কলকাতা, ২৭ জানুয়ারি- শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতার গ্রেফতার, তাঁর ১৪ দিনের জেল হেফাজত নিয়ে যখন সবাই চুপ, তখন প্রযোজক বন্ধুর পাশে দাঁড়ালেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লম্বা একটা পোস্টের মাধ্যমে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেতা। রুদ্রনীল ঘোষ লিখেছেন, হ্যাঁ শ্রীকান্ত মোহতা আমার বন্ধু। ঘন্টার পর ঘন্টা যার সাথে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের শিল্প সাহিত্য বাণিজ্য বিজ্ঞান দর্শন, সব নিয়ে আলোচনা করা যায়! তার সাথে বন্ধুত্ব করতে সবাই ভীড় করতে চায়। সে ভীড়ে ধান্দাবাজ থেকে উদাসীন সব্বাই আছে! ৯০এর দশকে যখন পান পরাগ চেবানো অবাংগালী প্রোডিউসাররা শুধুমাত্র চকচকে হিরোইন আর কালো টাকা সাদা করার জন্য সিনেমায় পয়সা ওড়াত, তখন এই ছেলেটিই সিস্টেম বদলের কথা একা ভাবত! যার ফলাফল আজকের অনেক উন্নতমানের বাংলা সিনেমা। ছেলেটা প্রমাণ দিয়েছিল সঠিক গল্প আর সঠিক বাজেট মানুষকে সিনেমা হলে ফেরাবেই। আজ যা প্রমাণিত। সাথী, চীরদিনই তুমি যে আমার থেকে আধুনিক অটোগ্রাফ, সিনেমাওয়ালা, ব্যোমকেশ, রাজকাহিনী ইত্যাদি পর পর তার প্রতিফলন।এই চুপচাপ কঠিন লড়াইটা ছিল একার। সফলতা যেমন সম্মান আনে।তেমন আনে শত্রু। যে ফার্স্ট হয় তাকে সইতে পারে কজন? ব্যবসায় তো এসব চলেই নাকি! আর আমরা ইভেন্ট খুঁজি বক্তব্য রাখার জন্য! ব্যাস, আমরা পেয়ে গেছি। যার জন্য আজ ভাল সিনেমা দেখতে পাচ্ছি তার সব গুন আর অবদান ভুলে, না বুঝেই নেমে পড়লাম সমালোচনার ময়দানে!! ওরা ঠিক যা চেয়েছিল তাই হচ্ছে পাবলিকের মনে!! দেখেছ এও দুনম্বরি..ছিঃ!! ব্যাস! অভিনেতা রুদ্রনীলের কথায়, শ্রীকান্ত মোহতার গ্রেফতারি বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চরম ক্ষতি করবে। পাশাপাশি পুরো বিষয়টিই রাজনৈতির উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি অভিনেতার। রুদ্রনীল লিখেছেন, আমি পোস্ট লিখছি আমাদের বিপন্নতা নিয়ে। ইন্ডাস্ট্রির চরম ক্ষতি আঁচ করে। আমাদের হাজার হাজার জীবিকার কথা ভেবে।ইচ্ছা থাকেও আমার মত বাকীরাও কেন কিছু লিখতে পারছেন না আমি জানি। কাল যদি তাকে যে কোন অজুহাতে সিবিআই ডাকে,গ্রেফতার করে..প্রেস্টিজ নষ্ট করে.... স্রেফ এই ভয়ে!!! বাড়িতে সামান্য পুলিশ এলেই বাংগালীর প্রেস্টিজ চলে যায়।আর এ তো সিবিআই! তার ওপর ২৫ কোটির গল্প!!!! ৯০% মানুষ জানেই না সিবিআই কেন কাকে ডাকে বা গ্রেফতার করে। জানেই না কে বা কারা সেই গ্রেফতারের লিস্ট তৈরি করে বলে ইমেজ নষ্ট কর,যাতে লোকটা আর পলিটিকাল ব্যাপারে আমার বিরোধী কে সাহায্য করতে না পারে!!!!! শুধু এই টুকুই বলব। সামনে ২০১৯ লোকসভা ইলেকশান। শ্রীকান্ত মোহতার হাত ধরে শিল্পীরা যাতে ভয় পেয়ে রাজনৈতিক প্রচারে না যেতে পারে তার নিখুঁত প্ল্যান এটা! তাই জিজ্ঞাসাবাদের নামে গ্রেপ্তার করো ভাই! ওরা যা চায় তা শ্রীকান্ত না মানলে গোঁজা হবে আরো জটীল ধারা, সিজ করা হবে অ্যাকাউন্ট,ক্ষতি করা হবে ব্যবসার,মন ভেংগে দিয়ে কোন ঠাসা করা হবে। সব সব হয় ভোটের রাজনীতিতে এদেশে! সংবিধানকে লাত্থি মেরে ধর্মনিরপেক্ষ দেশে নিষিদ্ধ হয় মুসলমানদের গরু খাওয়া। আর এ তো সামান্য ব্যাপার!যে সিবিআই নিজেই দূর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণিত, সে আজ নীতির বিচার করছে!!!!! খুব হাসি পাচ্ছে! খুব লজ্জা লাগছে!! জয় শ্রী রাম!! আমি জানি এই লেখা পড়ে কেউ অবাক হবে, কেউ সহমত হবে, কেউ নিন্দেমন্দ করতে পারে আমায়। তাও কি করব! বন্ধু তো বন্ধুই হয়!বন্ধুর বিপদে পালিয়ে পিঠ বাঁচাতে শিখিনি।যতটা জানি বুঝি শেয়ার করলাম! আর এও জানি এ লেখা সিবিআই এর মালিকরাও পড়ে কিছু ছক কষতে পারেন! ভাল হোক শ্রীকান্তের,সুস্থ হোক রাজনীতি! প্রসঙ্গত, শ্রীকান্ত মোহতা গ্রেফতার কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্রেফতারের দিন কুড়ি আগে থেকেই মোহতাকে পাকড়াও করার প্ল্যান সাজানো হয়েছিল। সকালের মর্নিং ওয়াক থেকে রাতে বাড়ি ফেরা সবটাই থাকত গোয়েন্দাদের রাডারে। SVF কর্ণধারের গতিবিধিও নজরে রাখতে শুরু করে সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, ঘটনা টের পেতেই পাল্টা ফন্দি আঁটেন ভেঙ্কটেশ কর্ণধার। কোনও জায়গায় বেরোলে রাস্তাতেই একাধিক গাড়ি বদল করতেন শ্রীকান্ত মোহতা। শুধু তাই নয়, গাড়িতে ওড়িশার নম্বর প্লেট লাগিয়েও গোয়েন্দাদের ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রযোজক। কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তা যাতে বোঝা না যায়, তারজন্যেই এই ধরণের কৌশল নেওয়া হয়েছিল বলে অনুমান সিবিআইয়ের।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2DBMRs8
January 28, 2019 at 12:57AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন