ঢাকা, ২৬ জুন- জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার মোহাম্মদ শহীদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ এনেছেন তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার। তার অভিযোগ, ছয় বছরের সংসার জীবনের গত কয়েক বছর দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে শহীদের অত্যাচারে। এমনকি ঈদের দুই দিন আগে বাসা থেকে সন্তান সমেত বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। ফারজানা আক্তার তার ১১ মাস বয়সী মেয়ে আরোহিকে নিয়ে এখন তার বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে আছেন। রবিবার ফারজানা জানান, বড় সন্তান ছেলে হওয়ায় আরাফকে অবশ্য ভালোই জানেন শহীদ। কিন্তু ছোট সন্তান আরোহিকে নিজের মেয়ে বলে মেনে নিচ্ছেন না শহীদ। ফারজানাকে ঈদের তিন দিন আগে শুক্রবার বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার দিন তিনি মুন্সীগঞ্জের হাতিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দিতে যান। কিন্তু সেখানে তার অভিযোগ নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনা যেহেতু নারায়ণগঞ্জের সেখানকার স্থানীয় থানা বা আদালতে গিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। ফারজানা জানান, শহীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিবার। ঈদের ছুটি শেষেই নারায়ণগঞ্জে আদালতে মামলা করবেন তিনি। শহীদের স্ত্রী জানান, তিনি যেকোনো মূল্যে ফিরতে চান স্বামীর ঘরে। কিন্তু শহীদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তার সঙ্গে আর সংসার করবেন না। স্ত্রীর এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে শহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন তারকার বিরুদ্ধে নারী নিপীড়ন, সম্পর্কের নামে প্রতারণা, গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই তালিকায় সবশেষ যোগ হতে যাচ্ছে শহীদের নাম। প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচারের কাহিনি বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদের স্ত্রী। তিনি জানান, তার দ্বিতীয় সন্তান আরোহীর বয়স ১১ মাস হলেও একবারও তাকে স্পর্শ করেননি শহীদ। ক্রিকেটার শহীদের বিরুদ্ধে পরনারী আসক্তির গুরুতর অভিযোগও আনেন ফারজানা। তার অভিযোগ, অনেক দিন ধরেই অন্য নারীতে আসক্ত শহীদ। শহীদের স্ত্রী জানান, ২০১১ সালের ২৪ জুন পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তিনি বলেন, আমার স্বামী আগে বেশ ভালোই ছিল। আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝত না। কিন্তু টাকা হওয়ার পর পাল্টে গেছে। অন্য মেয়েতে ভীষণভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। নানা সময়ে ফোনে কথা বলার সময় আমার কাছে সে ধরা পড়েছে। ওই মেয়েদের সঙ্গে সে অনৈক্তিক সম্পর্কও স্থাপন করেছে। সেটাও আমি জানি। এর প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে প্রচণ্ডভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। কয়েকদিন আগেও একটা মেয়ের সঙ্গে তার খারাপ সম্পর্ক ছিল। ঢাকার বড় লোকের সুন্দরী মেয়ে সে। কিন্তু সে জানতো না শহীদ বিবাহিত। পরে সে জানতে পেরেছে যে, শহীদ বিবাহিত। ওই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শুধু একটা নয়, শহীদ এক সঙ্গে অনেক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। সবাইকে বলে আমি অবিবাহিত। ফারজানা জানান, দ্বিতীয় সন্তান পেটে আসার পর থেকেই শহীদ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বাচ্চা নষ্ট করার জন্য নানাভাবে চাপ দেয়। কিন্তু ফারজানা রাজি না হওয়ায় নানা অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয় তার ওপর। গত বছরের আগস্টে ঢাকার বারডেমে জন্ম হয় শহীদের মেয়ে আরোহির। হাসপাতাল থেকে নারায়ণগঞ্জ নিজের বাড়ি নয়, মুন্সীগঞ্জে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন শহীদ। কিন্তু ফারজানা রাজি হননি। তিনি নারায়ণগঞ্জে শহীদের বাড়িতেই ওঠেন। আশায় ছিলেন, সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে যদি ভালো হয়ে যাবেন তার স্বামী। ফারজানার অভিযোগ, দিনে দিনে আরও কঠোর হয়ে ওঠেন শহীদ। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায় আরো। মানসিক নির্যাতন শুধু নয়, প্রচণ্ড শারীরিক অত্যাচার চলতে থাকে। কথায় কথায় লাথি, ঘুষি সঙ্গে অশ্রাব্য গালাগালি। বারবার ডিভোর্স দেওয়ার হুমকিতো আছেই। ফারাজানা বলেন, অনেক অত্যাচার সহ্য করেও স্বামীর ঘরে থাকতে চেয়েছিলাম। আমার দুটি সন্তান। আমি কোথায় যাব বলেন? আমি তার জন্য কি না করেছি? তার তো আঙটি দেওয়ারও সামর্থ ছিল না। আমরা তাকে যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি। কিন্তু টাকা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে পাল্টে গেল। আমার চেহারা ততটা ভালো নয়। সে বলে আমার পিছনে এখন সুন্দরী কোটিপতির মেয়ে ঘুরে, তোকে রাখবো কেন? তুই চলে যা। তোর জন্য আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। তোকে দেখলে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। আসলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করার জন্যই সে এরকম করছে। ২০১১ সালে দুই পরিবারের দেখাদেখির পর বিয়ে হয় শহীদ ও ফারজানার। তখন ক্রিকেটের হিসেবে নাম হয়ে ওঠেনি শহীদের। ২০১৪ সালে প্রথম সন্তান আরাফের জন্ম হয়। আস্তে আস্তে ভালো ক্রিকেটার হলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে জাতীয় টেস্ট দলে অভিষেক হয় শহীদের। আর/১০:১৪/২৬ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tNtNAf
June 27, 2017 at 06:06AM
27 Jun 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top