কলকাতা, ৩১ আগস্ট- রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিল ভিন্ন। সম্পূর্ণ দুই মেরুর দুটো দলের অন্যতম মুখ ছিলেন তাঁরা। তবু যখনই দেখা হত আন্তরিকতা ভরা থাকত মুহুর্তরা। একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরেকজন সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল দাদা বোনের। যে কোনও জটিল পরিস্থিতিতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ পেয়েছেন মমতা, নিজেও বেশ কয়েকবার উল্লেখ করেছেন সেকথা। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে যেন অভিভাবক হারালেন মুখ্যমন্ত্রী। ট্যুইট করে নিজের শোকবার্তা দিলেও, তাতে যেন স্বজন হারানোর কষ্ট ছিল। এদিন নিজের ট্যুইট বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ভারত রত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায় আর নেই। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে এই বার্তা দিতে হচ্ছে আমাকে। একটা যুগের শেষ হল। দশকের পর দশক ধরে তিনি অভিভাবক হিসেবে কাজ করেছেন। ভারতীয় রাজনীতিতে এক মহীরূহ ছিলেন তিনি। আমার প্রথম সাংসদ হওয়ার সময়ে একজন বর্ষীয়ান ক্যাবিনেট কলিগ ছিলেন, যখন মুখ্যমন্ত্রী হলাম, তখন তিনি রাষ্ট্রপতি। কত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে তাঁকে ঘিরে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন দিল্লি সফরে যাব, অথচ প্রণবদার সঙ্গে দেখা হবে না আর, এটা ভাবতে পারা যায় না। রাজনীতি থেকে অর্থনীতি- সব বিষয়েই গভীর জ্ঞান ছিল তাঁর। তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ আমি। সারাজীবন তাঁর অভাব অনুভূত হবে। তাঁর পুত্র অভিজিত ও কন্যা শর্মিষ্ঠার প্রতি রইল আন্তরিক সমবেদনা। উল্লেখ্য গত কয়েকদিন কোমাচ্ছন্ন থাকার পর অবশেষে লড়াই শেষ। সোমবার সকাল থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। সোমবার তাঁর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ট্যুইট করে বাবার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, আরআর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সবরকমের চেষ্টা সত্বেও চলে গেলেন বাবা। এদিন হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১১ ডিসেম্বর বীরভূম জেলায় কীর্ণাহার শহরের কাছে অবস্থিত মিরাটি গ্রামে। বাবা স্বাধীনতা সংগ্রামী কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায় ছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের একজন সক্রিয় সদস্য। মায়ের নাম রাজলক্ষ্মী দেবী। আরও পড়ুন :মুকুল রায় ফের তৃণমূলে ফেরার গুঞ্জন ১৯৬৯ সালের রাজ্যসভার সদস্য হন তিনি। ১৯৭৩ সালে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মন্ত্রিসভায় স্থান পান। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ভারতের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৪ সালে ইউরোমানি পত্রিকার সমীক্ষায় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পাঁচ অর্থমন্ত্রীর শিরোপা পান। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর কিছুদিন পরে কংগ্রেস ত্যাগ করে রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস নামে নতুন দল গঠন করেছিলেন। যদিও পরবর্তীকালে অবশ্য তিনি কংগ্রেসে ফেরেন। অর্থমন্ত্রী ছাড়াও প্রতিরক্ষা এবং বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ২৫ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিনি ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। সূত্র: কলকাতা২৪ এমএ/ ৩১ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2QCCgmr
August 31, 2020 at 05:17PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন