ক্যালগেরি, ০৩ মে- ধুন্ধুমার ব্যস্ত সকলে। ব্যস্ততা কিন্তু হঠাৎ করেই আসেনি। চার মাস ধরেই এর প্রস্তুতি চলছে। গুটিকতক মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা। প্রচণ্ড উৎসাহ তাদের। সকলেরই দীপ্ত মুখমণ্ডল, দৃঢ় আত্মবিশ্বাস। মূল ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে ছোট ছোট সাব কমিটি করা হয়েছে। কারও দায়িত্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। কারও স্টেজ, সাউন্ড। কেউ খাদ্য বিভাগের, কেউ নিরাপত্তা, কেউ টিকিট বিক্রি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দায়িত্বও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজন অনুসারে। তাদের ইস্পাত-কঠিন উচ্চারণক্যালগেরিবাসীকে দেখিয়ে দিতে হবে এবার। ক্যালগেরিতে সবচেয়ে বড় পরিসরে বাংলা বর্ষবরণ হয়েছে এ বছর। উদ্যোক্তা বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরি (বিসিএওসি)। টরন্টো, মন্ট্রিয়েল ও ভ্যাঙ্কুভারের মতো মেগাসিটির অগণিত বাঙালি এখানে নেই। তবুও ধমনি-শিরায় বাংলার শোণিতধারা বহনকারী একঝাঁক বাঙালি ক্যালগেরিতে আছেন। তাদের জন্যই এ আয়োজন। পাশাপাশি ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সংস্কৃতির কাছেও আবহমান বাংলাকে তুলে ধরা। আর এসব সামনে রেখেই এবারের বাংলা বর্ষবরণ, পয়লা বৈশাখের আবাহন-বৈশাখী মেলা। ক্যালগেরির মূলধারার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বড় বড় সব হলে হয়। সেখানে এত দিন আমরা ছিলাম ব্রাত্য। এবারের পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠান ওরকম একটি হলেই করেছি আমরাম্যাক্সবেল সেন্টার। বিশাল হল, সুউচ্চ মঞ্চ, সঙ্গে উপচেপড়া বাঙালির মিলনমেলা। ক্যালগেরির প্রলম্বিত শীতের মাঝেই ওই দিন সূর্যমামা হাসি মেলেছে। পাঁজা-ধরা বরফ গলে-টলে অ্যাসফল্ট আর বাদামি ঘাস উঁকি দিয়েছে। বাঙালি মনের সুখে পায়জামা-পাঞ্জাবি-ফতুয়া চাপিয়ে বিরাট হলময় দাপিয়ে বেড়িয়েছে আপনমনে। মজাদার সব খাবার-পিঠা-পুলি, পান্তা-ইলিশ, খিচুড়ি-বিরিয়ানি, জিলাপি-মিষ্টি। রসনাপ্রিয় বাঙালি জিহ্বার সব টেস্টবাড রসনারসে সিক্ত করেছে এদিন। বাহারী পোশাকের স্টল পরিপূর্ণ সব বাঙালি সাজের আবহে। গয়না-গাটি আর কত রকমের তৈজস! চোখ জুড়িয়ে যায়, মন ভরে যায়। ওদিকে মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। নেপালি, চাইনিজ, ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান শিল্পীরাও অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন। জনপ্রিয় নাট্যজন মাহমুদুল ইসলাম সেলিমের শিশুদের নিয়ে চমৎকার পরিবেশনা সকলকে মুগ্ধ করে। তিনি ক্যালগেরিতে বসেই শিশুদের বাংলাদেশ ঘুরিয়ে আনেন। ক্যালগেরির স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে আগত স্বনামধন্য শিল্পী সামিনা চৌধুরী সংগীত পরিবেশন করেন। শিরোনামহীন ব্যান্ডের ভোকালিস্ট তানজির তুহিন ড্রামের তালে তালে পুরো হল মাতিয়ে রাখেন। বিসিএওসির বর্তমান সভাপতি কাজী এহ্সান-উল-করিমের প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস ছিল, আমরা পারব। সকলের সহযোগিতায় তিনি করে দেখিয়েছেনও তা। ফলে ক্যালগেরিবাসী দীর্ঘকাল মনে রাখার মতো একটা বৈশাখ উদ্যাপন শেষ করে এবার। ধন্যবাদ সকলকে। সূত্র: প্রথম আলো আর/০৭:১৪/০৩ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2FDAtFH
May 03, 2018 at 02:47PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top