ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি- গর্ভবতী স্ত্রী নামতে পারেননি, তাই স্বামীও নামেননি, ফলাফল গর্ভের সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু! চার বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলেন প্রতিদিনের মতো। পুড়ে ছাই হয়েছেন তারা। পাওয়া গেছে শুধু চারটি মাথার পোড়া খুলি। বাবার কাছে সন্তান বিরিয়ানি খেতে চেয়েছে! বাবা বিরিয়ানি নিয়ে ফিরে এসে আর সন্তানকে খুঁজে পাননি। জমজ সন্তানদের বয়স ১ বছরের মতো। মর্গে তারা বাবাকে খুঁজছে! দুই ভাইয়ের জড়াজড়ি করা লাশ আলাদা করা যাচ্ছেনা। আলাদা করার পর তাদের বুকে জড়িয়ে ধরা শিশুর লাশ। শিশুকে বাচাঁনোর শেষ চেষ্টা করছিলেন দুই ভাই। ছেলে নর্থসাউথ এ পড়ে, সন্তানের লাশ চাচ্ছে তার মা। একটু মাংসের দলা হলেও চলবে। তিনি শেষবার বুকে জড়িয়ে ধরবেন তিনি। ২০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে চকবাজার অগ্নিকাণ্ডের হৃদয় বিদারক ঘটনার প্রতিচ্ছবি এগুলো। এই অগ্নিকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি সব মরদেহ। এখনো পুড়ে যাওয়া প্রিয়জনদের খুঁজছেন অনেকেই। পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোকে মুহ্যমান সারাদেশ। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। দেশের বিনোদন অঙ্গনের মানুষরাও শোক প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে দেশের চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান তার অফিসিয়াল পেজ থেকে সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ঢাকার চকবাজারে গতকাল রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি পরিবার ও পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা রইলো। সেই সাথে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। সংসদ সদস্য ও অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা লেখেন, একরাতের ভেতর ঢাকা শোকের শহর! নিমতলী ট্র্যাজেডির পর এবার চকবাজার! ভারী হয়ে গেছে পুরনো ঢাকার বাতাস, স্বজন হারানোর আর্তনাদে। পুরনো ঢাকার পুনর্বাসন না হলে, রাসায়নিক কারখানা উচ্ছেদ না করলে- এমন আরেকটি ঘটনা কেবল সময়ের ব্যাপার। চঞ্চল চৌধুরী লিখেছেন, আহারে চকবাজার, আহারে মৃত্যুর মিছিল, চকবাজার, শোকবাজার। আরিফিন শুভ চকবাজার ট্র্যাজেডির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, আমরা স্তব্ধ, আমরা শোকাহত। সামাজিক যোগাযোগের এ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন, চিত্রনায়ক রিয়াজ, অভিনেত্রী অপি করিম, জাকিয়া বারী মম, নিপুণ, অমৃতা খান, বিপাশা কবির, চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক, চিরকুট ব্যান্ডের সুমী, সংগীতশিল্পী পিন্টু ঘোষ ও ব্যান্ড অবসকিওরসহ অনেকে। এই পরিস্থিতিতে ঘরে থাকতে পারেননি চিত্রনায়ক বাপ্পি চৌধুরী। আহতদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে। সমবেদনা ও পাশে থাকার কথাও বলেছেন এই চিত্রনায়ক। বাপ্পি বলেন, মৃত্যু তো আমাদের সবার জন্যই অবধারিত। কিন্তু এমন মৃত্যু কেন হতে হবে? এটা মেনে নেওয়া যায় না। এতগুলো মানুষ, তাদের পরিবার, স্বপ্ন, আশ্রয়স্থল, সবই পুড়ে গেলে ওই আগুনে। উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সাড়ে চার ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়। এই অগ্নিকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। এমএ/ ০৩:২২/ ২২ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2BLd5Hm
February 22, 2019 at 09:54PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top