দুই ছাত্রী গণধর্ষনে পলাতক অভিযুক্তরা

fঢাকা::রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে গণধর্ষনের ঘটনায় অভিযুক্তদের আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে তাদের অবস্থান শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, বনানীতে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। আসামিরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে, ছাড় দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ধর্ষণে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী পরিবারের। তাদের প্রভাবে মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত হতে পারে বলে অভিযোগ ভিকটিম পরিবারে- এমন অভিযোগে গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মামলা হয়েছে। অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত করছে। থানা পুলিশ তাদের মতো করে তদন্ত করবে। ডিবি পুলিশও আইন অনুযায়ী আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে।

আসামিদের কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে কি না জানতে চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, অপরাধী যত বড় প্রভাবশালী হোক না কেন ছাড় পাবে না। এখন পর্যন্ত কেউ পালিয়ে গেছে কি না সে রকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। কেউ পালিয়ে যেতে পারবে না। তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৪০ দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

তবে এ ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের বাবা ও আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের দাবি, তার ছেলের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এমন কাজ করেছেন তার সাবেক স্ত্রী।

দিলদার আহমেদ বলেন, ‘আমার ছেলে (সাফাত) একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপিকাকে বিয়ে করেছিল। তবে আমি সেই বিয়ে মেনে নেইনি। বিয়ের পর সেই মেয়ের নানা ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য দেখে আমার ছেলে তাকে তালাক দেয়। সাফাতের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তাদের দিয়ে এমনটি করিয়েছে। কারণ, মামলা করার জন্য ওই মেয়েই দুই তরুণীকে থানায় নিয়ে যায়।’

সেদিন রাতে রেইন ট্রি হোটেলে সাফাতের ধর্ষণের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেই রাতে যদি কিছু হয়ে থাকে সেটা আপসেও হতে পারে। ধর্ষণ হলে নিশ্চয়ই ৪০ দিন মামলা করার জন্য অপেক্ষা করত না তারা। পুলিশের রিপোর্ট পেলে দুই তরুণীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা হবে বলেও হুমকি দেন দিলদার আহমেদ।

অন্যদিকে মামলা দায়েরের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ওই দুই তরুণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। তিনি জানান, সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের আলামত মুছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। যেহেতু তারা বলছে ধর্ষণের ঘটনাটি প্রায় দেড় মাস আগের, সেজন্য আদৌ কোনো আলামত পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

সোহেল মাহমুদ ছাড়া কমিটির বাকি সদস্যরা হচ্ছেন কবির সোহেল, মমতাজ আরা, নিলুফার ইয়াসমিন ও কবিতা সাহা। বোর্ডের অধীনে দুই তরুনির মাইক্রোবায়োলজি, রেডিওলজি ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।

পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানান বোর্ডপ্রধান।

আজ পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন বলেন, ‘আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান চলমান। তবে এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’



from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2qgXIC5

May 08, 2017 at 05:20PM
08 May 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top