ঢাকা, ১৭ মে - ১৫ মার্চ ২০১৯, শুক্রবার। ছুটির দিনের সকালটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য অন্য সাধারণ দিনগুলোর মতো ছিল না। সেদিন ঘুম থেকে উঠেই এক আতঙ্কের খবরে ভয় পেয়েছিল গোটা বাংলাদেশ। কয়েক মিনিট এদিক-ওদিক হলে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে কালো দিন হতে পারত সেই ১৫ মার্চ। কী হয়েছিল সেদিন? সেটি ছিল নিউজিল্যান্ড সফরের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের আগের দিন। বৃষ্টিভেজা দিনে নিজেদের অনুশীলন শেষ করে একসঙ্গেই নামাজ পড়তে গিয়েছিল বাংলাদেশ দলের সবাই। মসজিদের কাছাকাছি পৌঁছতেই দেখা যায়, সেই মসজিদেই হয়েছে ভয়াবহ এক হামলা। নিজেদের টিম বাসে বসেই সেই হামলা দেখেছিলেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমরা। উপায়ন্ত না দেখে বাস থেকে নেমে হাগলি পার্কের মধ্য দিয়ে দৌড়ে নিজেদেরকে নিরাপদ স্থানে নিয়েছিলেন তারা। পরে দলের প্রায় সবাই জানিয়েছেন, আর কয়েক মিনিট আগে সেখানে পৌঁছলে হয়তো কেউই বেঁচে থাকতেন না। আর এখানেই বড় ভূমিকা পালন করেছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সেদিন তৎকালীন টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রেস কনফারেন্স ছিল বেশ দীর্ঘ। পরে সবাই যখন নামাজের জন্য বের হতে যাচ্ছিল, তখন মুশফিকের সঙ্গে ফুটবল খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তাইজুল। তাও কোন মজার খেলা নয়। রীতিমতো সিরিয়াস হয়ে মুশফিককে হারাতে মরিয়া হয়ে পড়েন তিনি। মুশফিক জেতার কাছে চলে গেলেই তিনি কাইন্ঠামি করতে থাকেন। যা সবাইকে ৩-৪ মিনিট দেরি করায়। পরে দেখা যায় এই ৩-৪ মিনিটই বাঁচিয়ে দিয়েছেন গোটা দলের প্রাণ। উল্লেখ্য, দেশের অনেক অঞ্চলেই কাইন্ঠামি/কাইন্ডামি/কান্ডাইয়ামি শব্দটি প্রচলিত রয়েছে। এর অর্থ হলো, খেলাধুলায় জেতার জন্য বিভিন্ন ছলচাতুরীর অংশ নেয়া, নিজে হারার উপক্রম হলে খেলা বানচাল করে দেয়া বিষয়। ক্রাইস্টচার্চে তাইজুলের এই কাইন্ঠামিই বাঁচিয়েছে গোটা দলের প্রাণ। যা একবাক্যে শিকার করেছেন তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক ও সৌম্য সরকার। রোববার রাতে তামিম ইকবালে ফেসবুক লাইভে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তারা। রোববারের পর্বে শুরুতে ছিলেন শুধু তিনজন মুমিনুল হক, লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। মাঝে বিশেষ অতিথি হিসেবে তাইজুলকে ডেকে নেন তামিম। এ বাঁহাতি স্পিনার যোগ দেয়ার আগে থেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শুরু করেন মুমিনুল-সৌম্য। পরে তাইজুল যোগ দিতেই তামিম তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাইজুল যদি নিউজিল্যান্ডে না থাকত আর ঐ কাইন্ঠামিগুলা না করতো, তাইলে আমরা এখানের কেউ বেঁচে থাকতাম না। লিটন শুধু বেঁচে থাকত, ও হোটেলে চলে গেছিল। ক্রাইস্টচার্চে যে হামলাটা হয়েছিল, আমরা যদি ১-২ মিনিটও আগে পৌঁছতাম তাহলে হয়তো আমরাও সেই অ্যাটাকের মধ্যে পড়ে যেতাম। কিন্তু সেই হামলার সঙ্গে তাইজুলের সম্পর্ক কী? তার কারণেই বা কীভাবে বেঁচে ফিরলেন সবাই? এ কৌতূহলও মিটিয়েছেন তামিম। তিনি বলেন, তাইজুলের বিশেষত্ব হলো, ও কখনও হার মানতে চায় না। তো ওর সঙ্গে মুশফিকের সিঙ্গেল ফুটবল ম্যাচ হচ্ছিল। ওখানে আমাদের ৩-৪ মিনিট দেরি হয়ে গেছিল। তখন তাইজুলকে উদ্দেশ্য করে তামিম বলেন, তুই যদি না খেলতি তাইজুল, তাহলে আমরা কেউ বেঁচে থাকতাম না। শুধরে দেন মুমিনুল। বলেন, না না ভাই! অয় (তাইজুল) যদি তখন কাইন্ঠামিটা না করতো...কাইন্ঠামি করার কারণেই ফুটবল ম্যাচটা বড় হইছে। এ বিষয়ে তাইজুল মেনে নেন, তিনি সবসময়ই কাইন্ঠামি করে। তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করে তিনি বলেন, সবার আগে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে আমরা ঐদিন বেঁচে ফিরছি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ বাঁচাইছে। আর আপনারা তো জানেনই, কাইন্ঠামি তো আমার রক্তেই আছে ভাই। যেমনেই হোক জিততে হবে। সূত্র : জাগো নিউজ এন এইচ, ১৭ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3cHspVC
May 17, 2020 at 05:05AM
17 May 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top