মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে :: ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে’ সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক’সহ ৫১ জন নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছে থানা পুলিশ। গত ৪ ফেব্রুয়ারী রাতে পুলিশের অনুমতি ছাড়া মিছিল করা ও লিফলেট বিতরণ করে নাশকতা সৃষ্টির পায়তারার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন থানার এসআই শফিকুল ইসলাম। মামলা নং ৪ (তাং ৪.০২.১৮ইং)। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করে দায়ের করা মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ ও ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলা দায়ের পর থানা পুলিশ মামলার এজাহার নামীয় আসামিসহ কয়েকজন আটক করে আদালতে প্রেরণ করে ও সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। এতে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
জানাগেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপি দু-ভাগে বিভক্ত রয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী,উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক আবদুল হাই বলয় ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া চেয়ারম্যান বলয়ে দুটি ভাগে বিভক্ত বিশ্বনাথ বিএনপি। ইতি মধ্যে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছে বিএনপি। নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় প্রতি মাসে ১৭ তারিখ দোয়ামাহফিলও পৃথকভাবে পালন করে আসছে স্থানীয় বিএনপি। সিলেটে খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে গত ৪ ফেব্রুয়ারী রাতে মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে জালাল উদ্দিন ও লিলু মিয়া বলয়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশের অনুমতি ছাড়া মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে নাশকতা সৃষ্টির পায়তারার অভিযোগে ওই রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ চার বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করে এবং বেশকয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। এরপর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীর মধ্যে গ্রেফতার আতংক জড়িয়ে পড়ে। গত ৮ ফেব্রুয়ারী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মামলায় ৫ বছরের সাজা প্রদান করেন আদালত। এতে কেন্দ্রীয় বিএনপি তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষনা করে। ফলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে মরিয়া হয়ে উঠে বিশ্বনাথ বিএনপির দুটি গ্রুপ। উপজেলা বিএনপির দুটি গ্রুপই পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করে। তবে দলীয় নেতাকর্মীর মধ্যে ছিল গ্রেফতার আতংক। গত সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান নূর আসাদকে আটক করে পুলিশ। ফলে দলীয় নেতাকর্মীর মধ্যে গ্রেফতার আতংক আরও বিরাজ করে। গতকাল বুধবার ছিল কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির শেষ দিন। গতকাল বুধবার অনশন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্বনাথ দুটি গ্রুপ।
এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক বশির আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানী করা হচ্ছে। ইতি মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াসহ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার আতংকে রয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। অভিলম্ভে আটক সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান তিনি।
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতি রাতে দলীয় নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ তল্লাসি চালাচ্ছে। ফলে গ্রেফতার এড়াতে অনেক নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আটক নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান তিনি।
বিশ্বনাথ থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বাদল বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2Hg31Hl
February 14, 2018 at 07:39PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন