চট্টগ্রাম, ০১ ফেব্রুয়ারি- হতে পারতো কতো কিছুই। প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনের শেষেও চওড়া হাসি থাকতে পারতো বাংলাদেশেরই চেহারায়। মুমিনুল হকের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। হ্যাঁ, হতেই পারতো। ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি। তাও। নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ৬০০র দরজা ভেঙে ফেলার সম্ভাবনাও হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টাইগারদের জন্য আরো অনেক হতে পারতো স্বপ্নালু আভা ছড়াচ্ছিল আগে থেকে। তা ব্যাটিংয়ে বিপর্যয়ের মাঝেও সপ্তমবারের মতো ৫০০ রান হলো। ৫১৩। কিন্তু ওই হতে পারতোগুলোর মালা গাঁথা গেল না। দিনশেষে দেখা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা বেশ স্বস্তিতেই। অস্বস্তির কাঁটা বিদ্ধ করছে স্বাগতিকদের। ১ উইকেটে ১৮৭ রান শ্রীলঙ্কার। পিছিয়ে ৩২৬ রানে। একজন সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন, আরেকজন অপেক্ষায়। হতে হতেও শেষে এই দিনটা মুদ্রার উল্টো পিঠটাও দেখিয়ে দিয়ে গেল স্বাগতিকদের। দিনের শেষে এই হতে পারতোর কথা কিন্তু বেরিয়ে এলো মুমিনুলের কণ্ঠ থেকেও। জানিয়ে গেলেন, দিনের শুরুতে তার আউটটাই হয়তো ৬০০ রানের পরিকল্পনাকে বাস্তবতা দিতে পারেনি। বিনয়ী যুবা ডাবল সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপের দিকে না গিয়ে দলের কথা বলেন। নিজের ওপর দায়ভার নিয়ে। শ্রীলঙ্কা ৪৮ ওভারে যে রানটা করে ফিরেছে সেখানে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার হার না মানা ১০৪। ভারতের বিপক্ষে দিল্লিতে ডিসেম্বরে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আসা লঙ্কান চোখ রাঙাচ্ছেন আরো বড় কিছ করার। ১২ টেস্টে যার ৪ সেঞ্চুরি আর কুশল মেন্ডিসের ৮৩। ২৪তম ম্যাচে চতুর্থ সেঞ্চুরির সুবাস নিয়ে তার ফেরা। দিনের শুরুতে স্পিনের কাছে হার মেনে ওই যে মুমিনুলের ফিরে যাওয়া, নিজের ১৭৬ রানে, দিনের তৃতীয় ওভারেই, সেই উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনাররা মাথাখুড়ে মরেছেন পরে। এখানকার উইকেটের চরিত্রটা ৩/৪ সেশনের পরই স্পিনারদের নাগালে চলে আসে অনেকটা, সেটাই হলো না এদিন স্বাগতিকদের। অপেক্ষা তাই তৃতীয় দিনের। সেই আভাস মুমিনুলকে আউট করা কিংবদন্তি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের কথাতেও মিলল। শুক্রবারের সকালটা তাই বাংলাদেশের জন্য সব মিলিয়ে ফেরার লড়াইয়ের মতো। ক্যারিয়ারসেরা ১৮১ রানটাকে টপকে যাওয়া হয়নি। আরো বড় কিছুর সাধনা ছিল। হেরাথের স্পিনে সেইসব স্বপ্নের অপমৃত্যু আগের দিনের মহাকাব্যের ইনিংসের সাথে মাত্র এক রান যোগ করেই। দলের প্রথম দিনের ৪ উইকেটে তোলা ৩৭৪ রানের সাথে ২ যোগ হতেই ১ উইকেটের পতন। এরপর সত্যিকারের ক্যাপ্টেন্স নক ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। ৬ উইকেটে ৩৯০ এর পরও টাইগারদের রান আরো বেড়েছে তাই ১২৩টি। ১২৯.৫ ওভার পর্যন্ত গিয়ে থামা। মাহমুদউল্লাহর ১৩৪ বলে ৮৩ রানের বীরোচিত ইনিংসটায় কেবল লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়েই ৫টা জুটি। চোখের সমস্যা কাটিয়ে ফিরে হেরাথের মস্তিস্কের বোলিংয়ে ৮ রান করে ফিরে গিয়েই তো লেজটা বের করে দিয়ে গেলেন মোসাদ্দেক হোসেন (৮)। তবু বোলারদের ব্যাটসম্যান বানিয়ে গাইড করে ভারপ্রাপ্ত মাহমুদউল্লাহ যে কাজটা করে দিয়ে গেলেন, তার তুলনা মেলা ভারই তো! সংক্ষিপ্ত স্কোর : দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৫১৩ (১২৯.৫) (তামিম ৫২, ইমরুল ৪০, মুমিনুল ১৭৬, মুশফিকুর ৯২, লিটন ০, মাহমুদউল্লাহ ৮৩*, মোসাদ্দেক ৮, মিরাজ ২০, সানজামুল ২৪, তাইজুল ১, মোস্তাফিজ ৮; লাকমাল ৩/৬৮, কুমারা ০/৭৯, দিলরুয়ান পেরেরা ১/১১২, হেরাথ ৩/১৫০, সান্দাকান ২/৯২, ধনাঞ্জয়া ০/১২)। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস : ১৮৭/১ (৪৮ ওভার) (করুনারত্নে ০, মেন্ডিস ৮৩*, ধনাঞ্জয়া ১০৪*; মোস্তাফিজুর ০/৩১, সানজামুল ০/৫২, মিরাজ ১/৪৫, তাইজুল ০/৫৬, মোসাদ্দেক ০/৩)। সূত্র: পরিবর্তন আর/০৭:১৪/০১ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2DV64m4
February 02, 2018 at 12:30AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন