তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমানকে সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান।
মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সাংবাদিক হাবিব সারোয়ার আজাদ
গত ১৩ এপ্রিল রাতে বাদাঘাট বাজারের মেইন রোডে মানিকের ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকান থেকে দৈনিক যুগান্তরের তাহিরপুর স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সারোয়ার আজাদকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও বাদাঘাট বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুক মিয়া ও তার সহযোগী পৈলনপুর গ্রামের ফারুক মিয়া, হযরত আলী, ইকবাল হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১২জন।
পরে তাঁর চোখসহ হাত-পা বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তাঁকে ৩৪৫ পিস ইয়াবা দিয়ে নাটকীয়ভাবে পুলিশে সোপর্দ করে ওই অপহরণকারী সন্ত্রাসীরা।
নির্যাতনে গুরুতর আহত দৈনিক যুগান্তরের তাহিরপুর স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদ বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অপহরণের পর সাংবাদিক আজাদের পরিবার তাহিরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান ও এএসআই পিযুষ দাসকে মুটো ফোনে বিষয়টি অবগত করলেও তারা তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেননি।
পরে ঘটনার দিন রাত ১২টায় তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর জানান, সাংবাদিক আজাদকে স্থানীয় লোকজন ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
তবে, সেদিন রাতে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন জানিয়েছিলেন, আজাদ কোনো ভাবেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি বলেছিলেন, ‘এ জাতীয় নেতিবাচক চর্চা এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
পরে পুলিশ সুপার ও সুনামগঞ্জের সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে পরদিন আজাদকে যাঁরা ধরিয়ে দিয়েছিলেন সেই মাসুক মিয়াসহ কয়েকজনের জামিনে বিভিন্ন শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে, পুলিশের গাফিলতির কারণে সাংবাদিক হাবিব সরোয়ার আজাদকে চরম নির্যাতন ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে বলে মনে করেন বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিকরা। নির্যাতনে গুরুতর আহত সাংবাদিক আজাদ বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাংবাদিক হাবিব সারোয়ার আজাদের উপর নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী মাসুক মিয়াদের খুঁটির জোর কোথায় এবং এরা ৩৫০ পিস ইয়াবা কোথা থেকে পেলো প্রশ্ন এখন জনমনে?
এ ঘটনায় সুনামগঞ্জের সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হলে পুলিশ সুপার মো. বরকত উল্লাহ খান মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে জরুরি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। মতবিনিময় সভায় সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক সংবাদের সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি লতিফুর রহমান রাজু এ ঘটনায় সাইদুর রহমানের গাফিলতি ও অপরাধীদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনেন। তাঁকে প্রত্যাহারের দাবিও জানান।
এমন দাবীর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান ফাঁড়ির ইনচার্জকে প্রত্যাহার এবং দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। একই সঙ্গে এভাবে সুনামগঞ্জে যাতে কোনো সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানি না হয় সে জন্য তিনি সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু এবিষয় নিয়ে পুলিশের উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।
অপরদিকে, সাংবাদিক হাবিব সরোয়ার আজাদকে অপহরণ, নির্যাতন এবং মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টায় জড়িত রয়েছেন বলেও ওই ফাঁড়ির এএসআই পিযুষের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠেছে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2He385R
April 19, 2018 at 02:45AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন