আগরতলা, ০৮ এপ্রিল- ভারত ও বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্ববোধের সম্পর্ক নষ্ট করতে উভয় দেশের মধ্যে অনেকগুলো অশুভ শক্তি কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি বলেছেন, আমরা লক্ষ্য করছি, দুই দেশের মানুষের মধ্যে সুস্থ চিন্তা-চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ ও দেশাত্ববোধ মিলিয়ে আমাদের যে ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনা, তাকে আঘাত ও খণ্ড-বিখণ্ড করার জন্য বাংলাদেশ ও আমাদের দেশের ভেতরে প্রয়াস চলছে।এর পেছনে অনেকগুলো হাত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার সেক্রেটারিয়েট ভবনে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় মানিক সরকার এ কথা বলেন। ভারত-বাংলাদেশ বর্তমান সম্পর্ককে মধুর ও দৃঢ় হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এ সম্পর্ক আরও সক্রিয় ও দীর্ঘস্থায়ী করতে রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। তবে সে জন্য দুই রাষ্ট্রের নাগরিকরাই বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। উভয় রাষ্ট্রের নাগরিকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই অশুভ প্রয়াসকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে। আমরা শুধু দেখলাম, কিন্তু চুপ থাকলাম। নীরব থাকলে হবে না, এ যদি হয় আমাদের অবস্থা, তবে সেজন্য চরম মূল্য দিতে হবে। অশুভ প্রয়াসকে প্রতিহত করার জন্য শুভ শক্তির সমাবেশ ঘটিয়ে সাহসের সঙ্গে এগোতে হবে। দুই রাষ্ট্রের জনগণ এ ভূমিকা পালন না করলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা সম্ভব হবে না। প্রতিবেশী ভালো না থাকলে নিজে ভালো থাকা যায় না- এমন মন্তব্য করে মানিক সরকার বলেন, বাংলাদেশ ভালো থাকলে ভারতের জন্য ভালো এবং ভারত ভালো থাকলে তা বাংলাদেশের জন্য ভালো। আমাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু পরশ্রীকাতরতা থাকবে না। এটা ভাবনায় রেখে আমাদের এগোতে হবে। একটি চক্র দুই দেশের নতুন প্রজন্মকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে তাদের বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করার চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে প্রবীণ এই কমিউনিস্ট নেতা বলেন, নতুন প্রজন্ম বিকাশমান শক্তি। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চক্র তাদের স্বার্থ বাস্তবায়নের জন্য এ শক্তিকে টাগের্ট করে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে। নতুন প্রজন্মের প্রতি আরও বেশি খেয়াল রাখারও আহ্বান জানান মানিক সরকার। কারণ তাদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রীকতা ও স্বার্থপরতার যোগগুলো যদি বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তাদের দেশাত্ববোধ ও বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধের যে চেতনা, প্রতিবেশী হিসেবে প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্কের যে ভাবনা- সেগুলোকে পেছন দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে। তা হলে অশুভ শক্তির সুবিধা হবে। এ পরিস্থিতিতে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে সুনির্দষ্টভাবে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। রক্ত দিয়ে হলেও এটা করতে হবে। জীবনতো একটাই, এর দৈর্ঘ্যও খুব বেশি নয়। আমাদের হাতে কাজের সময় খুবই কম। আলোচনায় দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং রেল যোগাযোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন মানিক সরকার। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরোয়ার, আগরতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সত্যব্রত চক্রবর্ত্তী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাশেদ রউফ, মিডিয়া পরামর্শক এজাজ মাহমুদ, সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক কামরুল হাসান বাদল, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রামের ডায়মন্ড সিমেট লিমিটেডের পরিচালক আজিম আলী ও হাকিম আলী আলোচনায় অংশ নেন। আর/১২:১৪/০৮ এপ্রিল



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2oaVlyr
April 08, 2017 at 06:43AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top