নিউইয়র্ক, ১৮ জুলাই- পাঠাওয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহকে (৩৩) হত্যার অভিযোগে তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টেরেস ডেভোন হাসপিলকে গ্রেফতার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। পুলিশের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় জানায়, ২১ বছর বয়সী হাসপিলের কাছ থেকে একটি অবশকারী যন্ত্র, ছুরি ও বৈদ্যুতিক করাত জব্দ করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সন্দেহভাজন হত্যাকারী তার সাবেক বসের ৯০ হাজার ডলার আত্মসাতের ঘটনা থেকে বাঁচতেই তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ফাহিমকে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে তারই অভিজাত ফ্লাটে হত্যা করা হয়। প্রথমে চেতনানাশক কিছু দিয়ে ফাহিমকে অবশ করা হয়। এরপর তার বুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে তার দেহ কেটে টুকরো টুকরো করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাসপিলের বিরুদ্ধেই ফাহিমকে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে শনিবার সকালে ম্যানহাটনের ক্রিমিনাল কোর্টে হাজির করার কথা। একজন আইনজীবী ভিডিওর মাধ্যমে তার পক্ষে লড়বেন। পুলিশ জানায়, খুন হওয়ার দুদিন পর নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিমের লাশ উদ্ধার করে তার এক স্বজন। ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যায়, সোমবার বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে আট তলায় নিজের ফ্লাটে যাচ্ছেন ফাহিম, এ সময় তার পেছনে পেছনে যাচ্ছিলেন অদ্ভূত পোশাক পরিহিত হাসপিল। কালো রঙের স্যুট, সাদা শার্ট, টাই ও কালো মাস্ক পরিহিত হাসপিল ক্যামেরার চোখ থেকে নিজেকে আড়াল করতে বিশেষ ভ্যাকুয়াম ক্লিনারও ব্যবহার করেন। হাসপিলের বিরুদ্ধে হত্যার সুনির্দিষ্ট কিছু প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। তিনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে হোম ডিপোট নামের এক দোকান থেকে করাতটি কিনেছেন। যাতায়াতের বিলও দিয়েছেন ফাহিমের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে। ভিডিও ফুটজ থেকেও তাকে করাতটি কিনতে দেখা গেছে। এছাড়া মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধারকৃত অবশকারী যন্ত্রের গায়ে একটি সিরিয়াল নম্বর ছিল, যা পুলিশের কাজ সহজ করে দেয়। পুলিশ জানায়, সোমবার হত্যার পর মঙ্গলবার অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন হাসপিল। তার উদ্দেশ্য ছিল, টুকটো টুকরো করে ফেলা শরীরটা পলিথিনের ব্যাগে মুড়িয়ে সরিয়ে ফেলা এবং অন্যান্য আলামত নষ্ট করা। কিন্তু ওই সময় ফাহিমের এক স্বজন বাসায় এসে তার লাশ দেখতে পান, যদিও তা ছিল হাত, পা ও মস্তকবিহীন অবস্থায় পলিথিনে মোড়ানো। তার উপস্থিতি টের পেয়ে ফ্লাটের পেছনের দরজা ও সিঁড়ি দিয়ে পালিয়ে যায় হাসপিল। সূত্র জানায়, খুনি তার কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যায়। সূত্র জানায়, ফাহিমের ব্যবসা ও আর্থিক বিষয়ের দেখভালের দায়িত্ব ছিল হাসপিলের। তবে ৯০ হাজার ডলার আত্মসাতের কারণে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন ফাহিম এবং নিউইয়র্ক পুলিশকে না জানিয়ে বরং হাসপিলকে কিস্তিতে অর্থ ফেরত দেয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। বসের এই উদারতার সুযোগ নিয়ে তাকে খুন করলেন হাপসিল। প্রতিবেশী এক বৃদ্ধ নারী ফাহিমকে নিয়ে বলেন, যতদূর জানি, সে ছিল একজন ভালো মানুষ। তিনদিনের অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে ম্যানহাটনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে হাসপিলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার অবশ্য অতীতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড নেই। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা ফাহিম সহযোগীদের নিয়ে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি নাইজেরিয়া, কলম্বিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় নিজের ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছিলেন। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, ডেইলি নিউজ এম এন / ১৮ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2CIMVbs
July 18, 2020 at 04:52PM
18 Jul 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top