কলকাতা, ০৬ ফেব্রুয়ারি- অবশেষে অবস্থান ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার ধর্মতলা চত্বরে মেট্রো চ্যানেলের ধরনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। এদিন সন্ধ্যায় ছয়টার দিকে টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সাথে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পরই প্রায় ৪৬ ঘণ্টা পর ধরনা তুলে নেওয়ার কথা জানান মমতা। তবে কলকাতার ধরনা শেষ হলেও দিল্লিতে নতুন করে এই ধরনা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। মমতা এদিন জানান, এই ধরনায় গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। রাজীব কুমারকে গ্রেফতারে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। এই ধরনায় গণতন্ত্র ও সংবিধানের জয় হয়েছে। তাই আজকেই আমাদের এই ধরনা প্রত্যাহার করলাম। তিনি আরও বলেন এই মঞ্চে চন্দ্রবাবু নাইডু, তেজস্বী যাদবসহ আমাদের দলের অন্যরাও আছেন। তাদের সাথে কথা বললাম। এরপরই ধরনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিই। তবে লড়াই যে এখানেই শেষ হচ্ছে না তাও জানান তিনি। মমতা বলেন, আমরা আমাদের সংগ্রাম থামাচ্ছি না। আমরা এটাকে দিল্লিতে নিয়ে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে অভিযান চালাতে আসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইএর কর্মকর্তারা। এরপরই তার বাড়িতে ছুটে আসন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি ঘোষণা দেন গণতন্ত্র, সংবিধান দেশ রক্ষার দাবিতে কলকাতার ধর্মতলা চত্বরে মেট্রো চ্যানেলে ধরনা শুরু করবেন তিনি। সেইমতো রাত পৌনে ৯টার দিকে ধরনা শুরু হয় মমতার। আর সেই থেকে গত প্রায় তিন দিন ধরে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী, দলীয় সাংসদ, বিধায়ক, ও নেতারা ছিলেন মমতার পাশে। এমনকি প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও ওই ধরনা মঞ্চে দেখা যায়। শুধু নিজের দলের নয়, টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, সপা নেতা কিরণময় নন্দ, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের মতো কয়েকজন বিজেপি বিরোধী দলের নেতারাও হাজির ছিলেন সেখানে। এমনকি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল-অনেকেই ট্যুইট করে মমতার ধরনাকে সমর্থন জানান। আর মমতাকে দেখতে গত কয়েকদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষও উৎসাহের সহিত সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। সোমবার সেই মঞ্চের পাশেই পুলিশ আউটপোস্ট থেকে বাজেট অধিবেশনের আগে ক্যাবিনেট বৈঠক সারেন তিনি। ধরনা মঞ্চের পাশেই অস্থায়ী মঞ্চ করে পুলিশের একটি অনুষ্ঠানও সারেন তিনি। আর ধরনা মঞ্চ থেকে যতবারই বক্তব্য রেখেছেন তার পুরোটাই ছিল মোদি-অমিত জুটি ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। কেন্দ্র থেকে বিজেপি নেতারাও দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করে মমতা ও তার মহাজোটকে লক্ষ্য করে তীর ছুঁড়েছেন। আর দুই পক্ষের সংঘাতে দেশের রাজনীতির পারদ চড়চড় করে উপড়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক ঘণ্টা গোটা দেশের নজর ছিল কলকাতায়। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে দেশটির শীর্ষ আদালত এক নির্দেশে জানায় রাজীব কুমারকে আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না। তবে তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কোন জায়গায় তাকে সিবিআই-এর সামনে হাজিরা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ২০ ফেব্রুয়ারী মেঘালয়ের শিলং-এ সশরীরে শিলং-এ সিবিআই-এর সামনে তাকে হাজিরা দিতে হবে। আর এরপরই দুপুরে ধরনা মঞ্চ থেকে আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে মমতা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় এ রাজ্যের মানুষের, দেশের মানুষের নৈতিক জয়। এমএ/ ০২:৪৪/ ০৬ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://bit.ly/2Sty22R
February 06, 2019 at 08:35AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top