মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে :: মোকাব্বির খান। সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের চান্দাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। যুক্তরাজ্য প্রবাসী এই রাজনীতিবীদ ছাত্রজীবনে ছিলেন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। স্থানীয় তাজপুর কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে রাজনীতি শুরু করে আওয়ামী লীগ, গণতান্ত্রিক ফোরাম হয়ে বর্তমানে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনে গণফোরাম থেকে উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে রীতিমত চমক সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাকে ঘিরে সর্বত্র চলছে আলোচনা। এ আসনের সকলেরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন এই নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য। তার সাথে মুঠোফোনে কথা হয় সাংবাদিকদের। নির্বাচনের পূর্বাপর বিষয়াদী নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। শুরুতে তার বিজয় সিলেট-২ আসনের জনগণকে উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, যারা ভোট দেননি এবং যারা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেননি-এ বিজয় তাদের সকলের। এ আসনের সকল ভোটার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি আরও জানান, ‘এ আসনে ২০দলীয় জোট মনোনিত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী লুনা ভাবীকে (তাহসিনা রুশদীর লুনা) সমর্থন দিয়ে আমি যুক্তরাজ্য চলে যাই। নিজের ব্যবসায় মনোনিবেশ করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লুনা ভাবীর প্রার্থীতা স্থগিত থাকায় আমার নেতা ড. কামাল হোসেনের অনুরোধে নির্বাচনের মাঠে ফিরে আসি।’ এ আসনে ২০দলীয় জোট মনোনিত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে তাহসিনা রুশদীর লুনা থাকাবস্থায় নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সঙ্গত কারণে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন ৫টা ১৫ মিনিটে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে ইসিতে ফ্যাক্স করি। কিন্তু দেরী হয়ে যাওয়ায় তা আর প্রত্যাহার হয়নি।’ সিলেট-২ আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘কিছুটা আতঙ্কের কারণে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। ভোটগ্রহণেও কিছুটা অনিয়ম হয়েছে।’ ভোট পরবর্তী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘শুনেছি আমার দলীয় প্রধান নির্বাচন বর্জন করে পুনঃনির্বাচন দেয়ার দাবীর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। তিনি আমাকে যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটা মেনে নিতে এক মিনিটও সময় নেব না। তার সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে আমার কোনো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেই। আমি ইতিমধ্যে তাকে জানিয়েও দিয়েছি, আপনার জন্যে আমি নির্বাচিত হয়েছি। গণফোরামের জন্যে আমি নির্বাচিত হয়েছি। ঐক্যফ্রন্টের জন্যে আমি নির্বাচিত হয়েছি। আপনি যা বলবেন তাই হবে।’ তার দল ও জোট সংসদে একেবারে কম আসন পাওয়ায় সিলেট-২ আসনে সরকারী উন্নয়ন বরাদ্দ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিনি কোনো বৈষ্যমের শিকার হবেন কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি সরকারকে প্রশ্নটি করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারাই সরকারকে জিজ্ঞেস করুন, সংসদে আমরা কম আসন পাওয়ায় আমাদের এলাকার জনগণকে উন্নয়ন বঞ্চিত রাখবেন না সবাইকে সমান চোখে দেখবেন?’ আগামী দিনের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাধ্যানুয়ায়ী এমন কাজ করব, যেন কেউ কখনও বলতে না পারে, মোকাব্বির খানকে একটা কাজের জন্যে দুই টাকা দিতে হয়েছে। আমি সুস্থ্য রাজনীতি, মূল্যবোধের রাজনীতি ও আদর্শের রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাব। সিলেট-২ আসনের সকলেই দলমত নির্বিশেষে আমার কাছে সমানভাবে মূল্যায়িত হবেন। এ জন্যে সকলের সার্বিক সহযোগিতা চাই।’
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://bit.ly/2SwQYKZ
January 04, 2019 at 03:40PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন