কলকাতা, ৭ জুলাই- ভারতের শিলিগুঁড়িতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়েই দুই সন্তান নিয়ে রেললাইনে মারণঝাঁপ দিলেন স্ত্রী। মারাত্মকভাবে আহত ওই নারী ও তার দুই ও চার বছরের দুই সন্তানকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এ ঘটনার হতবাক শিলিগুঁড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাসারি এলাকার বাসিন্দারা। ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মৃত ৩৮ বছর বয়সের ওই তরুণ ভারতের খড়িবাড়ির রামজনম নামক একটি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। লকডাউন চলায় স্কুল বন্ধ। তাই এখন বাড়িতেই ছিলেন। শিলিগুঁড়ি ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের চম্পাসারি এলাকায় বাড়িতে ছোট দুই শিশুকন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক দিন থেকেই জ্বর, সর্দি, কাশিসহ করোনা উপসর্গে ভুগছিলেন ওই শিক্ষক। ৩ জুলাই শিলিগুঁড়ি জেলা হাসপাতালে দেখাতে গেলে সেখানেই তাঁকে ভর্তি রাখা হয়। করোনা পজিটিভ রিপোর্টও আসে। তার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। ডাক্তাররা জানান, পরিস্থিতি খারাপ বুঝতে পেরেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। তাঁকে বাঁচানোর সব চেষ্টা হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করেই সোমবার গভীর রাতে মারা যান তিনি। এদিকে মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবর পান। আর তাতেই ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। প্রতিবেশীরা জানান, সকালে ওই শিক্ষকের মৃত্যুসংবাদ আসতেই দুই শিশুকে নিয়ে পাগলের মতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তাঁর স্ত্রী। বাধা দিয়েও আটকানো যায়নি তাঁকে। এর পরেই একেবারে এনজেপিতে গিয়ে হাজির হন। সেখানেই ফুট ওভারব্রিজ থেকে দুই কন্যাসন্তানকে বুকে জড়িয়ে ঝাঁপ দেন রেললাইনে। দেখতে পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। ছুটে আসে রেল পুলিশ। মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভর্তি করা হয় মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে। পরে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয় তাদের। স্বামীর মৃত্যুর শোক সইতে পারেননি ওই নারী। তার জেরেই এমন কাণ্ড বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। তবে পুরো বিষয়টা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শিলিগুঁড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি (ওয়েস্ট) কুনওয়ার ভূষণ সিং জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। মা ও দুই সন্তানের আঘাতই খুব গুরুতর। তাদের সুস্থ করে তোলার জন্য সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছেন ডাক্তাররা। সূত্র: দ্য ওয়াল আর/০৮:১৪/৭ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2ADDGsv
July 07, 2020 at 07:15PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top