লন্ডন, ১০ জুন- কয়েক ওভার পরপর ধারাভাষ্যে পরিবর্তন হয়। আসেন আতাহার আলী খান ঘরোয়া ক্রিকেটে কার কী অবদান, রান-পরিসংখ্যান সবই তুলে ধরা হয়। তাতে পাশে বসা ভিনদেশি আরেক ধারাভাষ্যকার জেনে অবাক হতে থাকেন, প্রশ্ন করেন- তোমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট এতোটা শক্তিশালী হয়েছে, পাইপলাইনে এতোজন ক্রিকেটার ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনই সব আলোচনা শুধু দেশি আতাহার আলীর কাছ থেকে নয়। এসেছে ভিনদেশি এক ধারাভাষ্যকারের কাছ থেকেও। তিনি আর কেউ নন, ক্রিকেটের দাদা! বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভারতীয় শুভাকাঙ্ক্ষী সৌরভ গাঙ্গুলী। ভারতের সাবেক অধিনায়ক; বর্তমানে সময়ের সেরা ধারাভাষ্যকারদের একজন। কথা যখন বলেন, শুনে বোঝাই যায় টাইগারদের নিয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর তার মাথায়। চেনন তরুণ মোসাদ্দেককেও; ব্যাট হাতে নেমে সে কী করতে পারে তাও জানা দাদার। এমনকি তামিমের দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েও কথা বলেন তিনি। তিন উইকেট নেই, মাঠে মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। সৌরভ গাঙ্গুলীর বক্তব্য ছিল এমন, একটা জুটি গড়ে উঠলেই বিপর্যয় সামলে উঠবে বাংলাদেশ। কথার সুরে এ নিয়ে মৃদু বিতর্কও ঢেলে দেন তিনি। এছাড়া সাকিব যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন সৌরভ গাঙ্গুলী বলেন, বিগ ম্যান। নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। তার ওপর অনেকখানি ভরসা। তিনি অতীতে যা করে দেখিয়েছেনও। মুশফিক আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নামলেন। তখন ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেই। হতাশা অধিকাংশ বাঙালির মনে। তবে তখনও হতাশ নন; উল্টো আশা দেখছিলেন বাঙালি দাদা। ছোট্ট করে যখন দুজনের ব্যাটিং জুটি গড়ে উঠলো তখন দাদার কণ্ঠে ছিল দেশ ও দেশাত্ববোধের ডাক। কান্ট্রি নিডস ইউ... সাকিব। এটাই সুযোগ কাজে লাগাও। আরও পক্ত করো জুটি, যোগ করেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে তো লম্বা দৌড়ের ঘোড়া হিসেবেই বলতে চান সৌরভ। কথায় কথায় বারংবার বলেছেন, বড় আসরে ভালো খেলা রিয়াদের বৈশিষ্ট্য। তিনি ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে পরপর দুটি সেঞ্চুরি করে দলকে টেনে তোলেন। এবারও হয়ত সে পথেই! তখনও কে জানতো এমনটাই হতে যাচ্ছে! তাই তো সঙ্গী অপর ধারাভাষ্যকার প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বলেন, নিউজিল্যান্ড একটু প্রেসার তৈরি করতে পারলেই ফের ম্যাচ ঘুরে যাবে! সৌরভ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এই মানুষটা (মাহমুদউল্লাহ) এতো ভালো ক্লাস ব্যাটসম্যান কিন্তু বছরের পর বছর ছয় নম্বরে ব্যাট করে যাচ্ছেন। কেন তিনি আরও আগে উঠে আসতে পারেন না, বলেও প্রশ্ন রাখেন। সঙ্গে উদাহরণ হিসেবে যুক্ত করেন বিরাট কোহলি ও শচিন টেন্ডুলকারের নাম। তারাও ক্লাস ব্যাটসম্যান- আর তাদের ব্যাটিং পজিশন তিনের মধ্যে। ততক্ষণে আরও কাছাকাছি টাইগাররা। পক্ষে অনুমান জরিপেও বাড়ছিল। এতে বিস্মিত হচ্ছিলেন অন্য ধারাভাষ্যকাররা। কিন্তু সৌরভ বলেন, ম্যাচে শান্ত-স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলেছে টাইগাররা। সাকিব-মাহমুদউল্লাহর রেকর্ড জুটিতে মুগ্ধ সৌরভ বলতে থাকেন, এই জুটির ফুটেজ বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অবশ্যই দেখার বিষয়। চাপের মধ্যে কীভাবে জুটি গড়তে হয় এই দুইজন তা দারুণভাবেই দেখাচ্ছেন। তরুণদের জন্য যা দারুণ শিক্ষণীয়। চাপের মধ্যে পড়ে, রান তাড়া করে কোহলির সেঞ্চুরির সংখ্যা (১৭টি), যা প্রথমে ব্যাট করার চেয়েও বেশি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ২২৪ রানের জুটি। যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যেকোনো উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২২৪ এর ১০১ রানই এসেছে দৌড়ে (৮৩টি সিঙ্গেলস, ১৮টি ডাবলস)। সাকিবের সিঙ্গেলস-সংখ্যা ৪৩টি, মাহমুদউল্লাহর ৪০। দুজনই দুই রান নিয়েছেন নয়বার করে। ধীরে ধীরে কি করে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করতে করতে পুরো ম্যাচই জয় করে ফেলা যায় এটাই তার উপযুক্ত প্রমাণ বলেও মনে করেন শুভাকাঙ্ক্ষী দাদা। শুধু শুক্রবারের (০৯ জুন) ম্যাচ নয়, ইতোপূর্বেও সৌরভ নানা সময়ে নানাভাবে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন। গেয়েছেন বাংলার প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের বন্দনা। তিনি এলে স্বস্তি জাগে বাংলাদেশিদের মনে। তখন এক তরফা আলোচনা হয়ে ওঠে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের তথ্যবহুল। আর/১০:১৪/১০ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2s8WIQE
June 11, 2017 at 04:33AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন