কলকাতা, ১৪ অক্টোবর- উৎসবের দিনগুলিতে সাধারণ মানুষকে শুধু জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসি নিয়েই বুঝিয়েই বসে থাকতে রাজি নয় বিজেপি৷ সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল নিয়েও আম জনতাকে জানাতে চায় গেরুয়া শিবির৷ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে৷ উৎসবমুখী মানুষকে সোজা কথায় বুঝিয়ে বলা হবে, বাংলাদেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ৷ সেখান থেকে তাদের ভারতের মাটিতে আশ্রয় খুঁজতে আসা বেআইনি৷ রাষ্ট্রসংঘের নিয়ম বিরোধী৷ যে দেশ ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে, সেখানকার সংখ্যাগুরু জনজাতি অন্যদেশে আশ্রয়, রোজগার কিংবা নিরাপত্তা খুঁজতে আসবে, তা মেনে নেওয়া যায় না৷ তবে তার পাশাপাশি একটি ব্যাপারে সর্বদা সচেতন রয়েছে পার্টি৷ এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল সম্পর্কে ভারতীয় মুসলমান সমাজে যেন কোনও ভুল বার্তা না যায়৷ বিজেপির সংখ্যালঘু নেতৃত্বেকে এই বিষয়ের প্রচারে কাজে লাগানো হচ্ছে৷ নেতারা সংখ্যালঘু ভোটারদের বোঝাচ্ছেন, এনআরসি বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল তাঁদের জন্য নয়৷ কিছু রাজনৈতিক দল বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের ভুল বোঝাতে পারে৷ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের দেশ থেকে বার করে দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য৷ কারণ প্রতিবেশি দেশের অনুপ্রবেশকারীরাই বাংলায় অঘটন ঘটাচ্ছে৷ ভাগ বসিয়েছে সরকারী বরাদ্দে৷ লোকসভায় সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০১৬ পেশ করা হয়েছিল৷ উদ্দেশ্য, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিত্ব প্রদান৷ ১৯৫৫ সালের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট আইনের সংশোধনী আনার চেষ্টা করা হয়েছে সংসদে৷ ইতিমধ্যেই বিষয়টি যৌথ সংসদীয় কমিটির আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে৷ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ কিছুদিন আগেই উৎসবে এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে প্রচারের কথা ঘোষণা করেছিলেন৷ তা শুরুও হয়ে গিয়েছে৷ বিজেপির উদ্বাস্তু সেলের দায়িত্বে থাকা মোহিত রায় বলেন, বিভিন্ন পুজা মণ্ডপগুলির বাইরে বুকস্টলে আমরা এই বিষয়গুলির উপর বই বিক্রি করছি৷ কেউ এই নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমাদের স্টলে বসেই আলোচনা করছি৷ আনাদের বক্তব্য স্পষ্ট ভাষায় বলছি৷ যদিও মোহিত রায়ের অভিযোগ, কিছু রাজনৈতিক দল বাংলার মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছে৷ তারা বোঝানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশী অনুপ্রদেশকারীদের নাগরিত্ব দেওয়া হবে৷ সংসদেও তারা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিলের বিরুদ্ধেই কথা বলেছে৷ উপরন্তু মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে, হিন্দুদেরও নাকি তাড়িয়ে দেবে মোদী সরকার৷ পুরোটাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷ ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে ১০ শতাংশ হিন্দু কমে গিয়েছে৷ ওই জনগণনা অনুযায়ী মুসলমান জনসংখ্যা ২৭ শতাংশ৷ মুসলমান বৃদ্ধি নিয়ে ভারতবাসীদের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই৷ সেটি ভালো বিষয়৷ কিন্তু দেখা প্রয়োজন কীভাবে তা বাড়ল৷ কীভাবে বাংলায় মুসলমান জনসংখ্যা বাড়ল তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোহিত রায় বলেছেন, মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধিটা paradoxical ৷ বাংলাদেশে ২২ শতাংশ হিন্দু কমে গিয়ে এখন হয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ৷ পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ এটিই৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেড়গুণ বেশি জনসংখ্যার বাংলাদেশ থেকে মুসলমানদের বেআইনিভাবে আগমনই রাজ্যে মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ৷ সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্থান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি বা খৃষ্টান ধর্মীয় বেআইনি অনুপ্রদেশকারীদের গ্রেফতার বা ফেরত না পাঠালেও চলবে৷ তাঁরা যদি ৬ বছর টানা ভারতে থাকেন তাবে নাগরিত্ব প্রদান করা যেতে পারে৷ তথ্যসূত্র: কলকাতা২৪৭ একে/০৬:২০/১৪ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PyB9lk
October 15, 2018 at 12:19AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন