ঢাকা, ০৮ ডিসেম্বর- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়ের মধ্যেও কোটি মাশরাফি ভক্ত তথা ক্রিকেট অনুরাগীর মনে এ প্রশ্ন উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে। সবাই চোখ-কান খোলা রেখে উন্মুখ অপেক্ষায়, মাশরাফি দেশের মাটিতে শেষ সিরিজ নিয়ে কোথাও কিছু বলেন কি-না? আজ দুপুরে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজ শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে সে প্রশ্ন আরও জোরালো হলো। শনিবার দুপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনেও উঠল প্রশ্ন, আচ্ছা মাশরাফি ঘরের মাঠে এটাই কি আপনার শেষ সিরিজ? মাশরাফি সোজা কোনো জবাব দেননি। নিজের স্বভাবসুলভ ঢংয়ে হ্যাঁ বা নাতে না গিয়ে গিয়ে কুটনৈতিক অ্যাপ্রোচ টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের। ছোট্ট করে কিন্তু একবারের জন্যও বলেননি, হ্যাঁ এটাই দেশের মাটিতে আমার শেষ সিরিজ। এটাই শেষ নয়, আগামীতেও খেলবো- টাইপের কথাও বের হয়নি তার মুখ থেকে। আগে এবং পরে কিছু কথা বলে তারপর জানালেন, দেখা যাক সামনে কি হয়। আসলে এটা ঘরের মাঠে মাশরাফি শেষ ওয়ানডে সিরিজ কি-না? সে প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আগে জানতে হবে মাশরাফি কি বিশ্বকাপের পর অবসরে চলে যাবেন কি-না? তার ওই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটিই তার দেশের মাটিতে শেষ সিরিজ কি-না? কথা শুনে ও শরীরি অভিব্যক্তি দেখে মনে হলো, এখনো মাশরাফি সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। মানে নিজের মন স্থির করেননি। আর তা করেননি বলেই মুখে এমন কথা, আমার কোনোদিনই মাইন্ডসেট থাকে না। মাইন্ডসেট করে কিছু করিও না। তার মানে মাশরাফি আজ আকার-ইঙ্গিতে বোঝতে চাইলেন, বিশ্বকাপের পর অবসরের ঘোষণাটাও তিনি হয়তো আগাম দেবেন না। খেলা চালিয়ে গেলেও আগে-ভাগে বলবেন না, আবার ছেড়ে দেবার আগেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন না। তার নজিরও কিন্তু আছে। মাশরাফি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতিও ঘটিয়েছিলেন আগাম ঘোষণা না দিয়ে। এমনিতে সদালাপি। যারপরনাই মিশুক। আড্ডায় কাছের মানুষ এবং প্রিয়জনদের সাথে কথা বলেন প্রাণখুলে। সাংবাদিকদের সাথেও তার দারুণ ভাব। সময় ও সুযোগ পেলে সাংবাদিকদের সাথে নির্মল আড্ডায় না লেখার শর্তে অনেক খোলামেলা আলাপ করেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষের সিদ্ধান্তটা তিনি কারো সাথেই শেয়ার করেননি। মাশরাফির অতি কাছের মানুষটিও জানতেন না, ওই শ্রীলঙ্কা সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজটিই তার ২০ ওভারের ফরম্যাটে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে ও পরে প্রায় দিনই সাংবাদিকদের সাথে প্রাণ খুলে কথা বলেছেন; কিন্তু কেউ ঘূর্ণাক্ষরেও টের পাননি যে, সেই দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটিই তার শেষ সিরিজ। এরপরে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলের হয়ে খেলবেনই না। অধিনায়কত্ব করার তো প্রশ্নই আসে না। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ঠিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর দিন টসের সময় টিভি ধারভাষ্যকারের সাথে আলাপে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ৬ এপ্রিল পরের ম্যাচটিই হবে আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। যে কথা সে কাজ। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল, মাঠে লঙ্কানদের সাথে দুই ম্যাচের সিরিজে প্রথম ম্যাচে টসের সময় টিভি ধারাভাষ্যকারের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভক্ত, সমর্থক তথা পুরো দলকে অবাক করে দিয়ে মাশরাফি বলে বসেন, আমি আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করবো না। আগামী ৬ এপ্রিলই ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে আমার শেষ ম্যাচ। কেউ কেউ হয়ত বলবেন, সে অবসরের সিদ্ধান্তটা আসলে হঠাৎ করেই নেয়া। কোচ হাথুরুসিংহে চাচ্ছিলেন না, মাশরাফি টি-টোয়েন্টি খেলুক। তার ইচ্ছেটা বোর্ডের শীর্ষ কর্তারাও মেনে নিয়েছিলেন। তাই মাশরাফি খানিক রাগ, ক্ষোভ, অভিমান ও যন্ত্রণা বুকে নিয়েই হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেলেন। এখনতো আর ওই অবস্থা নেই। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বোর্ডের অতি আস্থাভাজন। খোদ বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের ৫০ ওভারের ফরম্যাটে অধিনায়ক মাশরাফির ওপর আস্থা শতভাগ। ওই পক্ষের ধারণা, যেহেতু বোর্ড ওয়ানডে ক্যাপ্টেন মাশরাফিকে চায়। তাকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সংকল্পবদ্ধ। তাই মাশরাফি এখন নির্ভার। তারওপর কোনই চাপ নেই। সে কারণেই ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণাটা হুট করে আসবে না। কিন্তু মাশরাফিকে ভাল চেনেন, জানেন ও বোঝেন- এমন অংশের ধারণা ভিন্ন। তারা মনে করেন, মাশরাফি আগামী বিশ্বকাপ খেলতে মুখিয়ে আছেন এবং তার অধিনায়কত্বে দেশকে একটা ভালো কিছু উপহার দিতেও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আসলে মাশরাফি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমেন্স ও পরিণতির দিকে তাকিয়ে আছেন। বাংলাদেশ ভালো খেলে একটা ভালো অবস্থানে গিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করলে এক অবস্থা, আর খারাপ করলে ভিন্ন চিন্তা। মাশরাফি জানেন, একটা সন্মানজনক পরিণতি ঘটলে একটি কথাও হবে না। আর পারফরমেন্স ও ফল খারাপ হলে নেতিবাচক কথা হবে। এতদিন তার অধিনায়কত্ব নিয়ে কোন কথা না উঠলেও বিশ্বকাপে খারাপ খেললে সমালোচনার তীর তার গায়েও আসবে। তাই মাশরাফি আসলে ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকাকে শ্রেয় মনে করছেন। বিশ্বকাপে ভাল করতে না পারলে হয়ত ইংল্যান্ডের মাটিতেই ঘোষণা দিয়ে বসবেন অবসরের। আর বড়সড় কোন সাফল্য পেলে হয়তো খেলা চালিয়ে যাবার ইচ্ছে পোষণ করবেন। তখন বোর্ডও পড়বে বিপাকে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে ফেললে তো আর মাশরাফিকে অবসরের জন্য পীড়াপীড়িও করা যাবে না। কাজেই মাশরাফিও হয়ত বিশ্বকাপ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান। ভাবটা এমন, দেখি না কি হয়, তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা! সূত্র: জাগোনিউজ আর/১২:১৪/০৮ ডিসেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2PrkC23
December 09, 2018 at 05:27AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
তিন দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের সূচি প্রকাশ
07 Oct 20200টিঢাকা, ০৭ অক্টোবর- শ্রীলংকা সফর না হওয়ায় ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দেশের মূল ক্...আরও পড়ুন »
বার্তামেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট!
07 Oct 20200টিবার্সেলোনার বোর্ড নির্বাচন আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওই সময়ই ঠিক হওয়ার কথা জোসেপ মারিও বার্তা...আরও পড়ুন »
বেতন কাটা নিয়ে বার্সার আলোচনা শুরু
07 Oct 20200টিকরোনার কারণে গত মার্চ থেকে কমাস ফুটবল বন্ধ ছিল। এ সময় বড় ক্লাবসহ বিশ্বের অধিকাংশ ক্লাবই ফুটবলারদের ব...আরও পড়ুন »
অস্ট্রেলিয়া-ভারত গোলাপি বলের টেস্ট চূড়ান্ত
07 Oct 20200টিক্যানবেরা, ০৭ অক্টোবর- এ বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চার টেস্টের সিরিজ দিবারাত্রির ম্যাচ দিয়...আরও পড়ুন »
নারীর প্রতি মনোভাব বদলের ডাক মাশরাফীর
07 Oct 20200টিঢাকা, ৭ অক্টোবর- উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতার হার। সিলেটে এমসি কলেজসহ নোয়াখালীর বেগমগঞ্...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.