স্টাফ রিপোর্টার :: ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতি এবং প্রতারণার মাধ্যমে সিলেটে তারাপুর চা-বাগানের হাজার কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের দুই মামলায় শিল্পপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ মনির হোসেন পাটোয়ারীর আদালতে আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদনের শুনানির কথা থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শুনানি হয়। আসামি পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এরশাদুল হক ও অ্যাডভোকেট মঈনুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ তাজউদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে জেরায় অংশ নেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এপিপি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান ও অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন। আসামি পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ তাজউদ্দিন জানান, জেলা দায়রা জজ আদালতে রাগীব আলীর দুটি মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের সময় চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে। গত ৪ ডিসম্বের ভূমি ন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতি মামলায় সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাঈদুজ্জামান হিরোর আদালতে শিল্পপতি রাগীব আলী ও ছেলে আবদুল হাইয়ের ৭ সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করা হয়। এর আগে আসামিরা পলাতক থাকা অবস্থায় মোট ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল।এছাড়াও ওই দিন তারাপুর চা-বাগানের হাজার কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের মামলায় পিতাপুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। প্রথম দফায় পুলিশ তদন্ত করে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নিষ্পত্তি করে। গত ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান পুনরুদ্ধারের রায় দেন। উচ্চ আদালতের ওই রায়ে ১৭টি নির্দেশনার মধ্যে এ মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুনরায় তদন্ত করে রাগীব আলী ও ছেলে আবদুল হাইকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। গত ১০ আগস্ট দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ওই দিনই রাগীব আলী ও আবদুল হাই পালিয়ে ভারতে চলে যান। প্রায় তিন মাস পর গত ১৩ নভেম্বর আবদুল হাই ভারতের করিমগঞ্জ থেকে সিলেটের জকিগঞ্জ হয়ে ফিরলে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রাতে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়। এরপর গত ২৪ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জে সে দেশের ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে আটক হন রাগীব আলী। পরে ওই দিন দুপুরে বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় রাগীব আলীকে। ওই দিন বিকেলে আদালতে আনা হয় তাকে। সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2gUym7B
December 07, 2016 at 10:54PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন