কলকাতা, ২৪ মে- করোনার দাপটের সঙ্গে যোগ হয়েছে সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাব। বুধবার (২০ মে) ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রকোপে ছারখার কলকাতাসহ রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা। ফলে চতুর্থদিনেও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ ও পানযোগ্য পানির ব্যবস্থা। এখনও গাছ পড়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে রয়েছে বহু এলাকায়। শহরের একাংশে দিন দিন বাড়ছে বিক্ষোভ। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমবাংলাকে স্বাভাবিক রাখতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। শনিবারই (২৩ মে) কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সেনার সাহায্য চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এতে সায়ও দিয়েছে মোদী সরকার। ফলে শনিবার রাত থেকেই পূর্ণরূপে দায়িত্ব নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা অর্থাৎ কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম সেই দায়িত্ব নিয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া উড়িষ্যার বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিল মমতা সরকার। নবীন পট্টনায়কের সরকারও পশ্চিমবঙ্গের সহযোগিতায় ৫ দলের বিপর্যয়ের টিম পাঠিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এ টিমের পারদর্শীতা হলো বিশাল আয়তনের গাছ কাটার। ঝড়ে এরআগে রাজ্যে আড়াইশো তিনশো বছরের পুরনো গাছ ভেঙে পড়েনি বা শেকড় থেকে উপড়ে যাইনি। তাই এ ধরনের গাছ কাটার পারদর্শিতা কলকাতা করপোরেশনের বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের কাছে সীমিত। কলকাতাসহ রাজ্যে এমন গাছ আছে যেগুলো একটা বা দুটো গম্বুজের ন্যায় সমান। উড়িষ্যার বিপর্যয় মোকাবিলা টিম মূলত এ ধরনের গাছগুলোকেই কাটবে। কারণ উড়িষ্যা রাজ্যে এ ধরনের সমস্যায় একাধিকবার পড়েছে। ভারতের মধ্যে উড়িষ্যার এ ধরনের গাছ কাটার অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি। আর সে কারণেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি উড়িষ্যা সরকারের সহযোগিতা চেয়েছিল মমতা সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়কেও পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (২১ মে) থেকে রাজ্যে লাগাতার কাজ করছে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল। এছাড়া বন্দর এবং বেসরকারি সংস্থাদেরও পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের সহযোগিতায় পানীয় জলের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং জল সরবরাহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিপর্যস্ত এলাকায়। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর এবং সিইএসসির (ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই) পক্ষে তাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে এ দুর্যোগ মোকাবিলায়। এমনিতে চলমান লকডাউনের কারণে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি ও বেসরকারি কর্মী সঙ্কট। এরমধ্যে আম্পানের দাপটে সেই সমস্যাই প্রকট রূপে দেখা দিয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করছে মমতার সরকার। তবে এ নিয়ে বিরোধী ও রাজ্যবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কারণ আবহাওয়া দপ্তর এবং সংবাদমাধ্যমগুলো বহুদিন আগে থেকেই প্রচার করছিল কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে এরকম বিপর্যস্ত হতে চলেছে। তা সত্ত্বেও কেন সরকারি লোকজনদের মজুদ করার তৎপরতা দেখানো হয়নি। কেন দুর্যোগের পরদিনই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হলো না। তাহলে চতুর্থদিনেও সমস্যায় পড়তে হতো না। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দয়া করে এখন কোনো রাজনীতি করবেন না। অপরদিকে, ভারতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৬৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৬৭ জন। এছাড়া পশ্চিমবাংলার নিরিখে করোনা সক্রিয় ১ হাজার ৯০৯ জন, মারা গেছেন ১৯৭ জন। করোনা ও আম্পানের দাপটে এখনও স্বাভািবক নয় কলকাতাসহ পশ্চিমবাংলা। সূত্র: বাংলানিউজ আর/০৮:১৪/২৪ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3cZmSdn
May 24, 2020 at 10:36AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন