আমাকে সবার চেনা, সবাই এও জানে, বার্সেলোনায় কোন সংকট নেই। চুক্তিপত্রে যাই লেখা থাক, ওটা কেবল একটা কাগজে সই করার অপেক্ষা। ওই বিবেচনায় নতুন চুক্তিতে সই করা কোন সমস্যাই না। নয় মাস আগে কথাটা বলেছিলেন লিওনেল মেসি। প্যারিসে ঘটা করেই বলেছিলেন। রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডিঅর নেওয়ার সময়। দৃঢ়তা নিয়ে ওই মন্তব্য করার নয় মাসের মধ্যে গনেশ উল্টে গেছে! মেসি বার্সাকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ক্লাব ছাড়তে চান। বার্সার সঙ্গে তার এক মৌসুম চুক্তি আছে। রিলিজ ক্লজ ৭০০ মিলিয়ন ইউরো। অথচ মেসি বলছেন, তাকে ফ্রিতে ছেড়ে দেওয়া হোক। বার্সার সঙ্গে দুই দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান তিনি। এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মেসি। কী এমন ঘটল? বিশেষ করে মেসি বার্সা কোচ রোলান্ড কোম্যানের সঙ্গে দেখা করার পরেই কেন চটলেন। তার বার্সা ছাড়ার পেছনে কোম্যান একটা কারণ। সব মিলিয়ে ছয়টি কারণে বার্সা ছাড়তে চান মেসি। বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতি: বার্সেলোনার বোর্ড পরিচালক জোয়ান লাপোর্টার সঙ্গে মেসির সম্পর্ক ছিল ভালো। তিনি দায়িত্ব ছাড়ায় নাখোস ছিলেন মেসি। পরবর্তীতে এরিক আবিদালসহ অন্য বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে মেসির সম্পর্ক বলার মতো ভালো ছিল না। এর মধ্যে এরিক আবিদালের সঙ্গে মেসিদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যেও এসেছিল। আবিদাল বলেছিলেন, দলের কেউ কেউ পরিশ্রম করে খেলে না। ইঙ্গিত ছিল মেসি-সুয়ারেজের দিকে। ভালো কোচ না পাওয়া: পেপ গার্দিওয়ালা বার্সা ছাড়ার পরে মন মতো কেবল একজন কোচ পেয়েছেন মেসিরা। তিনি লুইস এনরিকে। বার্সার ডাগআউটে তিনি ছিলেন তিন মৌসুম। বার্সাকে সর্বশেষ তিনিই চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন। এছাড়া টিটো ভিলানোভা, জেরার্ড মার্টিনো, এরনেস্তো ভালভার্দে, কিকে সেতিয়েন কারও ওপরই খুশি ছিলেন না মেসিরা। আরও পড়ুন: মেসির বাবাম্যানচেস্টারসিটিতে প্রেসিডেন্ট মারিও বার্তামেউয়ের ক্ষমতার দাপট: বার্সেলোনায় দাপট দেখিয়ে চলেন মারিও বার্তামেউ। বোর্ড পরিচালকদের হাত করে নিজের পছন্দ মতো কোচ নিয়োগ করে মেসিদের ওপর কর্তৃত্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি। এমনকি মেসি দলের অধিনায়ক হওয়া স্বত্ত্বেও ড্রেসিংরুমে অবাধে প্রবেশ করেন এই কর্মকর্তা। নেইমারকে ধরে রাখতে না পারা, কুতিনহোকে ধারে ছেড়ে দেওয়া, আর্থার মেলোকে ছেড়ে দেওয়া। আবার গড়পড়তা ফুটবলার যেমন স্ট্রাইকার ব্রাথওয়েটকে সাইন করানো, পিয়ানিচকে দলে নেওয়া সবই চলে তার ইশারায়। করোনাকালে মেসিদের বেতন কাটা: করোনাকালে অধিকাংশ ক্লাবই ফুটবলারদের বেতন কেটেছে। তবে বার্সা কেটেছে বেশি। তাও আবার ফুটবলারদের অমতে। মেসিরা এটা নিয়ে বার্সার প্রতি ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন। মেসি তো বলেই দিয়েছিলেন, খুব বিস্ময়কর মনে হয়েছে। ক্লাবের অনেকে আমাদের বেতন কম দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। আমাদের করণীয় সম্পর্কে আমরা পরিষ্কার। বার্সার হার এবং বিবর্ণ ভবিষ্যত: বার্সেলোনা সবসময় একটা প্রজেক্ট ধরে এগোয়। দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা মাথায় রাখে। কিন্তু সর্বশেষ কয়েক বছরে সেটা চোখে পড়ার মতো নয়। বার্সার একাডেমি থেকে উঠে আসছে না খুব বেশি ফুটবলার। উঠিয়ে আনা হচ্ছে না। তরুণ প্রতিভা সাইনিং কম। মেসি তাই বার্সার সামনে ভালো দিন দেখেন না। কথাটা তিনি লিগ শিরোপা হার ও চ্যাম্পিয়নস লিগে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পরে রোনাল্ড কোম্যানকে জানিয়ে দিয়েছেন। মেসিকে ফুসিয়ে দিয়েছেন কোম্যান: বার্সার কোচ হয়ে কোম্যান মেসির সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছেন। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, মেসিকে ঘিরেই তার দল গড়ে উঠবে। কিন্তু মেসির সঙ্গে আলাপে তিনি বলেছেন, তুমি আমার দলে আর বিশেষ সুবিধা পাবে না। অন্যদের মতো একজন ফুটবলার হিসেবেই তোমাকে খেলতে হবে। যা করার করতে হবে। কোচের ওই কথায় ফুঁসেছেন মেসি। কিছু সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, কোচ রোলান্ড কোম্যানকে ওভাবেই মেসির সঙ্গে কথা বলার নির্দেশনা দিয়েছিলেন বার্তামেউ। সেটাই কাল হয়েছে বার্সার জন্য। সূত্র : সমকাল এন এইচ, ২৭ আগস্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2Ez3acr
August 27, 2020 at 02:10PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top