ঢাকা, ২৭ জুন- জনপ্রিয় মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের মনপুরা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর অমিতাভ রেজার আয়নাবাজি ছবিতে তার দুর্দান্ত অভিনয় মুগ্ধ করে অগণিত দর্শককে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আবারো আসছেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দেবী র বিখ্যাত চরিত্র মিসির আলী হয়ে। এই অভিনেতার সাম্প্রতিক ব্যস্ততা এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিছু কথামালা। কেমন আছেন? হুম ...ভালো আছি। কয়েকদিন আগে আপনার মাকে সম্মাননা দেয়া হলো। কেমন লাগছে? এটা একটা অন্যরকম ভালো লাগা; অনুভূতি অন্যরকম। জীবনে আমি অনেক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। একাধিকবার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছি। কিন্তু সেদিনের সেই অনুভূতি আমার কাছে সব থেকে আলাদা। আমার জন্য আমার মাকে পুরস্কৃত করা হলো। আমার মায়ের হাসিমুখ, সম্মান আমার কাছে সবচে বড় প্রাপ্তি। সন্তান হিসেবে এই মধুর অনুভূতি আসলে বলে বোঝানো যাবে না। কলকাতায় সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেলেন... কলকাতায় ১৬তম টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ডে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছি। ২০১৬ সালে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে অভিনয়ের জন্য এ পুরস্কার দেয়া হলো। ৪ জুন কলকাতার নজরুল মঞ্চে এই পুরস্কার দেয়া হয়। ঈদের কাজ নিয়ে ব্যস্ততা কেমন ছিলো? ঈদের কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ততা ছিলো। মাসুদ সেজান এবং অনিমেষ আইচের পরিচালনায় ২ টি সিরিয়ালের কাজ করছি। তবে এখনও সিরিয়ালের নাম ঠিক হয়নি। অন্যদিকে বৃন্দাবন দাসের ২ টি সিরিয়ালে কাজ করেছি। এই ৪ টি সিরিয়ালের প্রচার শুরু ঈদের পর। এর আগে তো ফিল্মের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কিছুদিন আগে করেছি অনিমেষ আইচের বিষফুল নাটক। এটি সামনেই প্রচারিত হবে। ঈদের জন্য ৪ টি ৬ খন্ডের নাটকে কাজ নিয়ে ব্যস্ততা ছিল। এগুলোর নির্মাতারা হলেন সাগর জাহান, আবু হায়াত মাহমুদ, মাসুদ সেজান এবং মোস্তফা কামাল রাজ। এছাড়াও আশিকের নির্দেশনায় ৩ টি ঈদের নাটকে কাজ করেছি। প্রথম দুটির রচনায় বৃন্দাবন দাস এবং অন্যটি মেসবাহ উদ্দিন সুমনের। আয়নাবাজি র পর সামনে ফিল্ম নিয়ে ব্যস্ততা... আয়নাবাজির পর আরেকটা ফিল্ম করেছি। দেবী নামের এই ছবিতে আমি প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত চরিত্র মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছি। বছরের শেষে এটি রিলিজ হবার কথা আছে। ফিল্মে কাজ করার ক্ষেত্রে আপনি তো অনেক চুজি ... আসলে ভালো গল্প আর নির্মাতা পেলে আমি কাজ করি। আর এক্ষেত্রে ১০০ ভাগ মিলতে হবে। একটা ভালো ফিল্ম করার ক্ষেত্রে ৬ মাসও লাগতে পারে আবার ২-৩ বছর। বিভিন্ন সময় আমার কাছে ফিল্ম করার প্রচুর অফার আসে। কিছুদিন আগেই ইন্ডিয়া থেকে ৩ টি ফিল্ম করার অফার এসেছে। এখনও আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমি ফিল্মের ক্ষেত্রে একচুলও ছাড় দিতে রাজি নই। চরিত্র পছন্দ হলে কাজ করি। আবার আমি সবার সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করি না। আর সেটে স্ক্রিপ্ট না থাকলে কাজ করতে চাই না; মাঝে মাঝে পরিস্থিতির কারণে করতে হয়। আমার মনের মতো এবং গল্প, নির্মাতা পছন্দ হলেই আমি কাজ করেছি এবং পরবর্তিতেও করব। আজকাল তো ইউটিউবের দিকেই ঝুঁকছে নাটকের দর্শক। এটাকে কি হিসেবে দেখছেন? আসলে ভালো নাটকের সংখ্যা কম, অন্যদিকে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন থাকে। তাই সবাই এখন ইউটিউবের দিকেই ঝুঁকছে। ভালো নাটক হলে কিন্তু সবাই দেখে। এক্ষেত্রে ইউটিউবে দর্শকমুখিতার দোষ-গুণ কিন্তু কিছুই না; এটাই বাস্তবতা। প্রবাসী কিংবা ভারতের অনেকেই নিয়মিত আমাদের নাটক ইউটিউবেই দেখে। যেমন কিছুদিন আগে আমি সাকিন-সারিসুরি নাটক নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। অনেকেই এই নাটকের কথা মনে রেখেছে এবং অনেক প্রশংসা করেছে। ইউটিউব না থাকলে তারা কি দেখতো ? আসলে বর্তমানে ইউটিউবের বিকল্প নাই। আমাদের নাটক নিয়ে ওপারের দর্শক আগ্রহ কেমন? ভালো নাটক সবাইকেই টানে। মাটির কাছে, আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয় এপার-ওপার সবাইকেই টানে। কলকাতার অনেকেই আমাদের নাটক দেখেন। আমাকে অনেকেই ফেসবুকে ইনবক্স করেন। আমার নাটক দেখে আমাকে লেখেন। আমরা আগে টেলিভিশনের মাধ্যমে ওপারের সবাইকে চিনতাম; আর আজ ওরা ইউটিউবের মাধ্যমে আমাদেরকে চিনে। সেখানকার অভিনেতা রুদ্রনীলসহ অনেকেই আমার নাটক দেখে আমাকে ফেসবুকে তাদের ভালোলাগা জানান। কাজ শেষ করে ইউটিউবে নিয়মিত আমাদের নাটক দেখে বলেও জানান তারা। আয়নাবাজি ছবির পর এবার আয়নাবাজি সিরিজ। আপনার কাছে এই উদ্যোগ কেমন মনে হচ্ছে? গল্পের মান, অভিনয় আর অন্যান্য বিষয় ঠিক থাকলে দর্শক গ্রহণযোগ্যতা থাকবেই। যারা বানাচ্ছে তারা ভালোভাবেই জেনেই এই উদ্যোগ নিয়েছে। আসলে এই সিরিজগুলো প্রচারের পরেই বোঝা যাবে দর্শক কেমনভাবে গ্রহণ করছে এটি। আগে থেকেই কিছু বলার দরকার নেই। তবে আস্থা রাখতে হবে। আমি এই উদ্যোগকে শুভকামনা জানাই। আর/০৭:১৪/২৭ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uaYCOE
June 27, 2017 at 02:17PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top