কলকাতা, ৩০ জানুয়ারি- সরকারের মূল লক্ষ্য অসহায় গরিব মানুষদের আশ্রয় দেওয়া। গরিব মানুষদের মাথার ওপর যাতে ছাদ থাকে, তাঁরা যাতে সভ্য সমাজে বাঁচতে পারেন তার জন্য আমরা আবাস যোজনা প্রকল্প তৈরি করেছি। বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলার আবাস বিতরণ দিবসের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ১০ জনের হাতে বাড়ি তৈরি করার প্রশংসাপত্র তুলে দেন। এরপর সারা রাজ্যে বাড়ি তৈরির জন্য মোট ৫ লক্ষ প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিম পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। বাকি জেলাগুলিতে দেওয়া হচ্ছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে। মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েত দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন, ৪ কিস্তিতে নয়, ২ কিস্তিতেই দিয়ে দিতে হবে এই টাকা। না হলে গরিব মানুষ বাড়ি করবে কী করে? মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর তাঁকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান গ্রাম থেকে আসা মানুষেরা। কেন্দ্র ও রাজ্যের নিয়ম মেনে এই টাকা দেওয়া হবে। তবে উত্তর ২৪ পরগনা ও হাওড়ায় উপনির্বাচনের কারণে নির্বাচনীবিধি অনুসারে টাকা দেওয়া হয়নি এখন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই নিজ গৃহ প্রকল্পে ২৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে। আবাসন এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই রাজ্য দেশে এক নম্বর। আমরা চাই, রাজ্যে কাঁচা বাড়ি থাকবে না। মানুষ যেন ভালভাবে বসবাস করতে পারেন। ১৩ হাজার কিমি গ্রামীণ রাস্তা এর মধ্যেই করেছি। আরও ৮ হাজার কিমি রাস্তা তৈরি করে দেব। আমরা কৃষিজমির খাজনাও তুলে দিয়েছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য আমরা ১,২০০ কোটি টাকা খরচ করেছি। অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি বলেন, গ্রামের মানুষ যাতে নিজের বাড়িতে ভালভাবে বসবাস করতে পারেন, তার জন্যই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নানা পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা ২২ লক্ষ গরিব মানুষকে বাড়ির জন্য অর্থ দিয়েছি। আগামী ৫ বছরে আরও ৬ লক্ষ পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দেব। ১০০ দিনের কাজ খুব ভাল হয়েছে। সুব্রতবাবুর দাবি, আগামী ১ বছরে এ রাজ্যে গৃহহীন মানুষ থাকবে না। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে একটি বাড়ির মডেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আরও খবর: মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তুলে নিল ধর্মঘট অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্য সচিব মলয় দে, পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব সৌরভ দাস, পঞ্চায়েত কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি শামিমা শেখ। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর থেকে বাংলার আবাস যোজনা এবং জল মাটি গাছের উপাখ্যান বই দুটি তৈরি করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। আবাস যোজনা সংক্রান্ত বইয়ে বাড়ির নকশা এবং কারা পেয়েছেন তাঁদের নামপরিচয় দেওয়া আছে। অন্য বইটিতে পঞ্চায়েত দপ্তরের উদ্যোগে কীভাবে গ্রামে কাজ হয়েছে ইংরেজি ও বাংলায় তার সচিত্র বিস্তারিত বিবরণ। পঞ্চায়েতমন্ত্রী, সচিব ও কমিশনার অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই দুটি বই তৈরি করেছেন, যা ভবিষ্যতে গবেষণার কাজে লাগতে পারে। সচিব সৌরভ দাস এবং কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার এই পরিকল্পনাটি ব্যাখ্যা করেন। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, প্রতিটি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা চলে যাবে। উপভোক্তার ছবি গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের পোর্টালে থাকবে। উপভোক্তারা যে টাকা পেয়েছেন তার প্রমাণ হিসেবে থাকবে একটি। ১০০ দিনের প্রকল্পের কর্মীরা দৈনিক ১৮০ টাকা করে পাচ্ছেন। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর থেকে একটি আর্থসামাজিক সমীক্ষা করা হয়েছিল। আমরা সেই তালিকা থেকে গৃহহীনদের সংখ্যা, কাঁচাবাড়ির সংখ্যা সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। ২৫ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে। তথ্যসূত্র: আজকাল এআর/২৩:০৭/৩০ জানুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2EtmZ0o
January 31, 2018 at 05:07AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top