বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথে গ্রামের মানুষের কাছে মাছ বাজারের একটি দোকান বিক্রি না করায় উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের জমশেরপুর (আমতৈল) গ্রামে একটি পরিবারকে ২০ দিন ধরে ‘একঘরে’ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভলন্ডিয়ার নিয়োগ করে ‘একঘরে’ করা পরিবারের সদস্যদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা আসতেও বাঁধা দিচ্ছেন। অসুস্থ রোগী বহনে সেই পরিবারের (একঘরে) সদস্যরা পাচ্ছেন না কোন যানবাহন।
এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রামপাশা ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জমশেরপুর গ্রামের সামছুল হক’র পুত্র শামিম আহমদ। অভিযোগে ‘রামপাশা ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইমাম উদ্দিন এবং উপজেলা পরিষদের অগ্নিসংযোগ-লুটপাঠ মামলার আসামী ও সরকারী ভূমি আতœসাৎকারী বিএনপি নেতা নেছার আহমদ’র বিরুদ্ধে বাদির ‘বাড়ি দখলের হুমকি, ব্যবসায় বাঁধা প্রদান, অপদস্ত করা’সহ নানান অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউএনও অভিযোগটি থানার ওসি বরাবরে ফরোয়ার্ড করেছেন।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি লোকমারফতে ‘ইমাম উদ্দিন ও নেছার আহমদ’ পাঠানো খবর পেয়ে অভিযোগকারী বৈরাগী বাজার ছনতরে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত হন। সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন ইমাম উদ্দিন মেম্বার। ইমাম উদ্দিন তখন তাকে প্রশ্ন করেন পিতার পরিবর্তে কেন অভিযোগকারী এসেছে। বিশ্বনাথ পুরাণ বাজারের দোকান তাদের (ইমাম-নেছার) কাছে বিক্রি না করায় অভিযোগকারী ও তার পিতা’সহ পরিবারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেন। এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সভাপতির নির্দেশে অভিযোগকারীকে অপদস্ত করেন নেছার আহমদের সন্ত্রাসী বাহিনী। ২০ দিনের মধ্যে বিক্রি করা দোকান তাদের (ইমাম-নেছার) নামে লিখে না দিলে তারা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অভিযোগকারীর বাড়ি দখল করে নেবে ও গ্রাম থেকে অভিযোগকারীর পরিবারকে উচ্ছেদ করবেন বলে হুমকি দেন।
অভিযোগে আরোও উল্লেখ করা হয়, সেই সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাদির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ও বৈরাগী বাজারের কোন ব্যবসায়ী যাতে বাদির পরিবারের কাছে কিছু বিক্রি না করে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইমাম-নেছার গংদের নির্দেশে বাদির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘রাইম ভেরাইটিজ ষ্টোর (মুরগীর দোকান)’র সামনে ভলন্ডিয়ার বসিয়ে ক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিক্রি না হওয়ার কারণে প্রতি ১৫/২০টি করে মুরগীর মৃত্যু হচ্ছে। বাদির অসুস্থ মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে দিতে চাইলে তাকে বহনের জন্য স্থানীয় সিএনজি স্ট্যান্ডে যান একটি সিএনজি আনদে। কিন্তু ইমাম-নেছার গংদের নির্দেশে ও ভয়ে সিএনজি স্ট্যান্ডের কোন চালকই তাদেরকে বহন করতে রাজি হননি।
আইনের সঠিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে ‘বাদি ও তার পরিবার’র সদস্যদেরকে ‘ইমাম-নেছার গংদের’ অমানবিক সাজা ও মধ্যযুগীয় কায়দার ভলন্ডিয়ার প্রতার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার’সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন অভিযোগকারী শামিম আহমদ।
নিজেদের উপর উত্তাপিত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত রামপাশা ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইমাম উদ্দিন ও বিএনপি নেতা নেছার আহমদ।
এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগটি বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবরে ফরোয়ার্ড করা হয়েছে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2o6w9Yy
April 07, 2017 at 11:43PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন