সুরমা টাইমস ডেস্ক:: নির্মাণাধীন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শহতলির বাদাঘাটে স্থানান্তরের জোরালো প্রচেষ্টা চলছে। এ লক্ষ্যে সিলেট গণপূর্ত অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করে যাচ্ছেন। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিনও জানিয়েছেন, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে কারাগার স্থানান্তর করতে চান। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও কারাগার স্থানান্তরের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জোর তাগিদ দিয়েছেন। নতুন কারাগারের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২ হাজার বন্দির।
সিলেট গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মিজানুর রহমান জানান, ডিসেম্বরে কারাগার স্থানান্তরের লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। কারাগারের প্রায় সব কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। কারাগারের কেবল সিউয়েজ ট্রিটম্যান্ট প্লান্ট (এসটিপি) শুধু বাকি আছে। এসটিপি হচ্ছে বাথরুমের ময়লা পানি বিশুদ্ধকরণ।
তিনি জানান, নয়া কারাগারটি নদীর তীরে অবস্থিত। এ কারণে পয়ঃনিষ্কাশনের পানি বিশুদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ বিশুদ্ধ করা পানি যে কোনো জায়গায় ছাড়া যাবে বলে জানান এ প্রকৌশলী। এছাড়া কারাগারের ফিনিশিংসহ সবকাজ জোর কদমে এগিয়ে চলছে বলে জানান।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলার আব্দুল জলিল জানান, আমরা কারাগার স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নতুন কারাগারের ধারণ ক্ষমতা প্রায় দুই হাজার বন্দীর। অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে কারাগার স্থানান্তরের কাজে গতি এসেছে বলে জানান এ কারা কর্মকর্তা।
জানা যায়, ১৭৮৯ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ রাজের প্রতিনিধি সিলেটের কালেক্টর জন উইলসন সিলেট নগরীর ধোপাদীঘির পাড়ে ২৪.৬৭ একর জায়গায় নির্মাণ করেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার। এতে নির্মাণ ব্যয় হয়েছিল ১ লাখ রুপি। ২২৭ বছর পর সেই কারাগার সরিয়ে নেয়া হচ্ছে নগরীর বাইরে শহরতলির বাদাঘাট এলাকায়। নতুন কারাগারের বন্দির ধারণক্ষমতাও প্রায় দুই হাজার। রয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাও।
২০১০ সালে কারাগার স্থানান্তর প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হয়। পরের বছরের ১১ই আগস্ট শহরতলির বাদাঘাটে ৩০ একর ভূমির ওপর নতুন কারাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য কারাগারটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের জুন মাসে। এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় লক্ষ্য বেঁধে দেয়া হয় ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। নির্মাণ কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েও এ সময়ের মধ্যে কারাগারের ৭০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ করা সম্ভব না হওয়ায় তৃতীয় দফায় আরও এক বছর সময় দেয়া হয় কাজ শেষ করার জন্য। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় গণপূর্ত বিভাগকে। সর্বশেষ তাদের ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
নির্মাণাধীন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রকল্পস্থলে সংরক্ষিত মাস্টারপ্লান থেকে জানা গেছে, কারা কম্পাউন্ড জুড়ে রয়েছে ৬৪টি ভবন। এসব ভবনের মধ্যে বন্দিদের জন্য থাকছে সাতটি ভবন। এগুলোর মাঝে পুরুষ বন্দিদের জন্য চারটি এবং নারী বন্দিদের জন্য রয়েছে তিনটি ভবন। পুরুষ বন্দিদের চারটি ভবনই ৬ তলাবিশিষ্ট আর নারী বন্দিদের জন্য নির্ধারিত ভবনের মধ্যে একটি ৪ তলা এবং দুইটি দ্বিতল ভবন রয়েছে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2eLusMb
September 08, 2017 at 10:43PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন