কলকাতা, ২০ নভেম্বর- দুপুরেই তাঁকে ডেকে ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রী এবং মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশন শেষে স্পিকারের ঘরে দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভনকে ডেকে তাঁর কাজ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন মমতা।কাজ ফেলে মেয়র শাড়ি-চুরির দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ইঙ্গিত যেতাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে, তা বুঝতে পেরেএ দিন কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেছেন শোভন। তৃণমূল সূত্রে খবর, এর পরেই মমতা তাঁকে দল বা বৈশাখীর মধ্যে কোনও এক দিক বেছে নিতে বলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সচিব গৌতম সান্যালের হাতে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আসেন শোভন। পরে শোভন তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেন, এ ভাবে অপমানিত হয়ে আর কাজ করা যাচ্ছিল না। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কি না, তা নিয়ে নবান্নের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। এর আগেও বৈশাখীকে নিয়ে শোভনকে প্রকাশ্যে সতর্ক করেছেন মমতা। ধমকেওছেন তিনি। তবে, শোভনকে কখনও তেমন ভাবেউষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায়নি বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। দিদির ধমকের প্রেক্ষিতে কখনও কখনও তিনি নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। কিন্তু, এ দিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে শোভনের কথায় কিছুটা উষ্মা দেখে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দলনেত্রী। আমার মাথা গরম করে দিস না, এই মন্তব্য করতেও শোনা গিয়েছে মমতাকে। ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে। বিধানসভা সূত্রে খবর, সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে গীতাঞ্জলী প্রকল্পে রাজ্যবাসীকে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে কি না তা জানতে চান বিরোধীরা। সরকারের তরফে জানানো হয়, এ বছর এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে বাড়ি দেওয়া শুরু হয়নি। অধিবেশনের ভিতরেযদিও এ নিয়ে আর কোনও কথা হয়নি। কিন্তু, অধিবেশন শেষে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে মুখ্যমন্ত্রী ডেকে পাঠান শোভনকে। গীতাঞ্জলী প্রকল্পের দায়িত্ব আবাসন মন্ত্রী হিসাবে তাঁরই। ওই প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ আসছিল বলে খবর। মেয়রের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতাঞ্জলী নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি শোভনের বিরুদ্ধে কাজ ফেলে শাড়ি-চুড়ির দোকানে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইঙ্গিত কার দিকে তা বুঝতে পেরে এর পরেই বিরক্তি প্রকাশ করেন শোভন। মেয়রের ঘনিষ্ঠ ওই সূত্র জানিয়েছে, শোভন দলনেত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি বৈশাখীকে শাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলছেন কি না?একই সঙ্গে দলনেত্রীকে তিনি বলেন, তাঁর কাছ থেকে শাড়ি নেওয়ার প্রয়োজন বৈশাখীর পড়ে না।দলনেত্রী তখন শোভনকে জানান, তাঁর কাছে সব খবর আছে।আছে ছবিও। শোভনের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি, মেয়র তখন ক্ষোভের সঙ্গে দলনেত্রীকে জানান, তিনি বুঝতে পারছেন দলে তাঁর প্রয়োজন ফুরিয়েছে। তাঁর উপর নজরদারিও চলছে। কোনও নজরদারির মধ্যে যে তিনি থাকতে চান না তা জানিয়ে মমতাকে মেয়র জানান, প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছে মনে করলে বা তাঁকে না চাইলে সেটা যেন দলনেত্রী বলে দেন। তাহলে তিনি সব পদ ছেড়ে দেবেন। এর পরেই শোভন বিধানসভা ছেড়ে পুরসভায় চলে যান। তার আগেই যদিও স্পিকারের ঘর থেকে বিরক্তি প্রকাশ করতে করতে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। এর কিছু ক্ষণ পরেই শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর পদত্যাগপত্র দিয়ে আসেন গৌতম সান্যালের কাছে। দলীয় সূত্রে খবর, সেখানে শোভন লিখেছেন, মন্ত্রিত্ব এবং মেয়রের পদ ছাড়তে আমি বাধ্য হলাম। একে/০৬:০০/২০ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2QSlmhT
November 20, 2018 at 11:59PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন