ঢাকা, ২২ জানুয়ারি- গানের কিংবদন্তি মানুষ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। মৃত্যুর আগের কয়েকটা বছর কাটিয়েছেন গৃহবন্দি হয়ে। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর হয়তো অনেকের জানা নেই। যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাক্ষী ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। অনেকেই যেখানে টাকা আর জীবনের হুমকিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সাক্ষী দিতে চাননি, চুপ থেকেছেন দিনের পর দিন; সেখানে বাঘের মতোই বীরত্ব দেখিয়েছেন এই গানের মানুষ। তিনি আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছেন সত্যের কথা, ন্যায়ের পক্ষে, রাষ্ট্রের হয়ে। মৃত্যু তাকে পিছপা করতে পারেনি। কিন্তু এই সাক্ষ্য দেয়ার বিনিময়ে অনেক চড়া মূল্যই দিতে হয়েছে তাকে। হারিয়েছেন ছোট ভাইকে। ভাইয়ের মৃত্যু তাকে হতবাক করে দিয়েছিল, হতাশও। তিনি মেনে নিতে পারেননি, স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়া দলের শাসনামলে স্বাধীনতার বিরোধীদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার বিনিময়ে ভাই হারাতে হবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে। রাজধানীর খিলগাঁও রেললাইনে পাওয়া গিয়েছিল বুলবুলের ভাইয়ের গলাকাটা লাশ। ভাইয়ের শোক নিয়ে ঘর থেকেই বের হতেন না গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। নিরবে নিভৃতে কাটিয়েছেন জীবনের শেষ দিনগুলো। এর মধ্যে আসে তারও মৃত্যুর হুমকি। এরপর থেকে সরকারি নিরাপত্তার বলয়ে বাঁধা পড়েন তিনি। শুরু হয় শারীরিক অসুস্থতা। তার হৃদযন্ত্রে ৮টি ব্লক ধরা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে তিনি এখন সবার থেকে অনেক দূরে। মঙ্গলবার ভোর রাতে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। প্রায় ছয় বছরের গৃহবন্দি জীবন নিয়ে হাঁপিয়ে উঠছিলেন এই কিংবদন্তি। তার সঙ্গী বলতে ছিল একমাত্র পুত্র সামির ও একান্ত সহকারী রোজেন। গান তেমন নিয়মিত করতেন না। গানের মানুষদের সাথেও আড্ডা বা মেলামেশা কমে গিয়েছিল। যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, গৃহবন্দি থেকে মুক্ত মনে হয় কি না জানতে চাইলে গণমাধ্যমে বুলবুল হতাশা নিয়ে বলেছলিন, আমার গৃহবন্দি জীবন অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন আর কিছু মনে হয় না। আপনি তো ভালোভাবে বোঝেন যে, হার্টের চিকিৎসার পর আবার কিন্তু এই চার দেয়ালের মধ্যেই আসতে হবে। এটা কিন্তু সমাধান না। তাই না? আপনারা হার্টটা ঠিক করে আবার এই জায়গাটায় পাঠিয়ে দেবেন, হার্টটা আবার নষ্ট হবে। আপনারা মুক্ত করে দেন। আর কোনোদিন কাউকে মুক্ত করে দেয়ার আকুতি জানাবেন না বুলবুল। মৃত্যু তাকে চিরমুক্তি দিয়ে দিয়েছে। এমএ/ ০৭:০০/ ২২ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2FFyyoA
January 23, 2019 at 01:31AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন