সুরমা টাইমস ডেস্ক:রাঙামাটি-বান্দরবনে ভূমিধসের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গত পরিবারের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলাসহ জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত কয়েকদিনে, রাঙ্গামাটি জেলায় প্রবল বর্ষণে এবং একের পর এক পাহাড়ধসের ঘটনায় যোগাযোগ ব্যবসহা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ও অচল হয়ে পড়ে। সেই সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যখন জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে, তখন এগিয়ে আসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন সহ অন্যান্য সদস্যরা। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পুনর্বহাল এবং রাস্তা-ঘাট পুনসংস্কারে তিন পার্বত্য জেলায় ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের প্রায় তিন শতাধিক সদস্য বিপুল সংখ্যক ভারী যন্ত্রপাতি সহকারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বান্দরবান জেলার রদমা এবং রাঙ্গামাটির ঘাগড়া এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়নের ২৩৩ জন সদস্য ২০টি ভারী যন্ত্র (১০টি ডাম্পার, ১টি হুইল লোডার, ৫টি এক্সেভেটর, ১টি হুইল ডোজার এবং ১টি লোডার ) দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছে।
দূর্গত এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে এবং পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক অত্যন্ত প্রতিকূল ও বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে খাগড়াছড়ি হতে লংগদু পর্যন্ত সড়ক পথে এবং সেখান হতে রাঙ্গামাটি পর্যন্ত নদীপথে ১টি জেনারেটর রাঙ্গামাটিতে প্রেরণ করা হয়। একইসাথে চট্রগ্রাম হতে ২টি উচ্চ শক্তি সর্ম্পন্ন জেনারেটর, ২টি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট, ৪টি ওয়াটার ট্যাংক, ২০০ জেরিকেন বিশুদ্ধ পানি, বিপুল পরিমান জ্বালানী তৈল সড়কপথে কাপ্তাই এবং পরবর্তীতে নদীপথে রাঙ্গামাটিতে প্রেরণ করা হয়। ১৬ জুন রাঙ্গামাটিতে পানি বিশুদ্ধকরণ ২টি প্ল্যান্ট এবং ৪টি ওয়াটার ট্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে দুর্গম এলাকাসমূহে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে পানিবাহিত ও সংক্রামক রোগের মহামারী প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। এছাড়াও ১৬ জুন থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মোট ১,৬৮৬ জন অসহায় ও দুর্গতদের মাঝে চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং ৪৮৯২ জনকে দৈনিক দুই বেলা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, রশদ বিতরণ ও ৯০০ জন দুর্গতদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা ও বস্ত্র বিতরণ নিশ্চিত করে। বর্তমানে ৮টি মেডিক্যাল টিম ১৬টি স্থানে অসহায় ও দুর্গতদের মাঝে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং ৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে দুর্গত জনসাধারণের মাঝে প্রতিদিন রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করে যাচ্ছে।
পাহাড়ধসের ঘটনা পরবর্তী সময়ে বৈরী ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে সেনাবাহিনী প্রধান, জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন, কমান্ডার এসডব্লিউও এবং জিএসও-১ (সিআই) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার দুর্গত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন। এই সময় সেনাবাহিনী প্রধান ও জিওসি ২৪ পদাতিক ডিভিশন এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দুর্গত এলাকার জনগণকে সার্বিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন রাঙামাটি বান্দরবনে ভূমিধসের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2rNLulQ
June 21, 2017 at 01:25AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন