কানুন শিখে ফেলেছেন। এই যেমন কিভাবে ড্রাইভ শট খেলতে হয়, কিভাবে কাট করা যায়, পুল করা যায়- ইত্যাদি। মূলতঃ লকডাউনে থাকার সময়টাকে ভালোভাবে পার করার জন্যই মজারছলে বয়ফ্রেন্ডর বাড়িতে থেকে ক্রিকেট শেখার এই আয়োজন কোকো চুহনার। তবে, এটাও ঠিক যখন বান্ধবীকে নিজের বাড়ির সামনের খালি জায়গায় ক্রিকেট শেখাচ্ছেন, তখন পুরোপুরি পেশাদার কোচের মতই আচরণ করছেন তিনি। ভুল হলে দেখিয়ে দিচ্ছেন, বেসিক শিখিয়ে দিচ্ছেন। ডেইলি মেইলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কোকো চুহনা বলেন, আমি করি মজা। আর সে থাকে খুব সিরিয়াস। আমি তখন চিন্তা করি, হে আমার প্রিয়, তুমি আমার মধ্যে কি পেয়েছ? প্রথম দিন থেকেই প্রতিদিন ২৫ মিনিট করে বয়ফ্রেন্ডের কাছে ব্যাটিং শেখেন কোকো চুহনা। তার বয়ফ্রেন্ড জিও কোলোচ্চি কেপটাউনে ক্রিকেট একাডেমি পরিচালনার পাশাপাশি, ইংল্যান্ডের কয়েকজনের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। করোনাভাইরানের কারণে কোয়ারেন্টাইনের এই সময়টাতে ক্রিকেট শেখানোর জন্য এখন তার হাতে রয়েছে ব্রাজিলিয়ান বান্ধবী কোকো চুহনা। কোকো বলেন, এর আগে আমি ক্রিকেটই চিনতাম না। কারণ ক্রিকেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কোনো পথ আমার সামনে খোলা ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকায় আসার আগ পর্যন্ত ক্রিকেট সম্পর্কে আমি জানতামই না। আজ হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার ১৫তম দিন। ক্রিকেট শেখাটা ছিল তার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। অবশেষে তিনি এটাকে উপভোগ করতে শুরু করেছেন বলেই জানালেন। কোকো চুহনা বলেন, শুরুতে আমার মনে হতো, কেন আমি এটা করতেছি? প্রথম দিন তো ছিল আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর। খুব বাজে কেটেছিল। আমি জানতামই না কিভাবে ব্যাট ধরতে হয়। কিভাবে পজিশন নিতে হয়। কিছুই জানতাম না। আমি চিন্তা করতাম, হে সৃষ্টিকর্তা, কেন এত বিরক্তিকর একটা জিনিস আমার সঙ্গে হচ্ছে? তবে, যখন আমি বলে হিট করতে পারছিলাম, তখন থেকেই উত্তেজনা অনুভব করতে শুরু করি। এরপর আমার মধ্যে ভালোই প্রতিযোগিতাসূলভ মনোভাব তৈরি হয়ে যায়। এরপর আমি আর মনে করতে পারছি না, যে কোন দিন সর্বশেষ আমি আর ব্যাট করতে চাইনি। আমি অনুভব করতে লাগলাম একজন টেনিস খেলোয়াড়ের মত। যিনি তার রেকেট দিয়ে বলকে আঘাত করে যাচ্ছেন। জিও (কোলোচ্চি) আমাকে আমাকে সব সময় শান্ত রাখার চেষ্টা করতো এবং বলতো যে আমি এটা (ক্রিকেট খেলতে) পারবো। জিও কোলোচ্চিও খুব আনন্দিত তার ব্রাজিলিয়ান বান্ধবীকে ক্রিকেট শেখাতে পেরে। তিনি বলেন, আমি তো অনেক বড় উন্নতি দেখতে পাচ্ছি তার মধ্যে। আমার কখনোই সন্দেহ ছিল না যে, সে এটা পারবে না। তবে সে (কোকো) এটাকে আমার ধারণার চেয়েও অনেক বেশি দ্রুত শিখে নিয়েছে। সে সত্যিই দুর্দান্ত কিছু ড্রাইভ শট খেলতে পারে। এটা গ্রেট। কোনো অভিযোগ কিংবা অনুযোগ আছে কি না। জানতে চাইলে কোকো চুহনা বলেন, না নেই। মাঝে মধ্যেই সে (জিও) আমাকে বলে এই বিষয়টা পারবো কি না। আমিও প্রায় একই রকম করে সেটাকে করে ফেলি। প্রথমে সে বলে, না এটা হয়নি। আমি কিছুটা জেদি হয়ে উঠি। মাঝে মধ্যে মনে হয়, তাকে আমি মেরে ফেলি। কিন্তু পরক্ষণেই সব কিছু ঠিক হয়ে যায়। ১৪ বছর বয়স থেকেই ব্রাজিলে মডেলিং শুরু করেন কোকো। সাংবাদিকতার ওপরই গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন এবং সাও পাওলো ভিত্তিক একটি সংবাদ সংস্থায় কাজ করেন সাংবাদিক হিসেবে। বর্তমানে তার বয়স ৩১। মডেলিংয়ের পাশাপাশি ব্রাজিলে একটি ফুড কোম্পানি পরিচালনা করাছেন তিনি। জিও কোলোচ্চির সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয় ছয় বছর আগে কেপটাউনেই একটি পার্টিতে। কোকো এসেছিলেন তার বোনের কাছে। যিনি দক্ষিণ আফ্রিকাতেই তখন বসবাস করছিলেন। বোনের সঙ্গে কেপটাউনে বেড়াতে গিয়ে একটি পার্টিতে উপস্থিত হন তারা। সেখানেই জিওর সঙ্গে প্রথম পরিচয়। এরপর দেশে ফিরে আসেন তিনি। ১৮ মাস পর আবারও দক্ষিণ আফ্রিকায় যান বোনের বিয়ে উপলক্ষে। সেবার আবারও দেখা হয় জিও কোলোচ্চির সঙ্গে। এরপর থেকেই শুরু হয় দুজনের মন দেয়া নেয়া এবং একসঙ্গে থাকাও শুরু করেন তারা। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত একসঙ্গেই আছেন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট কোচ। কোয়ারেন্টাইনের এই সময়টাতে বান্ধবী কোকো চুনহার ক্রিকেট খেলার ভিডিও আবার জিও পোস্ট করেন ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানে তারা ইতিমধ্যেই সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছেন শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলা দিয়েই। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ২০ এপ্রিল
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2VFjtc5
April 20, 2020 at 02:42AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন