সুরমা টাইমস ডেস্ক:
হামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার তদন্ত এখনো শেষ করতে পারেনি পুলিশ। ওই জঙ্গি হামলায় সরাসরি জড়িত সবাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মারা গেছে। পুলিশ এখন তদন্ত চালাচ্ছে অস্ত্রদাতা, অর্থদাতা ও মদদদাতাদের সন্ধানে।
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুর্শেদ জামান জানান, এখনও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তাই এ মামলার অভিযোগপত্র দিতে আরো সময় লাগবে। তবে তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। শোলাকিয়া হামলার পর দেশে যে জঙ্গি বিরোধী সফল অভিযান হয়েছে, ওইসব অভিযানে এ মামলার তদন্ত থেকে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা কাজে লেগেছে।
তিনি জানান, গত ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার অন্যতম নেপথ্য হোতা ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধী (৩২)। গত ২৯ মে তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয় কিশোরগঞ্জ পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে সে। পুলিশের কাছে অস্ত্রদাতা, অর্থদাতা এবং হামলার নেপথ্যে কারা তাদের নাম প্রকাশ করেছে রাজিব গান্ধী। জিজ্ঞাসাবাদে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়ায় হামলায় রাজিব গান্ধী নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে এবং জড়িত আরও কয়েকজনের নাম বলেছে।
শোলাকিয়া হামলা সম্পর্কে মামলার মুর্শেদ জামান জানান, শোলাকিয়ায় পুলিশের ওপর সরাসরি হামলা চালায় দুজন। কিন্তু পরিকল্পনায় ছিল পাঁচজন। শোলাকিয়া হামলার মূল পরিকল্পনাকারী রাজীব গান্ধী। তার সঙ্গে তামিম চৌধুরী, মারজান, সারোয়ান জাহান মানিক ও জাহিদ মিলে হামলার ছক তৈরি করে। এরা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য।
তিনি জানান, হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়ে ও জখম করে সরকারের পতন ঘটানো। শোলাকিয়া জামাতের ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাউসদকেও হত্যা করতে চেয়েছিল তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হলি আর্টিজান ও শোলাকিয়ায় হামলার পরিকল্পনা এক সঙ্গেই করা হয়। এ নিয়ে জঙ্গিরা ঢাকায় দুদফা বৈঠক করে। হামলাকারীদের মধ্যে খায়রুল ইসলাম পায়েল বাধন, শরিফুল ইসলাম ডন, রোহান ইমতিয়াজ স্বপন ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বলকে দুটি হামলার দায়িত্ব দেয় রাজীব গান্ধী। পরবর্তী সময়ে শোলাকিয়া হামলায় অংশ নেওয়া তামিম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জে, জাহিদ ঢাকার রূপগঞ্জে, আকাশ গাজীপুরের পাতারটেকে, শরিফুল ইসলাম ডন পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়।
আর আবির রহমান শোলাকিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। আবির ঢাকায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্র ছিল। একইদিন পুলিশের গুলিতে আহত হয় আরেক জঙ্গি শফিউল ইসলাম (ডন)। তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত ৪ আগস্ট র্যাবের একটি দল ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ নিয়ে আসার পথে নান্দাইলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে র্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় শফিউল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ডন, জাহিদুল হক তানিম এবং অজ্ঞাত কিছু আসামির বিরুদ্ধে গত বছরের ১০ জুলাই পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামসুদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2tdbarR
June 26, 2017 at 11:25PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন