কুমিল্লার বার্তা ডেস্ক ● তিতাসে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (৪০ দিনের) প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ নীতিমালা লংঘন করে শ্রমিকের পরিবর্তে ভেকো দিয়ে বাস্তবায়ন করে প্রকল্পের টাকা হরিলুটের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে উপজেলার সর্বত্র সমালোচনার ঝড় বইছে।
ভেকো দিয়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হলেও কিভাবে শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাবের টাকা উত্তোলন করা হবে তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে অতিদরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৩৪টি প্রকল্পের জন্য ১৩৪৬ জন শ্রমিকের বিপরীতে দৈনিক ২০০ টাকা হারে ১ কোট ৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে ওই প্রকল্পসমূহের কাজ শুরু হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীতিমালা অনুযায়ী কর্মক্ষম দুস্থ পরিবারসমূহের জন্য স্বল্পমেয়াদি কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন ও দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ মেরামত ও সংস্কারে স্থানীয় ১৮-৬০ বছর বয়সী কর্মক্ষম অতিদরিদ্র লোকজনদের সম্পৃক্ত করার কথা বলা হলেও অধিকাংশ প্রকল্পে এর লেশমাত্র নেই।
উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের ‘কেশবপুর এলজিইডি সড়কের ফিরোজ মিয়ার বাড়ি হতে সাগরফেনা হাকিমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ’ প্রকল্পে প্রতিদিন ১২৫ জন শ্রমিকের বিপরীত ১০ লাখ টাকা, মজিদপুর ইউনিয়নের ‘শাহপুর এলজিইডি রাস্তার করিম খালী ব্রিজ হইতে মান্নান মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ’ প্রকল্পে প্রতিদিন ১০৮ জন শ্রমিকের বিপরীত ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, কড়িকান্দি ইউনিয়নের ‘বন্দরামপুর হারুন অর রশিদের বাড়ি হইতে ইউসুফপুর কেয়ার বাড়ি পর্যন্ত নতুন রাস্তা নির্মাণ’ প্রকল্পে ৫৫ জন শ্রমিকের বিপরীত ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও ভেকো দিয়েই চলছে বাস্তবায়নের কাজ।
এছাড়াও প্রতিটি প্রকল্পে নির্দিষ্ট শ্রমিক সংখ্যা উল্লেখ্য থাকলেও প্রকল্পে গিয়ে সামঞ্জস্য পাওয়া যায়নি তালিকা ও শ্রমিকের। নীতিমালায় সি এবং ডি ক্যাটাগরিতে উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ৫টি প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা থাকলেও একাধিক ইউনিয়নে নীতিমালা লংঘন করে প্রকল্প দেয়া হয়েছে। ভেকো দিয়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হলেও কিভাবে শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাবের টাকা উত্তোলন করা হবে তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকল্পের নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে ভেকো দিয়ে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। অথচ প্রতিটি প্রকল্পের বিপরীতে নির্দিষ্ট শ্রমিকসহ বাস্তবায়ন কমিটির তালিকা, শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে জমা দেয়া হয়েছে এবং অফিস থেকে প্রতিটি শ্রমিকের অনুকূলে জব কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে এলাকার সুশীল সমাজ আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমান সরকার দারিদ্র্যকে প্রাধান্য দিয়ে ওই কর্মসূচি চালু করলেও মাঠপর্যায়ে অনিয়মের কারণে সরকারের উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ প্রকল্প অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকও ব্যয় হয় না ভেকো দিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করলে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নোমান জানান, নীতিমালা অনুসরণ করেই ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু সমস্যা রয়েছে তা অস্বীকার করা যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মকিমা বেগম জানান, নীতিমালার বাইরে কাজ হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
from Comillar Barta™ http://ift.tt/2kkgLJh
February 14, 2017 at 12:05AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন