কেন হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে কাতার

aইউরোপ ::সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর চাপের মুখেও ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন হামাস ও ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে কাতার। ২০১১ সালে আরব বসন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে হামাসের হেড কোয়ার্টার কাতারে। হামাসের সাবেক রাজনৈতিক বুরে‌্য প্রধান খালিদ মিশালসহ সিনিয়র নেতারা কাতারে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া মিসরে মুরসি সরকারের পতনের পর দলটির বহু নেতা এখন কাতারে অবস্থান করছেন। যার মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের আধ্যাত্মিক নেতা ইউসুফ কারজাভি রয়েছেন। অবশ্য কারজাভিকে কাতার নাগরিকত্ব প্রদান করেছে।
সৌদি আরব ও মিসরের প্রধান দাবি হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাদের বহিষ্কার করতে হবে। ইতোমধ্যে ৫৯ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছে যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। কাতারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এরা সবাই কাতারে অবস্থান করছেন। হামাসের নেতারা অবশ্য নিজ থেকেই সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে তাদের অনেক নেতা কাতার ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কারণ হামাসের কারণে বন্ধুরাষ্ট্র কোনো ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়–ক তা হামাস চায় না।
প্রবল চাপের মুখে হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন দেয়ার নীতি থেকে সরে আসেনি কাতার। মূলত দু’টি কারণে দেশটি এ অবস্থান নিয়েছে। প্রথমত ফিলিস্তিনি মুক্তিসংগ্রাম বিশেষ করে হামাসকে সমর্থন দেয়ার কারণে আরব জনগণের মধ্যে কাতারের শাসকদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। অপর দিকে, মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো সংগঠিত ও পুরনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন কাতারের শাসকদের রাজনৈতিক শক্তি বাড়িয়েছে। কাতার সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত আলজাজিরার টেলিভিশন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফিলিস্তিন সঙ্কট এ অঞ্চলে প্রধান সমস্যা হিসেবে সব সময় তুলে ধরা হচ্ছে। যা আরব জনগণকে প্রবলভাবে আলোড়িত করে। অপর দিকে, আরব বসন্তে মোবারক সরকারের পতনে আলজাজিরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতপক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেল আরব শাসকদের ভিত নাড়িয়ে দেয়। হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডকে কেন্দ্র করে আরব বিশ্বে যে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সংগ্রাম তা হয়ে উঠেছে আলজাজিরার প্রধান চালিকাশক্তি। এ কারণে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন দেশগুলোর দাবি আলজাজিরার প্রচার বন্ধ করে দিতে হবে। ইতোমধ্যে মিসর, সৌদি আরব, জর্দান ও উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ আলজাজিরার প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। যেকোনো ধরনের সমঝোতায় এসব দেশের পক্ষ থেকে আলজাজিরা বন্ধ করে দেয়াকে শর্ত হিসেবে হাজির করা হবে। হামাস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো রাজনৈতিক শক্তির সাথে সম্পর্ক কাতারের শাসকদের আন্তর্জাতিক গুরুত্ব যেমন বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি আরব শাসকদের সাথে দেনদরবারের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলেছে।



from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2s0qSoV

June 14, 2017 at 05:29PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top